করোনা মোকাবিলায় পরিকল্পনা প্রণয়নে সরকারকে আইনি নোটিশ

করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা কমিয়ে আনতে স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, ক্যাবিনেট সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) মানবাধিকার সংস্থা ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার ইমেইল যোগে এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ অতিক্রম করছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনাভাইরাস আরও বেশি আগ্রাসী। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে এবং শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীতে টইটুম্বুর। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী  রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। করোনাভাইরাস প্রতিনিয়তই তার রূপ পাল্টে নতুন নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। বিভিন্ন স্ট্যাডি ও গবেষণার রিপোর্ট থেকে প্রতীয়মান হয় যে, করোনাভাইরাস শিগগিরই নির্মূল হচ্ছে না, বরং এটি আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর স্থায়ী হতে পারে। তাই  করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পরিকল্পনা।’

‘করোনাভাইরাসের নতুন নতুন বিধ্বংসী প্রকরণ মোকাবিলা করতে গিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ইতোমধ্যে ভেঙে পড়েছে। প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে অসংখ্য রোগী প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। টিকার অপ্রতুলতা, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও হাসপাতালের স্বল্পতা বিষয়টিকে আরও মারাত্মক করে তুলেছে। সে দেশের উচ্চ আদালত ভিক্ষা করে হলেও অক্সিজেন আমদানির জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।’

‘বাংলাদেশে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সরকারকে এখনই স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। পাশাপাশি করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় পথ্য, ওষুধ, অক্সিজেন এবং ১৮ বছর বয়সী সকল নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত টিকা ক্রয় করে তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হলো।’

‘বিশেষ করে টিকা পাওয়ার ক্ষত্রে সরকার ৪০ বছরের বয়সসীমা নির্ধারণ করায় এর নিচের বয়সী যারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন, তারা দুর্গতিতে পড়েছেন। কারণ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা বিভিন্ন ক্রনিক স্বাস্থ্য জটিলতায় আছেন, তারা  বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। কাজেই যারা ৪০ বছরের নিচে অথচ বিভিন্ন স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় রয়েছেন, তাদেরকেও বয়স বিবেচনা না করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’

নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জীবন ধারণের অধিকার প্রত্যেকটি মানুষের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার। সবাইকে মরণঘাতী ভাইরাসের টিকা প্রদান করা সরকারের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব এবং প্রত্যেক নাগরিকের এই টিকা পাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার।’

তাই নোটিশপ্রাপ্তির ৩ দিনের মধ্যে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //