গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১০:২৬ পিএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১০:২৮ পিএম
‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে দুই দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার দুপুরে কাশিমপুর কারাগার থেকে গাজীপুরের গাছা থানায় নেয়া হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম মাদানী নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা গ্রামের মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারগার-২ এর জেলার মো. আবু সায়েম জানান, ‘শিশুবক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে দুইদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ কারাগার থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানায় নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গত ৮ এপ্রিল জিএমপির গাছা থানায় এবং ১১ এপ্রিল বাসন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়।
জিএমপির গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, ‘শিশুবক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৬) নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে গত ৭ এপ্রিল ভোররাতে আটক করে র্যাব-১ এর সদস্যরা। ওই দিন রাতেই গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়।
৮ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন র্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার (ডিএডি) মো. আব্দুল খালেক। এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আটককালে রফিকুল ইসলাম মাদানীর কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এছাড়াও জব্দকৃত মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ ‘এডাল্ট কনটেন্ট’ অশ্লীল ভিডিও চিত্রসহ পর্নোগ্রাফি পাওয়া গেছে। এসব এডাল্ট ছবি ও ভিডিও তিনি নিয়মিত দেখতেন এবং সেগুলো স্টোর করতেন ও লিংক দিতেন। এজন্য রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুজুকৃত মামলায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা সংযোজন করা হয়েছে।
এ মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৩ এপ্রিল ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। ১৫ এপ্রিল রিমান্ড শুনানির দিনে তার দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শেখ নাজমুন নাহার।
উল্লেখ্য, ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী বিভিন্ন মাহফিলে রাষ্ট্র তথা সরকার বিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করেন। যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। রফিকুল ইসলাম মাদানীর উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে তার অনুসারীরা গত ২৬ মার্চ ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা করে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করা, জনমনে আতংক সৃষ্টি, সামাজিক তথা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটানো, আইন শৃঙ্খলা বিনষ্ট করা, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে শত্রুতাসহ সরকারের প্রতি ঘৃণারভাব সৃষ্টি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে দেশের সরল ও ধর্মানুরাগী মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মী অনুভূতিতে আঘাত করে বক্তব্য প্রদান করেন, যা ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি বাড়িয়ালী এলাকাস্থিত নিজের ‘মারকাজুল নূর আল ইসলামিয়া মাদরাসায়’ বসে দেশদ্রোহ ও সরকার বিরোধী কার্যকলাপ এবং নাশকতা কর্মকাণ্ড ঘটানোর পরিকল্পনা করতেন। তিনি সরাসরি সশস্ত্র জিহাদের ডাক দেন, এবং এখনি জিহাদের উপযুক্ত সময় বলে সবাইকে জিহাদে অংশ নেয়ার আহবান জানিয়ে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উস্কানির ভিডিও চিত্র ফেসবুক, ইন্টারনেট ও ইউটিউবের বিভিন্ন চ্যানেল ও পেজে আপলোডের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন বলে দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : গাজীপুর শিশুবক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh