খাদিজা পরীক্ষার আগে কেন কারামুক্ত হলেন না জানানোর নির্দেশ

সর্বোচ্চ আদালতের জামিন আদেশের পরও কেন কারামুক্ত হতে পারেননি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরা, রাষ্ট্রপক্ষকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) খাদিজার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চে বিষয়টি নজরে আনলে এ নির্দেশ দেন আদালত। 

গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জামিন আদেশ পান তিনি। গতকাল রবিবার (১৯ নভেম্বর) তার জামিনের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। পরে আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান খাদিজা।

এর আগে, খাদিজার মুক্তির জন্য রবিবার সারা দিন তার পরিবারের সদস্যরা কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে অপেক্ষা করেন। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত খাদিজা মুক্তি না পাওয়ায় তাকে ছাড়াই তারা ফিরে যান। 

খাদিজার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, জামিনের আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে খাদিজাকে মুক্তি দেওয়া উচিত ছিল। তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। এটা সুস্পষ্ট আদালত অবমাননা।

এদিকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার মো. শাহজাহান মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, জামিনের কাগজপত্র কারাগারে আসার পর যাচাই-বাছাই করে খাদিজাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু পরিবারের কোনো স্বজন না আসায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছিলেন না। পরে তার বোন আসলে সকাল ৯টার দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

আদালত ও আইনজীবী সূত্র জানায়, বিচারিক আদালতে দুইবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হয়। পরে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ১৬ ফেব্রুয়ারি তার জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। অন্যদিকে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে খাদিজা আবেদন করেন, যা রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের সঙ্গে গত ১০ জুলাই আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আপিল বিভাগ আবেদন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি করেন। ফলে এই সময় পর্যন্ত খাদিজার জামিন স্থগিতই থাকে।

আগের ধারাবাহিকতায় খাদিজার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল ১৬ নভেম্বর আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম শুনানি করেন। খাদিজার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা  বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। 

গত বছরের মে মাসে দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত বছরের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানার পুলিশ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //