পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট

‘মিটিং করে কী লাভ, বায়ুদূষণে মানুষকে মেরে ফেলছেন’

বায়ুদূষণ রোধে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ না করায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, মিটিং করে কী লাভ, বায়ুদূষণে মানুষকে মেরে ফেলছেন।

আজ রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিকালে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

এসময় ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা দুই সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকার দুই সিটি করপোরশেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এ নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

গত ৩১ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই আদেশ অনুযায়ী রোববার পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

শুনানিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনজীবী আমাতুল করিম বলেন, আদালতের আদেশের পরেই উচ্চ পর্যায়ে মিটিং হয়েছে এবং বেশ কিছু কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর ফলে এই মূর্হতে পরিবেশ সূচক (ইনডেক্সে) অনুসারে ঢাকার অবস্থান ২৪ নম্বরে।

তখন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এই সূচক তো ঠিক নাই। সকালে এক রকম থাকে বিকেলে আরেক রকম হয়। এটা তো সময় সময় পরিবর্তন হয়।

এ সময় আদালত বলেন, সূচকে এক নম্বরে থাকুক আর চব্বিশ নম্বরে থাকুক সব মিলিয়ে পরিবেশে সূচকে আমাদের অবস্থান তো ভালো না। মিটিং করে কী লাভ, যদি পরিবেশ দূষণ না কমে। এসব বন্ধ করেন। বায়ুদূষণে মানুষকে মেরে ফেলছেন।

আদালত আরো বলেন, আপনাদের অনেকের স্ত্রী-সন্তান বিদেশে থাকেন, আপনাদের তো সমস্যা নেই। আমাদের তো এখানে থাকতে হয়। এই দূষণে আমাদের তো সমস্যা হয়।

তখন পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনজীবী লোকবল সংকট, অভিযান চালাতে ম্যাজিস্ট্রেট সংকটের কথা তুলে ধরেন। এ সময় আদালত বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে জুডিশিয়ারি থেকে নেবেন। লোকবল সংকটের কথা কি জানিয়েছেন?

আইনজীবী জানান, গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।

তখন আদালত বলেন, এ সময়ের পরিবেশ দূষণের ফলে পরিবেশ এবং মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে তো কয়েক মিলিয়ন ডলার হবে। আর আপনি বলছেন ৭ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।

আদালত আরো বলেন, আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। এখন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের।

আদালত বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট কেন থাকবে না? আপনাদের লজিস্টিক সমস্যা বলেননি কেন? আপনাদের কাজে সন্তোষ হওয়ার মতো কিছু নেই। এরপর আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।

প্রসঙ্গত, বায়ু দূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালে রায় দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। যার বাস্তবায়নে নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //