স্মার্টফোনই শিক্ষার্থীদের সর্বনাশের মূল কারণ

মহামারি করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক যে সীমাহীন ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠা প্রায় অসম্ভব। করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিমুখতার পাশাপাশি মাঠে-ঘাটে খেলাধুলাও করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। এতে তাদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্থ হয়েছে।

মানুষের দেহ, মন ও আত্মার সঠিক বিকাশকেই শিক্ষা বলা হয়। সরকারি নির্দেশনা ও শিক্ষার্থী ধরে রাখার কৌশল হিসেবে যারা অনলাইন ক্লাসের আয়োজন করেছিলেন তা-ও ছিল নামকাওয়াস্তে। সারা দেশের মোট শিক্ষার্থীর হয়তো পনেরো-বিশ শতাংশ অনলাইন ক্লাসের আওতায় এসেছিলো। তেমন কোন পড়াশোনা হয়নি, উল্লেখযোগ্য কিছু শেখেনি। উপরন্তু অনলাইন ক্লাসের নাম করে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা স্মার্টফোন।

আর এই ফোনই তাদের সর্বশেষ ক্ষতিটুকু করেছে। তাদের নৈতিক স্খলন ঘটেছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের অবারিত সুযোগ তাদের অনেককে করেছে ইউটিউব এডিকটেড, অনেকে হয়েছে পর্নোগ্রাফি এডিকটেড। এমনকি অনলাইন অনেককে 'কিশোর গ্যাং' হতে সাহায্য করেছে। অতিরিক্ত ফেইসবুক, ইউটিউব, ইমো এবং অন্যান্য সামাজিক-অসামাজিক সাইডগুলোতে সারাক্ষণ ডুবে থাকার ফলে তাদের স্নায়ু সিস্টেমে অস্বাভাবিক পরিবর্তন এসেছে। কথাবার্তা ও মেজাজে এসেছে খিটখিটে ভাব। রুক্ষতা, কর্কষতা, উগ্রতা ইত্যাদি সেখানে বাসা বেঁধেছে।

দৈনন্দিন জীবনেও এসেছে পরিবর্তন। নিয়মিত রাত জাগা, একা একা থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা, খাবারে অরুচি-বিস্বাদ, সবসময় উত্তেজিত ও মারমার-কাটকাট মনোভাব সেখানে স্থান করে নিয়েছে। বন্ধুদের মধ্যে গ্রুপিং বেড়ে গেছে, অল্পতেই একজন আরেকজনকে অশ্লীল বাক্য বানে জর্জরিত করছে, সামন্যতেই একে অন্যকে শারীরিকভাবে আঘাত পর্যন্ত করছে।

অল্প বয়সেই প্রেমের নামে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে জীবন নষ্ট করছে। অশ্লীলতার অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে তারা। এমনকি আত্মহত্যার প্রবনতাও বাড়ছে।

কোন একটা ‘গ্যাং এর সাথে জড়িয়ে সামাজিকতা ও নৈতিকতা বিবর্জিত সকল কাজে জড়িয়ে পড়েছে। বড়দের শ্রদ্ধা করা ও ছোটদের স্নেহ করার স্বাভাবিক প্রবণতা অভিধান থেকে মুছে গেছে। পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের সম্মান করার শাশ্বত আদবও সে ভুলে গেছে। 

একারণে আর সময় নষ্ট না করে প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত হবে বাচ্চাদের পড়াশোনা বিষয়ে আরো মনযোগী হওয়া। বাচ্চাদের প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া। তোদের সময় দেওয়া। তাদের স্মার্টফোনের প্রতি আগ্রহ কমানোর জন্য যথাযোথ ব্যবস্থা নেওয়া।

মিরপুর-১০,কাফরুল, ঢাকা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //