সাজগোজের জন্য দরকার ত্বকের প্রস্তুতি

যে কোনো উৎসব- তা সামাজিক বা ধর্মীয় হোক না কেন, এর সঙ্গে সাজগোজের বিষয়টি চলে আসে। আর সাজগোজ মানেই প্রসাধনী। ত্বক বিশেষজ্ঞরা যদিও সব সময় বলে থাকেন, মেকআপ না করাটাই সবচেয়ে ভালো। তবে একান্তই করতে হলে, যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকুই করা। এই সাজগোজের জন্য দরকার ত্বকের প্রস্তুতি। সেই প্রস্তুতি পর্বে যেমন ত্বকের যত্নের প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন প্রসাধনী সামগ্রীরও।

পূজার সাজের আগে জরুরি করণীয় নিয়ে কিছু পরামর্শ :

প্রসাধনী কেনা ও ব্যবহারের সময় যে বিষয়গুলোতে খেয়াল রাখবেন- প্রথমত, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ। আপনার ড্রেসিং টেবিল, বিউটি বক্সে যে প্রসাধনীগুলো আছে, তা ব্যবহারের আগে, তার মেয়াদ দেখে নেবেন। বলা হয়, আই প্রোডাক্ট যেমন- আইলাইনার, মাশকারা, আই শ্যাডো এগুলো যদি ব্যবহার শুরু করেন, তবে ছ’মাসের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। ছ’মাসের পরেও যদি বোতলে অবশিষ্টাংশ থাকে; তবে তা ফেলে দেবেন। আর মুখে মাখানোর জন্য প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে যেমন- ফেস পাউডার, কমপ্যাক্ট পাউডার, ফাউন্ডেশন, ব্লাশন, হাইলাইটার, কন্সিলার এগুলো এক বছর ব্যবহার করা যায়। আপনার ত্বকের ধরন বুঝে প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। ড্রাই স্কিনে মেকআপ করার পরে মেকআপটি সাধারণত ফ্লেকিং, ক্রেকি এই ধরনের হয়ে থাকে। আর অয়েলি স্কিনে মেকআপ খুব সহজেই অক্সিডাইজড হয়ে যায়, মুখ ঘেমে যায়। সেই কারণেই ড্রাই স্কিনের জন্য হাইড্রেটিং, ময়েশ্চারাইজিং যুক্ত প্রসাধনসামগ্রী, যেগুলোতে হায়ালুরনিক এসিড আছে, ভিটামিন ই আছে এ ধরনের প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করবেন। আর অয়েলি স্কিনের ক্ষেত্রে দেখতে হবে প্রোডাক্টগুলো যেন নন কমেডোজেনিক এবং ম্যাট ফিনিশ হয়।

নতুন প্রসাধনী ব্যবহারের আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নেবেন। প্যাচ টেস্ট কীভাবে করবেন সংক্ষেপে বলছি, প্রসাধনী থেকে অল্প একটু অংশ কানের পেছনে বা হাতে লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলবেন। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনো র‌্যাশ বা রিয়েকশন হয়, চুলকায়, লাল হয়ে যায়, অস্বস্তি বোধ হয়, রঙ পরিবর্তন হয়, তাহলে এই প্রসাধনটি আপনার জন্য একেবারেই উপযোগী নয়। যে টুলসগুলো ব্যবহার করছেন যেমন- মেকআপ ব্রাশ, ব্লেন্ডার, স্পঞ্জ এগুলো নিয়ম করে পরিষ্কার করবেন সপ্তাহে একবার। আর যেগুলো খুব বেশি ব্যবহার করা হয় না, সেগুলো ধুয়ে, শুকিয়ে এয়ার টাইট কোনো বক্সে রেখে দেবেন। প্রয়োজনে ব্যবহারের আগে আরেকবার পরিষ্কার করে নেবেন।

ত্বকের প্রস্তুতি : মেকআপের আগে ত্বক হতে হবে ক্লিন্ড, ময়েশ্চারাইজড ও প্রটেক্টেড। যে হাত দিয়ে আপনি মেকআপ করবেন, সে হাত অবশ্যই পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। মেকআপ নিয়ে কখনোই ঘুমোতে যাবেন না, ডাবল ক্লিনজিং করে  নেবেন। মেকআপের আগে এবং পরে ডিপ ক্লিনজিংয়ে এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করবেন, যা ত্বকের গভীর থেকে মেকআপের অবশিষ্ট অংশ, অতিরিক্ত ময়লা, ঘাম এবং ডার্ট ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন। সাধারণত লাইট ওয়েট হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার মেকআপের জন্য উপযোগী। আর সানস্ক্রিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এমন কিছু বেছে নেবেন, যেটি সান প্রটেকশনের পাশাপাশি ত্বকে একটি গ্লোয়িং এফেক্ট দেয়। কোনো কোনো সানস্ক্রিনে জিংক, প্যানথেনল, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি থাকে, যা মেকআপ প্রাইমার হিসেবে কাজ করে এবং মেকআপকে লং লাস্টিং করে।

মেকআপ ব্যবহারের পরে সেগুলো খুলে রাখবেন না, বন্ধ করে রাখবেন। তা না হলে জীবাণুর সংক্রমণ হবে । আলো-বাতাসের সংস্পর্শে এসে মেকআপটি স্বাভাবিক রঙ এবং কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। সেইসঙ্গে পণ্যগুলো গুছিয়ে রাখবেন, যেন পরবর্তীতে ব্যবহারের সময় আপনি সঠিক জায়গায় সঠিক প্রসাধনটি পেয়ে যান। পর্যাপ্ত ঘুম এবং পানি পান করবেন। কারণ আর্দ্রতা ও বিশ্রাম ছাড়া কখনোই মেকআপ তার পরিপূর্ণতা পাবে না। হয়তো তখন আপনার ব্লেমিশ চেহারা ঢেকে রাখার জন্য অনেক বেশি মেকআপ করতে হবে, যা ত্বকের জন্য কখনোই অনুকূল নয়।

লেখক : ওনার অ্যান্ড ফাউন্ডার, রিজুভা কসমেসিউটিক্যালস লিমিটেড

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //