স্বামীকে এসিড নিক্ষেপ: কী শাস্তি হতে পারে মিলার?

সাবেক স্বামী পাইলট এস এম পারভেজ সানজারিকে এসিড ছুড়ে মারার অভিযোগে করা মামলায় সংগীতশিল্পী মিলা ও তার সহযোগী কিম জন পিটার হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ সালের ৫ (খ) ও ৭ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এ ধারাগুলোর সর্বনিম্ন শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড। ফলে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের সাত থেকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

রবিবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকার এসিড দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

মিলার আইনজীবী শাহিনুর রহমান বলেন, সংগীতশিল্পী মিলা ও তার সহযোগী কিম জন পিটার হালদারের বিরুদ্ধে এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ সালের ৫ (খ) ও ৭ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলাটি আমরা আইনগতভাবে মোকাবিলা করব।

এসিড নিক্ষেপে আহত করার দণ্ড

এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ সালের ৫ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো এসিড দ্বারা অন্য কোনো ব্যক্তিকে এমনভাবে আহত করেন, যার ফলে তার-শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা শরীরের কোনো স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন, তাহলে ওই ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের এবং সর্বনিম্ন ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ সালের ৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন এবং সেই সহায়তার ফলে অপরাধ সংঘটিত হয় বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টা করা হয়, তাহলে অপরাধ সংঘটনের জন্য বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টার জন্য নির্ধারিত দণ্ডে সহায়তাকারী ব্যক্তি দণ্ডিত হবেন।

২০১৯ সালের ৪ জুন পারভেজ সানজারির বাবা এস এম নাসির উদ্দিন সংগীতশিল্পী মিলা এবং কিম জন পিটার হালদারের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মিলার সাবেক স্বামী এস এম পারভেজ সানজারির ওপর এসিড ছুড়ে মারার সঙ্গে আসামি কিম জন পিটার জড়িত আছেন বলে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঘটনার আগে ২৬ মে আসামি কিম মিরপুর ডিওএইচএস সরকার মার্কেটের হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে এসিড কেনেন।

পরে মামলার অন্য আসামি মিলার সঙ্গে পরামর্শ করে ২৭ মে এসিডসহ এস এম পারভেজ সানজারির বাসার সামনে যান কিম। কিন্তু সেদিন বাসার সামনে সানজারিকে না পেয়ে ফিরে আসেন। আসামি মিলার কথামতো অজ্ঞাত আসামিকে সঙ্গে নিয়ে ২ জুন সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে সানজারির বাসার সামনে যান কিম। সানজারির মোটরসাইকেলের সামনে আসে কিম। তখন কিম সানজারিকে বলেন, ‘আমাকে বাঁচান, আমাকে মেরে ফেলবে।’ কিন্তু সানজারি কিম জনকে চিনে ফেলেন। সানজারি বাসার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে কিম এসিড ছুড়ে পালিয়ে যান। এসিডে সানজারির শরীরের ৮ থেকে ১০ শতাংশ পুড়ে যায় বলে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক।

২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিলা ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //