শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ও শতভাগ উৎসব ভাতা চান শিক্ষকরা

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের ২৫ শতাংশ  ঈদ বোনাসের পরিবর্তে সরকারি নিয়মে শতভাগ ঈদ বোনাস প্রদান করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে মাত্র ২৫ শতাংশ ঈদ বোনাস পেয়ে আসছেন। যা দিয়ে শিক্ষকরা ঈদের সময় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না। ঈদের সময় শিক্ষকদের মনে কোন আনন্দ থাকে না। 

বিগত ২০০৪ সালের ২২ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারিদের জন্য ৫০ শতাংশ ঈদ বোনাস প্রদান করা হলেও দীর্ঘ ১৯ বছরে এর কোন পরিবর্তন নেই। এছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নামে মাত্র যে ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়। যা দিয়ে বর্তমানে কিছুই করা যায় না।

ধরা যাক, একজন এমপিওভুক্ত হাইস্কুলের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারির (দপ্তরি) বেতন স্কেল ৮ হাজার ৫০০ টাকা। তিনি ঈদ বোনাস পাবেন এর অর্ধেক ৪ হাজার ২০০ টাকা। তিনি মনে করেন যে, ঈদ বোনাসের নামে হাস্যকর পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়। আর যা দেওয়া হয় তা দিয়ে এই যুগে পরিবার-পরিজন নিয়ে চার, পাঁচ বা ছয় হাজার টাকায় কিভাবে ঈদ উদযাপন করা সম্ভব? শিক্ষকরা লজ্জায় এই স্বল্প পরিমাণ বোনাস পাওয়ার কথা কাউকে বলতেও পারেন না। সামাজিকতা রক্ষা করে সম্মান নিয়ে চলাই কঠিন।

দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক চাইলে তাদের আর্থিক দিকগুলো সরকারকে দেখতে হবে। শতভাগ উৎসব ভাতা দিতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষকদের বৈষম্য কমিয়ে আনার কথা বলা আছে। সরকারি শিক্ষকরা প্রতি তিন বছরে একটি শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পান। বেসরকারি শিক্ষকদের তাও দেওয়া হয় না। এই বৈষম্য অনেক দিন থেকেই বিরাজমান। অথচ আমরা প্রায়ই বলি, শিক্ষকতায় মেধাবী তরুণরা আসছে না। কেন তারা আসছে না আমাদের ভেবে দেখতে হবে।

বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারনে শিক্ষকরা নাজেহাল অবস্থায় আছেন। বিশেষ করে অনার্স-মাস্টার্স এবং ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা এই বর্তমান সময়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। তাদের প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত বেতন ছাড়া অন্য কোন আয়-রোজগার নেই। ফলে তাদের জন্য ঈদ আসা মানেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঘোর অমানিশার অন্ধকারের মধ্যেই বেঁচে থাকার সমান।

তাই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দুঃখ-কষ্টের কথা চিন্তা করে, আসন্ন ঈদুল ফিতরের পূর্বেই ২৫ শতাংশ ঈদ বোনাসের পরিবর্তে সরকারি নিয়মে শতভাগ ঈদ বোনাস প্রদান ও শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মো. আজাদ
শিক্ষক ও কলামিস্ট
গণসংযোগ বিষয়ক সচিব, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস), কেন্দ্রীয় কমিটি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //