পোশাকে শরৎ

বেশিদিন আগের কথা নয়, এই বছর ছয় কি সাত। মানুষের মধ্যে বেড়ে গেছে ভ্রমণের শখ। দল বেঁধে সবাই ঘুরে বেড়ায় শহরের আশপাশে থাকা কাশবনে, এই শরৎকালে। যদি কাশবনে ঘুরে বেড়ানোর পোশাকে থাকে শরতের আবহ, তাহলে কেমন হয়- এই ভাবনাকে কাজে লাগালেন নকশাবিদেরা। খুব স্বল্প পরিসরে শরতের পোশাকের কাজ শুরু হলেও ক্রেতারা তা গ্রহণ করে সাদরেই। 

যদিও করোনার প্রাদুর্ভাবে এ বছর শরতের পোশাকে ভরে ওঠেনি ফ্যাশন হাউসগুলোর সংগ্রহ, কিংবা ভিড় নেই কেনাকাটায়। তবে শরৎ তো দোলা দেয় মনে। ছুটির দিনের বিকেলে অনেকে যাচ্ছেন কাছের কাশবনে শরতের প্রকৃতি দেখতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও ছেয়ে যাচ্ছে সেসব ছবিতে। আর পরনের পোশাকে থাকছে শরতের রং বা নকশা। এমন পোশাক আছে অনেকের ঘরেই। রোদের মাঝেও বৃষ্টিধারায় শরতের সাদা মেঘ। দেশীয় পোশাক নকশাকাররা শরতের জন্য বেছে নিয়েছেন চারটি রং- সাদা, নীল, সবুজ আর সোনালি। নীল আকাশ, সাদা কাশফুল, সোনালি সূর্য আর সবুজ ফসল। এ কারণেই শরৎকালে পোশাকের রং আর নকশায় থাকে বিভিন্ন রঙের খেলা। পোশাকে থাকে বৈচিত্র্যের প্রয়াস।

পোশাক প্রতিষ্ঠান ‘চরকা’র কর্ণধার জাভেদ কামাল বলেন, শরৎ মানেই যেন শুভ্রতার ছোঁয়া। নানান রঙের ছড়াছড়ি। শরতের আবহাওয়াতেও যেন চলে লুকোচুরি খেলা। এই গরম, যে কোনো মুহূর্তেই শুরু হয় ঝমঝম বৃষ্টি। পাশাপাশি চলছে পূজা উৎসবের আয়োজন। সবকিছুকে মাথায় রেখে এবার পোশাকে নীল ও সবুজ রঙের কম্বিনেশন করা হয়েছে। পাশাপাশি থাকছে লাল আর কমলার ব্যবহার। 

শরতের রং হিসেবে এবার কালোকেও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে মেশানো হয়েছে সবুজ রং। কে-ক্র্যাফটের নকশাবিদ শাহনাজ খানের কথায়, প্রকৃতির হালকা মেজাজের সহগামী হয়ে মানুষের মনেও লেগেছে হালকা আমেজ। এ আমেজ ধরে রাখতে আমার মনে হয় হালকা নীল রং অনেক বেশি কার্যকর। আমরা তাই শরতের আয়োজন করেছি হালকা মেজাজের সাদা, নীল, বেগুনি ও সবুজ রঙের সমন্বয়ে। 

শরতের হাওয়ায় প্রকৃতি যেন শিল্পীর তুলির আঁচড়ে আঁকা জীবন্ত এক ক্যানভাস। প্রকৃতির এই ক্যানভাসের অংশ হতে পোশাকের রংটি হওয়া চাই মানানসই। এড্রয়েটের কামরুল হাসান বলেন, রঙের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় শরৎ মানেই হালকা কিছু। আর তাই পোশাকে একেবারেই হালকা নীল ও বেগুনি রং ব্যবহার করেছি। নীল ও বেগুনির পাশাপাশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে সাদা, সবুজ, টিয়া, কমলা, হালকা কালো প্রভৃতি রং। 

এ আবহাওয়ায় মানুষ একটু হালকা রং বেশি পছন্দ করে। তাই এসব রং ব্যবহার করে শাড়ি, ফতুয়া, শার্ট, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টি-শার্টে বিভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রধানত সুতি ও এন্ডি কাপড়ে তৈরি পোশাকগুলোতে ব্লকপ্রিন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্ট, হাতের কাজ ও এমব্রয়ডারি করা হয়েছে। রয়েছে মিশ্র মাধ্যমের কাজ। ব্লকের সঙ্গে কখনো এপ্লিক আবার এমব্রয়ডারির সঙ্গে রয়েছে এপ্লিক বা ব্লকের কাজ। আবার দু-তিন মাধ্যম একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে।

শুধু পোশাকেই নয়, ঘরের পর্দা, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কুশন কভারসহ সবকিছুতেই শরতে আমেজ আনার চেষ্টা করা হয়েছে। চরকা তাদের বিভিন্ন গৃহসজ্জার সামগ্রীতে করে দিয়েছে নীল-সাদার সংমিশ্রণ। কে-ক্র্যাফট দেয়ালের বিভিন্ন রঙের সঙ্গে মিলিয়ে দরজা-জানালার পর্দা, বেডকভার, সোফার কভারের রং নির্ধারণ করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //