লটকনের গ্রাম গিলাবে

লটকনের জন্য বিখ্যাত নরসিংদীর গিলাবে গ্রাম। কাঁচা পাকা সব ধরনের লটকনের দেখা মিলে এখানে। এখানকার বসতবাড়িগুলো যেন বাড়ি নয়; বাগানবাড়ি। বাড়ির আঙিনায় রয়েছে নানা ধরনের ফল ও ফুলগাছ। কাঁচা-পাকা লটকন আর অন্যান্য ফল ঝুলে থাকে গাছে গাছে।  

নরসিংদীতে বেড়াতে গেলে আপনি অবশ্যই গিলাবে গ্রাম ঘুরে আসতে পারেন। আত্মীয়ের বাসায় বেড়ানোর পাশাপাশি নতুন অভিজ্ঞতা হবে আপনার। লটকনের অপরূপ সৌন্দর্যেও চোখ জুড়াতে পারবেন। 

নরসিংদীর পুরো জেলায়ই নানা ফল আর সবজির জন্য বেশ বিখ্যাত। তবে লটকন ফল নরসিংদীর দুটো উপজেলা বেলাব ও শিবপুরে মূলত বেশি হয়। তার মধ্যে গিলাবের, বটেশ্বর, লাখপুর, আজলিতলা, ওয়ারী ও মরজাল গ্রামগুলো বেশ প্রসিদ্ধ। এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় রয়েছে লটকন গাছ। সেই সঙ্গে পরিকল্পিত বাগান। কোনো কোনো গাছে ৩১৫ কেজি পর্যন্তও লটকন ধরে।

এসব গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই লটকন ফল বিক্রির ওপর নির্ভরশীল। চারা রোপণের তিন বছরের মাথায় ফলন আসতে শুরু করে, যা প্রায় ষাট বছর বয়স পর্যন্ত গাছটিতে ফল ধরে থাকে। লটকন বাগানে ঘুরে ঘুরে ফল দেখার প্রত্যাশা মিটবে। 

নরসিংদীর লটকন আকার ও স্বাদে সুস্বাদু। নরসিংদীর মরজাল হলো লটকনের বৃহৎ পাইকারি বাজার। লটকন কেনার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে পাইকাররা আসেন।

লটকন জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস গাছে ধরে। লটকনগাছ খুব একটা পরিচর্যা করারও প্রয়োজন পড়ে না। তাই স্থানীয়রা লটকন বাগানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

লটকন ফল নানা জেলায় ভিন্ন ভিন্ন নামে ডেকে থাকে। যেমন লটকা, ডুবি, বুবিসহ হরেক নামে। 

মরজাল ও তার আশপাশের এলাকায়ই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লটকন হয়। কাপড়, কলা আর লেবুর সঙ্গে লটকনও নরসিংদীকে বিখ্যাত করেছে। রায়পুরার মরজাল, বটিয়ারা, রাজাবাড়ি, শিবপুরের গিলাব, জয়নগর, কামারপাড়া, জানখারটেক, চৈতন্য, সৃষ্টিগড়, কামারটেকে লটকনের ব্যাপক উৎপাদন হয়। এখানাকার প্রায় সব লোকই লটকন চাষ করে। যাদের বাগান নেই, তাদেরও ১০-১২টি গাছ আছে। নরিসংদী ছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট, মানিকগঞ্জ আর গাজীপুরে লটকন হয়। তবে সেগুলো নরসিংদীর মতো অত মিষ্টি নয়। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //