নববধূ হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি, খালাস পেলেন স্বামী

রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় বিয়ের তিন দিনের মাথায় নববধূ মনিরা পারভীনকে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নিহতের স্বামীকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ঢাকার ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাফরোজা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মনিরার স্বামী নাসিরের ভাই মাসুদ, বোন হাসিনা ও তার স্বামী মিলন, মিলনের ভাই দেলোয়ার হোসেন ও নাসিরের চাচা দীন ইসলাম। তারা সবাই জামিনে ছিলেন। বৃহস্পতিবার তারা আদালতে হাজিরা দেন।

রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে মনিরার স্বামী নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আদালতের পিপি মো. রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সাত দফা পেছানোর পর বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৮ জুন বিকেলে মনিরা ওষুধ কেনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরিবার তার কোনো সন্ধানও পাচ্ছিল না। পরদিন লোকমুখে তারা জানতে পারেন- নাসির হোসেন কাজী অফিসে নিয়ে মনিরাকে বিয়ে করেছে।

একথা শোনার পর নাসিরের বাবা হাছেন আলীর কাছে যান মনিরার বাবা মোস্তফা এবং মেয়েকে উদ্ধার করে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন।

তখন হাছেন আলী ক্ষিপ্ত হয়ে তার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দিলে বাবা-মেয়েকে খুনের হুমকি দেন তিনি। পরদিন নাসির মনিরাকে নিয়ে নিজের বাড়িতে যান। বাড়িতে যাওয়ার সাথে সাথে নাসিরের বাবা, মাসহ পরিবারের অন্যরা মিলে মনিরাকে কিল, ঘুষি দিয়ে ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পাশের একটি বালুর মাঠে ফেলে রাখেন।

স্থানীয়রা মনিরাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনদিন পর ২২ জুন মারা যান মনিরা।

এ ঘটনায় ২২ জুন মনিরার বাবা মোস্তফা খিলক্ষেত থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় নাসিরের বাবা, মা, চাচাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। তবে মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।