গরমে আরাম পেতে যা জরুরি

মাত্রাতিরিক্ত গরম পড়েছে এবার। এত দিন সূর্যের তেমন একটা উৎপাত না দেখা গেলেও বৈশাখের শুরু না হতেই মাথার উপর যেন আগুন ঝরাচ্ছে। সূর্যের তাপ লাগতেই মনে হচ্ছে যেন পুড়ে যাচ্ছে শরীর। এমতাবস্থায় সবারই এক প্রশ্ন, কীভাবে আরাম পাওয়া যাবে গরমে। 

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সূর্যের তেজ প্রখর থাকে। এ সময় প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না বের হওয়াই ভালো। জরুরি হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করা উচিত। তাতে সরাসরি সূর্যের তাপ থেকে শরীর রক্ষা পাবে। তবে এক্ষেত্রে গরম হয় না এমন কাপড়ের ছাতা ব্যবহার করাই উচিত।

পোশাকের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভারী পোশাক পরিহার করুন। গায়ে চাপান হালকা কাপড়। এ ক্ষেত্রে সুতি কাপড়ের বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে আঁটসাঁট পোশাক এড়িয়ে ঢিলেঢালা পোশাকে নিজেকে মেলে ধরুন। এতে কিছুটা হলেও অস্বস্তি ও গরমমুক্ত থাকা সম্ভব হবে। 

অতিরিক্ত গরম খুবই মারাত্মক। এ সময় শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকে অনেক সময়। তাই সুস্থ থাকতে তরল জাতীয় খাবারের বিকল্প নেই। কেননা শরীর থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম বের হওয়ায় পানি শূন্যতার ঝুঁকিতে পড়ে শরীর। এ অবস্থায় নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

আমাদের অনেকেই কর্মক্ষেত্রে এসিতে থাকায় অফিস শেষে গরমের তীব্র ঝাঁজ সহ্য করতে হয়। শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে এ অবস্থা। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা ও তরল জাতীয় খাবার পানের কোনো বিকল্প নেই। সঙ্গে রুমাল রাখতে পারেন। মাঝে মাঝে ভিজিয়ে মুখমণ্ডল কাঁধ মুছে নিলে আরাম লাগতে পারে। অতি গরমে একটানা এসিতে না থাকাটাই ভালো। কেননা দীর্ঘসময় এসি ব্যবহার শরীর ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। 

এ সময়টায় খাওয়াদাওয়ার উপর বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। তেল-মসলাযুক্ত ভারী খাবার, মাংস-বিরিয়ানি এড়িয়ে চলা উচিত। পাশাপাশি হজমে সময় লাগে এমন খাবার তথা ফাস্টফুড পরিহার করা বাঞ্ছনীয়। এ সময় সবচেয়ে প্রয়োজন সবুজ শাক-সবজি ও ফলমূল। এতে পরিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক থাকবে এবং শরীর থাকবে সতেজ। খাবারদাবারের ক্ষেত্রে এই গরমে সাবধানতার বিকল্প নেই। সেজন্য বাসি খাবার গ্রহণ সম্পূর্ণ পরিহার করা উচিত। 

গরমে ঘর ঠান্ডা রাখাটা বেশ প্রয়োজনীয়। তাই দিনের বেলা জানালার পর্দাগুলো টেনে রাখুন। এতে সূর্যের আলো থেকে ঘরের ভেতরটা রক্ষা পাবে। গরমে ছিমছাম থাকার কোনো বিকল্প নেই। ঘরের পরিবেশের ক্ষেত্রেও এ অবস্থা প্রযোজ্য। এজন্য ঘর অতিরিক্ত আসবাবপত্র দিয়ে ঘিঞ্জি না করাটাই ভালো। এতে করে ঘর থাকে ছিমছাম, গরমও অনুভব হয় কম। প্রতিটি কক্ষে গাছ রাখতে পারেন। সেই সঙ্গে মাটির পাত্রে রাখা পানিতে ভাসিয়ে দিতে পারেন কচুরিপানা। এতে মানসিক পরিতৃপ্তিতে থাকবেন। সবুজ মনকে রাখবে শীতল আর মাটির পাত্রে পানি দেবে নিখাদ প্রশান্তির ছোঁয়া। 

এছাড়া বৈদ্যুতিক পাখার নিচে ঠান্ডা পানি রাখতে পারেন আর ঘরে ঠান্ডা পানি স্প্রে করতে পারেন। এতে বাইরে থেকে গরম হাওয়া ঘরের ভেতর ঠান্ডা হয়ে ঢুকবে। ফলে ঘর হয়ে উঠবে স্বস্তির ও আরামদায়ক।

লাগাতার গরম শিশু ও বয়স্কদের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় গরমের তীব্রতা সইতে না পেরে তাদের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তাই তাদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। এছাড়া এ সময় সবচেয়ে আতঙ্কের নাম হিট স্ট্রোক। গরমের তীব্রতা সহ্যশক্তির বাইরে চলে গেলে এমনটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর লক্ষণগুলো হচ্ছে- মাংসপেশি ব্যথা, দুর্বল লাগা ও প্রচণ্ড পিপাসা হওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম করা, বমিভাব। এমন অনুভব করলেই চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়াটা বাঞ্ছনীয়।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //