শিক্ষক উৎপল হত্যা

আদালতে স্বীকারোক্তিতে যা বললেন জিতু

আশুলিয়ায় কলেজ শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতু আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। বুধবার (৬ জুলাই) একজন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকার করেন, তিনি বীরত্ব দেখানোর জন্য তার শিক্ষককে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে পিটিয়েছেন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জিতু বলেন, 'ক্যাম্পাসে এক মেয়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে ঘোরাফেরা করার জন্য এই শিক্ষক আমাকে সতর্ক করায় আমি ক্ষুদ্ধ হই। এছাড়াও, তিনি প্রায়ই আমাকে বিভিন্ন কারণে বকাঝকা করতেন।'

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এমদাদুল হক জিতুকে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসানের চেম্বারে আনার পর তিনি তার বক্তব্য রেকর্ড করেন।

বক্তব্য গ্রহণের পর ম্যাজিস্ট্রেট জিতুকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।

হাজী ইউনুস আলী স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জিতু তার বক্তব্যে আরো জানান, ঘটনার কয়েকদিন আগে কলেজ প্রাঙ্গণে একজন মেয়ের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসার কারণে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার তাকে সতর্ক করেন। এতে তিনি রাগান্বিত হয়ে উল্লিখিত শিক্ষককে পেটানোর পরিকল্পনা করেন।

জিতু জানান, তিনি তার চেয়ে বয়সে বড় বান্ধবীর কাছে নিজের বীরত্বের প্রমাণ রাখার জন্য এই পরিকল্পনা করেন।

এরপর ২৫ জুন জিতু স্কুলে একটি ক্রিকেট খেলায় ব্যবহৃত স্টাম্প নিয়ে আসেন। শিক্ষক উৎপল নারী শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময় মাঠের এক কোণায় দাড়িয়ে ছিলেন। সেখানে গিয়ে জিতু তার ওপর হামলা করার কথা স্বীকার করেন।

আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুর বাবা মোহাম্মদ উজ্জ্বল গতকাল মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বলের কাছে স্বীকারোক্তি দেন।

স্বীকারোক্তিতে উজ্জ্বল বলেন, নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার শিক্ষার্থীদের কঠোর শাসন করায় তার ছেলে আশরাফুল ইসলাম জিতু তার ওপর রেগে গিয়ে তাকে পিটিয়ে আহত করে।

জবানবন্দিতে উজ্জ্বল আরো বলেন, পুলিশ জিতুকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা শুরু করলে তিনি তাকে প্রথমে আশুলিয়ায় একটি বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। পরে তিনি ছেলেকে পাবনায় পাঠান এবং নিজে গ্রেপ্তার এড়াতে কুষ্টিয়ায় আত্মগোপন করেন।

গত ২৫ জুন আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র জিতু দুপুর ২টার দিকে মাঠের পাশে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে শিক্ষক উৎপলকে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত উৎপলকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় হামলাকারীসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //