সরকারের পক্ষে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন

রোজাকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশকিছুদিন ধরেই বেড়ে চলেছে। পৃথিবীর সব দেশেই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা এবি আজিজুল ইসলামও।

তবে তিনি বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের উচিত সোশ্যাল সেফটি নেটের আকার ও পরিমাণ বাড়ানো।

পাশাপাশি সংশ্লিষ্টরা ঠিকমতো পাচ্ছে কিনা সেটা নিশ্চিতের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সাম্প্রতিক দেশকালকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন হামিদ সরকার।

দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম ক্রমশ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। মানুষের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে। আপনার মন্তব্য জানতে চাই-

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যসহ অনেক পণ্যই আমাদের দেশে আমদানিনির্ভর। কাজেই আমদানিকৃত পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে বাড়লে আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বাড়বেই। এটাই স্বাভাবিক। কারণ তাকে বেশি দামে আমদানি করতে হচ্ছে। যদি ৫ টাকার আমদানি করতে হয়, তাহলে আমাদের দেশের উৎপাদনকারীরা সেই দামের হিসাব করে চার্জ করবে। 

সরকারের উচিত হবে মূল্যস্ফীতির কারণে যেসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যারা আগে দুবেলা ভাত খেত, এখন একবেলা খাচ্ছে, পুষ্টিকর খাদ্য খেতে পারছে না। বিশেষ করে ডিম, দুধ, মুরগি, গরুর গোশত ইত্যাদি তারা কিনতে পারছে না, তাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এই বেষ্টনীর আওতাও বাড়াতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বরাদ্দকৃত অর্থ সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক ব্যক্তির কাছে যেন বরাদ্দের টাকাগুলো পৌঁছায়। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষের একটি অংশকে ঋণ করে জীবনযাত্রার বাড়তি খরচ মেটাতে হচ্ছে।

বিবিএস মূল্যস্ফীতির যে তথ্য দিচ্ছে বাজারের সঙ্গে কতটা মিলছে বলে আপনি মনে করেন?

বাজারের সঙ্গে বিবিএসের মূল্যস্ফীতির তথ্য মিলছে না বা ফারাক এই সমস্যা সব সময়ই ছিল। এখনো আছে। তারা কোথা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে? এটা কি তারা নিজেরা করে, নাকি টিসিবির তথ্য দিয়ে করে, নাকি বাজারের সার্ভে করে করা হয়, এখানে সমন্বয় করা দরকার। আরও নজরদারি করা উচিত এবং এটা যাতে বাস্তবমুখী হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। 

এখানে সরকারের কী করণীয়?

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ঋণের সুদহার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলা করছে। দেরিতে হলেও আংশিকভাবে আমরা সেই পথে গেছি। তবে বিদ্যমান নীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা নিয়ে আমি সন্দিহান।

বাজারের পণ্য মূল্য সঠিক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য সরকারের আইনকানুন আছে। মনিটরিংয়ের বিধান আছে। সেটার মাধ্যমে দেখা উচিত কোনো ধরনের মজুদ হচ্ছে কিনা। আবার বেশি বাড়াবাড়ি করলে তখন আবার জিনিসপত্র উধাও হয়ে যায়। সেটাও একটা সমস্যা। চাহিদা ছাড়া তো বাজারে বিক্রি হয় না। চাহিদা তো আছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //