গ্রেনেড হামলার মামলা

এখনো পলাতক তারেকসহ দণ্ডপ্রাপ্ত ১৫ জন

২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ এখনো পলাতক রয়েছেন ১৫ জন। এদের মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশ চলছিল। প্রধানমন্ত্রীসহ প্রথম সারির নেতারা ছিলেন ট্রাকের মঞ্চে। সেই সমাবেশে চালানো হয় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। 

হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। এই ঘটনায় আলাদা তিনটি মামলা হয়। যদিও পরে বিচার হয় দুটি মামলার।

ভয়াবহ ওই গ্রেনেড হামলার সেই ঘটনার ১৪ বছর ১ মাস ২০ দিন পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলা দু’টির রায় ঘোষণা হয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে স্থাপিত আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এছাড়া ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।

এ মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্রের ৫২ জন আসামির মধ্যে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি আগেই কার্যকর হয়েছিল যুদ্ধাপরাধের দায়ে। আর সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার মামলায় হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলের ফাঁসি কার্যকর হয়েছিল। সে কারণে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার রায় থেকে তাদের বাদ দেয়া হয়।

পুলিশ সদর দফতর থেকে জানানো হয়, গ্রেনেড হামলার মামলায় দণ্ডিতদের মধ্যে ৩৩ আসামি কারাগারে রয়েছেন আর ১৫ জন পলাতক।

পলাতক আসামিরা হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান (যাবজ্জীবন), সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (যাবজ্জীবন), কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (যাবজ্জীবন), অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার (২ বছর কারাদণ্ড), ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ টি এম আমিন আহমদ (২ বছর কারাদণ্ড), হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ (মৃত্যুদণ্ড), জঙ্গিনেতা মাওলানা তাজউদ্দিন (মৃত্যুদণ্ড), মহিবুল মুত্তাকিন (যাবজ্জীবন), আনিসুল মোরসালিন (যাবজ্জীবন), মোহাম্মদ খলিল (যাবজ্জীবন), মাওলানা লিটন (যাবজ্জীবন), জাহাঙ্গির আলম বদর (মৃত্যুদণ্ড), মুফতি শফিকুর রহমান (যাবজ্জীবন), মুফতি আব্দুল হাই (যাবজ্জীবন) ও রাতুল আহমেদ বাবু (যাবজ্জীবন)।

পুলিশ সদর দফতরের গণমাধ্যম বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা বলেন, পলাতক আসামিদের মধ্যে ছয়জনকে ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছিল। পরে তারেক রহমান ও কায়কোবাদের নোটিস সরিয়ে নেয় ইন্টারপোল।

ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে যে চারজনের রেড নোটিস এখনো ঝুলছে তারা হলেন- মাওলানা তাজউদ্দীন, হারিছ চৌধুরী, রাতুল আহমেদ বাবু ও মোহাম্মদ হানিফ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //