আগামীর প্রস্তুতি আজ থেকেই

যে মুহূর্তে বেঁচে থাকাটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, ঠিক তখন আশাবাদীরা আগামীর স্বপ্ন বুনছেন। কারণ করোনা থেকে বাঁচতে সাবধানতা অবলম্বন করে ঘরে থেকে নিজেকে প্রস্তুত করে কাজে নামতে হবে পরবর্তী সময়ে। যেহেতু মে মাসের প্রথম দু’সপ্তাহ আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। তারপর ঈদ উৎসবও আছে। সব মিলিয়ে বেশ কিছু দিন প্রস্তুত হবার সময় আছে আমাদের হাতে। পরে আফসোস করতে হবে সময় না থাকার কারণে। 

এ সময়টা প্রত্যেকটা মানুষের অন্যরকম কাটছে। যেমন আপনার জব টিকবে কিনা ভয় পাচ্ছেন। তেমনি কাজ হয়নি ব্যবসা মন্দার কারণে বস ভাবছেন কতদিন এভাবে এমপ্লয়িদের বেতন দেয়া যাবে? চাপটা উভয় পক্ষেরই। তাই বুঝতে হবে এবং ধৈর্য ধরে কাজে টিকে থাকতে হবে। 

গত প্রায় দুই মাসে আমরা কাজে অভ্যস্ত হয়েছি ঘরে থেকে। নৈতিক জীবনযাপন, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় রাখা, নিজের কাজ নিজে করাসহ সৃজনশীল অনেক কাজের চর্চা হয়েছে এ সময়ে, যা আমরা লকডাউন উঠে গেলেও বজায় রাখবো। কারণ এ মহামারি নতুন করে জীবনবোধ শেখাচ্ছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, সঠিক স্থানে ময়লা ফেলা, হাত ধোয়া এ ধরনের কথাবার্তা আমরা অনেক শুনলেও মেনে চলি না, যা আগামী দিনগুলোতে কঠোরভাবেই মেনে চলতে হবে।

প্রকৃতি ও প্রতিবেশকে ভালোবাসতে হবে ঘরকে সাজাতে হবে নতুন করে আরামদায়ক শান্তির আবহ তৈরি করে যেন ঘরে থাকতে ভালো লাগে। ঘরে কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট, বাসার বারান্দায় ও ছাদে বাগান করে অক্সিজেন ব্যালেন্সটা নিশ্চিত করা আবশ্যক।

আজ থেকেই সব সময় নিজেকে পজিটিভ রাখুন। আশপাশে খারাপ মানুষ থাকলে এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে যোগাযোগ বন্ধ রাখুন বিশেষ অসুবিধা না হলে। চারপাশের মানুষের সঙ্গে সহনশীলতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। কারণ এ খারাপ সময়টা কেবল আপনার একার সাফারিং নয় সবার জন্যই একই রকম দুঃখজনক।

এ সময় মটিভেটেড থাকতে অতিরিক্ত নিউজ, লাইভ এবং আসক্তির মতো মটিভেশনাল স্পিচ দেখা বন্ধ  করুন কেননা এতে আত্মবিশ্বাস অনেক সময় কমে হতাশা তৈরি হয়। খোঁজ রাখুন; কিন্তু তা অল্প সময়ের জন্য। সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার ভাবের আদান-প্রদান, মিউজিক, জোকস, বইপড়া, নাচ, গান কিংবা কবিতা আপনাকে দেবে প্রশান্তি, গুন গুন করে গেয়ে আনন্দে থাকুন। 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রেখে সব সময় মেনে চললে জীবন খুব সহজ হবে। প্রথমত, গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে, মহামারি, ঢাকার জ্যাম, পরীক্ষা পেছানো এ সবের ওপর আমাদের হাত থাকে না। সময় যতো খারাপ হোক সেটাকে মোকাবেলা করার সাহস রাখতে হবে।

দ্বিতীয়ত, নিজের দায়িত্ববোধ থাকে তা যথাযথ পালন করে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী রাখতে হবে। তৃতীয়ত, নিজের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে হবে।

এ সময়টা উপযুক্ত সময় সৃজনশীল কাজে মেতে ওঠার। সবসময় নিজেকে প্রো-অ্যাকটিভ রাখতে হবে। কোনো আবেগকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। নিজের আবেগিক ভাব নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বেশি আবেগি স্বজন পরিহার করতে হবে। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে সবচেয়ে যে বিষয়টি জরুরি সেটি হলো সদিচ্ছা।

চতুর্থত, আপনার ভালো লাগার বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারেন। যেমন-যদি রান্না পছন্দ করেন কিংবা মনে করেন ফুড বিজনেস ভালোবাসেন, তাহলে উদ্যোক্তাও হতে পারেন। 

পঞ্চমত, যে বিষয়টাতে খুব পরিষ্কার জ্ঞান রাখতে হবে, সেটি হলো-আপনি কী কাজ করতে চান এবং তার পদ্ধতি সম্পর্কে। অনলাইনে প্রচুর কোর্স ও ভিডিও আছে সেই সঙ্গে ফোনে ফোনে কথা বলে আপনি সিনিয়রদের কাছ থেকে শিখে নিতে পারেন আপনার আগ্রহের বিষয়টি সম্পর্কে। 

আগামী দিনগুলোতে আপনি কী করতে চান, সে সম্পর্কে আপনার পরিবারকে জানান।  পরিকল্পনার সাথে প্রস্তুতিও নিন পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //