মোকিম-ঝড়ুর ফাঁসি : নিয়মিত আপিল অকার্যকর বলে আপিলে খারিজ

জেল আপিল নিস্পত্তির পর ফাঁসি কার্যকর হওয়া চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়ুর করা নিয়মিত আপিল অকার্যকর ঘোষণা করে নিষ্পত্তি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। 

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ আজ বুধবার (১০ নভেম্বর) এই আদেশ দেন। 

তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল যাতে না হয়, সেজন্য পূর্ণাঙ্গ রায়ে একটি গাইডলাইন থাকবে বলে জানিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

এর আগে গত সোমবার (৮ নভেম্বর) এ বিষয়ে শুনানি হয়। ‘আসামির আপিল নিষ্পত্তির চার বছর আগেই ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’ শিরোনামে গত ৩ নভেম্বর একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনারও সৃষ্টি হয়। পরদিন ৪ নভেম্বর আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকরে আইনের কোনও ব্যত্যয় ঘটেনি। কারা কর্তৃপক্ষও বলেছে, সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ অনুসরণ করে তাদের দণ্ড কার্যকর হয়েছে।

নিয়মানুযায়ী কোনও আসামির আপিল ও জেল আপিল হয়ে থাকলে দু’টির একসঙ্গে শুনানি হয়। তবে এ মামলায় জেল আপিল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলেও অনিষ্পন্ন অবস্থায় থেকে যায় আসামিদের করা আপিল। ফাঁসি কার্যকরের চার বছর পর এই আপিল বিভাগের কার্য তালিকায় শুনানির জন্য আসে।

মামলা ও আদেশের বিষয়ে না জেনে ব্লেইম দেয়া কোর্টের জন্য বিব্রতকর উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আজ আদালতে বলেছেন, একটি ফাঁসি দেয়ার আগে আমরা ১০ বার চিন্তা করি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আসিফ হাসান আদালতকে বলেন, কোর্টকে ব্লেইম দেইনি। তবে আমাদেরও ভুল হতে পারে।

জেল আপিল খারিজ ও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুরের পরই ফাঁসি কার্যকর হয় আসামি মকিম-ঝড়ুর। তাদের নিয়মিত সেই আলোচিত আপিলটি অকার্যকর বলে তা আজ খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। 

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মো. মনোয়ার হোসেন খুন হন। ওই ঘটনায় তার চাচাতো ভাই মো. অহিমউদ্দিন বাদী হয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড, দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অপর আসামিদের খালাস দিয়ে রায় দেন চুয়াডাঙ্গার আদালত। 

রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আবুল কালাম আজাদ, মোকিম ও ঝড়ু। পরবর্তীতে বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল ও আসামিদের ডেথ রেফারেন্স শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৩ সালের ৭ জুলাই ও ৮ জুলাই রায় ঘোষণা করেন।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে পরে মোকিম ও ঝড়ু সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল ও জেল আপিল করেন। সম্প্রতি মোকিম ও ঝড়ুর আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। আজ বিষয়টি নিস্পত্তি হলো আপিল বিভাগে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //