ওয়েডিং প্ল্যানিং

মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর অন্যতম হলো বিয়ে। তাই বিয়ের উৎসবে সবাই নান্দনিকতা, বৈচিত্র্য ও অভিনবত্ব চায়। তবে বিয়ের অনেক রীতি আজ আর আগের মতো নেই। এখনকার বিয়ের উৎসব আয়োজনের আনুষঙ্গিক বিষয়েও এসেছে নানান পরিবর্তন। একটি বিয়ের উৎসবের পরিকল্পনা কেমন হবে তা জেনে নেওয়া যাক-

স্টেজ: একটি বিয়ের উৎসবের জন্য স্টেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাই বিয়ের স্টেজের সাজ হতে হবে চমকপ্রদ। স্টেজ ডেকোরেশনে আলাদা কিছু করতে চাইলে মোমবাতি-আয়না ব্যবহার করে সৃজনশীল কিছু করা সম্ভব। ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু ধাপে সারি সারি মোমবাতি সাজিয়ে মোহময় আবহ তৈরি করা যায়।

আবার একটু চেষ্টা করলে কৃত্রিম ঝরনার ব্যবস্থা রাখা যায়। এতে অতিথিরা একটু অবাক হবেন আবার নতুনত্বের স্বাদও পাবেন। আর স্টেজ ছাড়াও পুরো বিয়ের আসরে সফট লাইটিংয়ের ব্যবস্থা রাখলে আসরটি রোমান্টিক হয়ে উঠবে। 

বসার আয়োজন: বিয়ের আসরে জৌলুসের অভাব না থাকলেও অনেকে বসার আয়োজন একটু হালকাভাবে নিয়ে থাকেন। সাদা কাপড়ে ঢাকা চেয়ারগুলো দেখতে অনেকটা দৃষ্টিকটুও লাগে। তাই এই গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে বসার আয়োজনে ভিন্নতা আনলে ভালো হয়। বসার আয়োজনে অভিনবত্ব আনতে ‘লাউঞ্জ’ সিস্টেমের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

আরামদায়ক সোফা ছড়িয়ে দিতে হবে। এমন সেটিংয়ের জন্য বুফে আয়োজনই মানানসই হবে। আবার নবাবি আমেজ আনতে ভিন্ন ভিন্ন আকারের বালিশ বা সিল্ক আবরণে ঢাকা গদি অথবা ডিভানে বসার ব্যবস্থা রাখা যায়। তবে বসার আয়োজনের ক্ষেত্রে কনের দিকটি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

কারণ নির্দিষ্ট আসনে তাকে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয়। তাই কনের জায়গা হতে হবে আরামদায়ক ও নজরকাড়া। যদি চেয়ার বা সোফায় বসার ব্যবস্থা হয়, তাহলে বিভিন্ন রকমের কুশন দিয়ে তা সাজালে ভালো লাগবে। কুশনগুলো আকার ও নকশা অনুযায়ী সাজাতে হবে। কারণ পুরো সেটিংয়ের সৌন্দর্য নির্ভর করে কুশন কাভারের ওপর। 

বিনোদন: সবচেয়ে ভালো হয় যদি গজল বা রবীন্দ্রসংগীতের ব্যবস্থা করা যায়। তবে গানগুলো অবশ্যই প্রাসঙ্গিক হতে হবে। এ ধরনের আয়োজনে অনেক বড় শিল্পী লাগবে ব্যাপারটা এমন নয়, বরং পরিচিতদের মধ্যে যারা মোটামুটি ভালো গান করে তাদের রাখা যেতে পারে। তাদের যে কোনো একজনই পুরো আয়োজনকে জমিয়ে তুলতে পারবে।

আর জমাট আড্ডার ব্যাকগ্রাউন্ডে রোমান্টিক সুরের ব্যবস্থা থাকলে তা সবাইকে আবেগী করে তুলবে। অতিথিদের বাড়তি মনোরঞ্জনের জন্য সেলফি বুথ বা ফটোবুথ রাখলে ভালো হয়। তাহলে সপরিবারে আসা অতিথিরা তাদের আনন্দের মুহূর্তগুলো ফ্রেমবন্দি করে রাখতে পারবে। 

পানের আসর: বিয়ের শাহি খানা-পিনার পরে অনেকেই আয়েশ করে চুন-মসলা সাজানো পান চিবিয়ে আনন্দ পান। তাই বিয়ের আসরের পাশেই সুসজ্জিত একটি পানের আসর রাখলে পুরো আয়োজনে অভিনবত্ব আসবে। আর আসরের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে পানের রসে ঠোঁট রাঙানো ট্র্যাডিশনাল সাজের একজন নারী। তিনি সুদৃশ্য বাটায় পান, চুন, জর্দা সাজিয়ে অতিথিদের পরিবেশন করবেন। 

প্রবেশদ্বার: অনুষ্ঠানের প্রবেশদ্বারেও সৃষ্টিশীলতার আড়ম্বর থাকতে হবে। সাজ-সাজ রবে, বাদশাহী ঢঙে বরকে বরণ করতে পারাই তো একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের সার্থকতা। একসময় মরিচবাতি, রঙিন কাগজ ও নানান ফুল দিয়ে বিয়ের গেট সাজানো হতো। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাদা-হলদে বাতির পর এখন চলছে নিয়ন আলোর অথবা ট্রান্সলুসেন্ট সবুজ আলোর মরিচবাতি।

একটি ভিন্নতা আনতে চাইলে মরিচবাতির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায় সুদৃশ্য, কারুকার্যময় মশাল। এতে পুরো বনেদি ভাব চলে আসবে। তবে সাবধান থাকতে হবে মশাল থেকে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আর এই আয়োজনটা রাতের বিয়ের জন্যই।

অপরদিকে দিনের বিয়েতে ভিন্নতা আনতে কাজে লাগানো যেতে পারে কাগজের তৈরি অরিগ্যামি। তবে কাগজ হতে হবে নজরকাড়া টেকচারের। শুধু প্রবেশদ্বার নয় পুরো অনুষ্ঠানেই অরিগ্যামির ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার বিয়েতে সৈকতের ছোঁয়া আনতে ছোট-বড় নানা আকারের নুড়ি ও পাথর, শামুক-ঝিনুক ও কৃত্রিম কোরাল দিয়ে সাজাতে হবে। যেমন- বিশাল শামুকের খোলস থেকে অর্কিড ফুল ফুটেছে এ ধরনের ডেকোরেশন অতিথিদের চমকে দেবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //