শিশুর হিংসাত্মক মনোভাব প্রতিরোধ

অনেক পরিবারেই দ্বিতীয় শিশুর জন্মের পর প্রথম শিশুটির মধ্যে আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। দেখা যায়- প্রথম শিশুটি দ্বিতীয় শিশুর আগমনে আক্রমণাত্মক আচরণ করছে, যা আগে কখনই করেনি। অভিভাবকরা এই নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকেন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলা না করতে পেরে বড় শিশুটির গায়ে হাত তুলে ফেলেন, যা কোনোভাবেই ঠিক নয়। 

এটি খুবই সাধারণ বিষয়। এজন্য শিশুদের সঙ্গে কঠোর হওয়া যাবে না। সাধারণত ভালোবাসা বা আদর ভাগ হয়ে যাওয়া কিংবা নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছু কিছু শিশু, ভাইবোনের জন্ম হলে তাকে সহ্য করতে পারে না। বিশেষ করে প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটে বেশি। সেক্ষেত্রে প্রথম সন্তানকে বোঝাতে হবে।

এ বিষয়ে শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক মারজিয়া আক্তার জয়া বলেন, পরিবারে দ্বিতীয় শিশু আগমনের পূর্বে বড় শিশুটিকে গল্পের মাধ্যমে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। যেমন- কিছুদিন পর আমাদের বাসায় একটা নতুন বাবু আসবে, তুমি সেই বাবুটার সঙ্গে খেলবে, নতুন বাবুকে আমি তোমার জন্যই নিয়ে আসছি, বাবুটার সঙ্গে তুমি স্কুলে যাবে।

তিনি আরও বলেন, ছোট শিশুর অসহায়ত্ব সম্পর্কে বুঝিয়ে বলতে হবে বড় শিশুটিকে। যেমন- ছোট শিশু নিজে খেতে পারে না, নিজের যত্ন নিতে পারে না, কখন কী লাগবে তা বলতে পারে না। তুমি যখন ওর মতো ছিলে তখন তোমাকেও এমনভাবে যত্ন করেছি। এ ছাড়া ছোট শিশুর জন্য কিছু কিনলে বড় শিশুটির জন্যও কিছু কিনতে হবে। আগে বড় শিশুটির সঙ্গে মা-বাবা যেমন করে মিশতেন, সময় দিতেন, আদর করতেন সেভাবেই দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। বড় শিশুটি যেন কখনই মনে না করে- ছোট শিশুটি আসার ফলে তার আদর কমে গেছে বা ওর জায়গা নিয়ে নিয়েছে । কেউ যেন বড় শিশুটিকে মজার ছলেও না বলে- এখন তোমার আদর কমে গেছে, তোমাকে আর কেউ আগের মতো আদর করবে না, কোলে নেবে না, বেড়াতে নিয়ে যাবে না, চকোলেট কিনে দেবে না। এর ফলে বড় শিশুর মধ্যে সৃষ্টি হবে হিংসাত্মক মনোভাব, যার ফলে দুটি শিশুর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হবে।