সাত কলেজের ভ্যাকসিন জটিলতা

করোনায় ঘরবন্দি মানুষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ গত বছরের মার্চ থেকে। বেশ কয়েক বার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও পরিস্থিতির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়ে ওঠেনি। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে ছাত্রছাত্রীদের করোনার ভ্যাকসিন দিতে হবে। 

গত ১ জুলাই ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্নাতকপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের টিকার তালিকা দিয়েছেন। সেখানে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম তালিকাভুক্ত আছে। আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত কলেজসমূহও।

তবে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত সাত কলেজ’ এর শিক্ষার্থীরা এই তালিকাভুক্ত কি না, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক না। ২০১৭ সালে স্বনামধন্য সাতটি সরকারি কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। যে কারণে এই সাতটি কলেজ তথা ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি বাঙ্লা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। এর দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু অন্তর্ভুক্তির শুরু থেকেই বিভিন্ন সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সমপ্রতি করোনা ভ্যাক্সিন কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। কারণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নেই সাত কলেজের। তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন তালিকায় সাত কলেজ না থাকায়। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে নাম এন্ট্রি করবেন, নাকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে। এহেন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পরিচয় নিয়ে শঙ্কিত। শিক্ষার্থীরা নিজস্ব পরিচয় চান, সঙ্গে করোনার ভ্যাক্সিন দেওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হতে চান।

উল্লেখ্য, সাত কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছে, তালিকার বাইরে তারা টিকা দেবে না। তাহলে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে খুলবে না সাত কলেজ? দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চরম সেশন জটে আটকে আছেন শিক্ষার্থীরা। এখন যদি টিকা না দিতে পারেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা, তাহলে তারা দীর্ঘ ও ভয়ংকর সেশন জটের স্বীকার হবেন বলে ধারণা করছেন। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি—ইউজিসির করোনা ভ্যাক্সিনের তালিকায় স্বতন্ত্র ভাবে সাত কলেজকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং একসঙ্গে টিকা কার্যক্রম চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাত কলেজ খোলার ব্যবস্থা করা।

-শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।