এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শতভাগ ঈদ বোনাস চান

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ  ঈদ বোনাসের পরিবর্তে সরকারি নিয়মে শতভাগ ঈদ বোনাস প্রদান করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মাত্র ২৫ শতাংশ  ঈদ বোনাস পেয়ে আসছেন। যা দিয়ে শিক্ষকরা ঈদের সময় তাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না। ঈদের সময় তাদের মনে কোন আনন্দ থাকে না। 

বিগত ২০০৪ সালের ২২ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য ২৫ শতাংশ ও কর্মচারীদের জন্য ৫০ শতাংশ ঈদ বোনাস প্রদান করা হলেও দীর্ঘ ১৭ বছরে এর কোনো পরিবর্তন নেই। এছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নামে মাত্র যে ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দেয়া হয়, তা দিয়ে বর্তমানে কিছুই করা যায় না।

ধরা যাক, এমপিওভুক্ত হাইস্কুলের একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর (দপ্তরি) বেতন স্কেল ৮ হাজার ৫০০ টাকা হলে। তিনি ঈদ বোনাস পাবেন এর অর্ধেক ৪ হাজার ২০০ টাকা। তিনি মনে করেন যে, ঈদ বোনাসের নামে হাস্যকর পরিমান টাকা দেয়া হয়। আর যা দেয়া হয় তা দিয়ে এই যুগে পরিবার-পরিজন নিয়ে চার, পাঁচ বা ছয় হাজার টাকায় কীভাবে ঈদ উদযাপন করা সম্ভব? শিক্ষকরা লজ্জায় এই স্বল্প পরিমান বোনাস পাওয়ার কথা কাউকে বলতে ও পারেন না। সামাজিকতা রক্ষা করে সম্মান নিয়ে চলাই কঠিন।

দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক চাইলে তাদের আর্থিক দিকগুলো সরকারকে দেখতে হবে। শতভাগ উৎসব ভাতা দিতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষকদের বৈষম্য কমিয়ে আনার কথা বলা আছে। সরকারি শিক্ষকরা প্রতি তিন বছরে একটি শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পান। বেসরকারি শিক্ষকদের তাও দেয়া হয় না। এই বৈষম্য অনেক দিন থেকেই বিরাজমান। অথচ আমরা প্রায়ই বলি, শিক্ষকতায় মেধাবী তরুণরা আসছে না। কেন তারা আসছে না আমাদের ভেবে দেখতে হবে।

বর্তমানে অন্য পেশাজীবীদের মতো শিক্ষকরা ও করোনার প্রভাবে গৃহবন্দি। বিশেষ করে অনার্স মাস্টার্স ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা এই করোনাকালীন সময়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। তাদের প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত বেতন ছাড়া অন্য কোনো আয়-রোজগার নেই। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে করোনার কারণে যেহেতু ছাত্রদের বেতন আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না, সেহেতু তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক বেতনও দেয়া হয় না। ফলে তাদের জন্য ঈদ আসা মানেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঘোর অমানিশার অন্ধকারের মধ্যেই বেঁচে থাকার সমান। তাই এই ননএমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অর্থকষ্টের কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি এদেরকে আসন্ন ঈদুল ফিতরের পূর্বে এমপিওভুক্তি করে তাদের মুখে হাসি ফোটান। আর তা না হলে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের মুখোমুখি হবে। যা জাতির জন্য লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

 অবিলম্বে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দুঃখ, কষ্টের কথা চিন্তা করে আসন্ন ঈদুল ফিতরের পূর্বেই ২৫ শতাংশ ঈদ বোনাসের পরিবর্তে সরকারি নিয়মে শতভাগ ঈদ বোনাস প্রদান করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

- শিক্ষক ও কলামিস্ট

গণসংযোগ বিষয়ক সচিব, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) কেন্দ্রীয় কমিটি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //