আবারও চালু হোক নাটোরের ঈশ্বরদী বিমানবন্দর

নাটোরের লালপুর উপজেলার ২নং ঈশ্বরদী ইউনিয়নে অবস্থিত ঈশ্বরদী বিমানবন্দর। পার্শ্ববর্তী পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা লালপুরের ঈশ্বরদী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হওয়ায় বিমানবন্দরটি অনেকেই পাবনা জেলার মনে করে।

বিমানবন্দরটির জন্য মোট ৪৩৬ দশমিক ৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে ১৪৫ দশমিক ৯১ একর বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দখলে রয়েছে। যাতে বিমানবন্দরের টার্মিনাল বিল্ডিং, রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, এপ্রোন, নেভিগেশন এবং সংযোগ সরঞ্জাম, অফিসারদের আবাসিক এলাকা এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের রাস্তা রয়েছে। দীর্ঘদিন বিমানবন্দরটির অচলাবস্থায় প্রায় অকেজো হয়ে পরেছে বিমানবন্দরের রানওয়ে, টার্মিনাল বিল্ডিং, অফিসারদের আবাসিক এলাকা এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের রাস্তা। 

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ব্রিটিশ শাসনামলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে স্থাপনের পরপরই ১৯৪০-১৯৪৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর স্থাপিত হয়। ১৯৪৫ সালের ৮-২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমানবাহিনীর ২০তম বোমারুবাহিনী এই বিমানবন্দরটি ব্যবহার করেছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বিমানবন্দরটি হিজলি বেজ এলাকা নামে পরিচিত ছিল। 

১৯৮৭ সালে নানা অজুহাতে প্রথম বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার মধ্যে লোকসান ছিলো অন্যতম। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করে ১৯৯৪ সালে বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করা হয়। তারপর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত নিয়মিত এ বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করত। এরপর হঠাৎ বিমানবন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়।

দীর্ঘ ১৭ বছর বন্ধ থাকার পর পুনরায় ২০১৩ সালে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ঈশ্বরদী বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। কিন্তু ৬ মাস ১১ দিন চালু থাকার পর ২০১৪ সালের ২৯ মে আবারো বন্ধ হয়ে যায় বিমানবন্দরটি। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে জানা যায়, মাঝেমধ্যে হেলিকপ্টার ও  বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানগুলোকে এখানে ব্যবহার করে।

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের কারণে ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের রয়েছে নতুন সম্ভাবনা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প ও ইপিজেড ঘিরে সেখানে রয়েছে কয়েকশত বিদেশি নাগরিক বসবাস। জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত রাজধানী ঢাকায় যাওয়ার প্রয়োজন হলেও পাওয়া যায় না ভালো কোনো পরিবহন। সড়কপথে যাতায়াতে সময়ক্ষেপণ ও ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। বিমানবন্দর থাকা সত্ত্বেও সুবিধা নিতে পারছেন না কেউই। বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে প্রকল্প কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়িক কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াত ঈশ্বরদীতে। 

প্রতিশ্রুতির বেঁড়াজালে বন্দী করে না রেখে দ্রুত সংস্কার করে বিমানবন্দরটি চালু করা প্রয়োজন। বিমানবন্দরটি চালুর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সম্ভাবনাময় পর্যটনসহ বিভিন্নক্ষেত্রের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের নতুন অর্থনীতির দ্বার উন্মোচন সম্ভব। 

লেখক: শেখ রিফাদ মাহমুদ, উপদেষ্টা পর্ষদ সদস্য, গ্লোবাল স্টুডেট ফোরাম।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //