নীতিমালা ছাড়া রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতা নিয়ে রুল

নীতিমালা ছাড়া সাজা পাওয়া আসামিকে ক্ষমা করার বিধান প্রশ্নে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

রুলে যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করা এবং দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার বিষয়ে নীতিমালা করতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

সোমবার এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। তাকে সহযোগিতা করেন মো. রাশিদুল হাসান, তানজিলা রহমান ও ইফাত হাসান শাম্মি।

সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতার বিষয়ে বলা আছে। সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতার লাগাম টানতে আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে।

বর্তমানে দণ্ড মার্জনা, দণ্ড মওকুফ, দণ্ড হ্রাস, দণ্ড স্থগিত এবং দণ্ড বিলম্বের বিষয়গুলো সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ এবং ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১, ৪০২ ও ৪০২ক ধারা অনুসারে পরিচালিত হয়।

ক্ষমা প্রদর্শনের এই ঘটনাগুলো দেশে আইনের শাসনের ধারণাকে ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’ বলে মনে করছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। তাই রাষ্ট্রপতির এ ক্ষমতাতে সীমিত করতে কয়েখটি সুপারিশ করেছে তারা।

সুপারিশে ‘ক্ষমা প্রদর্শন আইন’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করা এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতাসহ অন্যান্য সব নির্বাহী ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা এই আইনের মাধ্যমে প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। ক্ষমা প্রদর্শন আইনের মাধ্যমে একটি ক্ষমা প্রদর্শন বোর্ড গঠন করারও সুপারিশ করা হয়েছে।

গত ২০ জানুয়ারি নীতিমালা ব্যতিত সাজাপ্রাপ্ত কোনো আসামিকে ক্ষমা করার ক্ষমতার বৈধতা নিয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।

রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইনসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সংসদ বিষয়ক সচিব ও রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতা অবাধ, যার কোনো নীতিমালা নেই। কে, কীসের ভিত্তিতে ক্ষমা পাচ্ছেন তার কোনো নীতিমালা নেই। যা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইতোমধ্যে এই ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্ষমা পেয়েছেন।

ক্ষমাপ্রাপ্তদের মধ্যে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ, আসলাম ফকিরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh