গান শুনতে এবং গাইতে সবারই ভালো লাগে। গান এবং মানুষের মন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গান মনকে যেমন প্রফুল্ল করে, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। রাগ, ক্ষোভ, হতাশা, ব্যথা এমনকি রক্তচাপ দূর করতে গান যেমন সাহায্য করে, তেমনি মনোযোগ, শেখার ইচ্ছা, স্মৃতিশক্তি, ঘুম, সর্বোপরি সুস্থ জীবন পেতে সাহায্য করে।
ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব জাইভাসকিলা এবং ইউনিভার্সিটি অব হেলসিংকির তৈরি করা একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়, মস্তিষ্কের সঙ্গে সংগীতের বৈজ্ঞানিক যোগাযোগের ভিত্তি আছে। সংগীত মানুষের মস্তিষ্কের অডিটরি কর্টেক্স, মোটর কর্টেক্স এবং লিম্বিক অঞ্চলকে সচল করে।
গবেষণায় বলা হয়, শব্দ-সুর, অনুভূতি, আবেগ সবকিছুর সম্মিলন ঘটিয়ে মস্তিষ্ক তার মতো কাজ শুরু করে দেয়। আর তখনই কানে বাজতে থাকে সুর-কথার মিশেলে তৈরি শুধুই প্রিয় গানটি!
মস্তিষ্কের একটি হরমোন অক্সিটোসিন। এটিকে বিশ্বস্ত অণুও বলা হয়। কারণ আমাদের পরস্পরের সঙ্গে আত্মার বন্ধন কিংবা কাছে আসার ইচ্ছা, কাউকে ভালোবেসে বিশ্বাস করতে শুরু করা সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন। গবেষণায় উঠে এসেছে, সংগীত আমাদের মস্তিষ্কের এই অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণে বিরাট ভূমিকা রাখে!
কারো কাছে রবীন্দ্র সংগীত, কারো কাছে নজরুলগীতি, কারো কাছে লোক সংগীত আবার কারো কাছে রক কিংবা দুঃখের গান পছন্দের।
ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের অধ্যাপক ডেইজি ফ্যানকোর্ট বলেন, গান গাইলে কোর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোন বা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের পরিমাণ কমে যায়। এছাড়া এটি এন্ডরফিন হরমোনের নিঃসরণেও সাহায্য করে। যে হরমোনের মাত্রার ওপর মেজাজ ভাল থাকা-না থাকা নির্ভর করে।
অধ্যাপক ফ্যানকোর্টের মতে, গান গাওয়ার নানাবিধ স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানসিক অভিব্যক্তি, যেটা কিনা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে থাকা বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি হ্রাস পায়।
কাজেই শরীর ও মনকে সুস্থ্য রাখতে গান শোনা এবং গাওয়া ভালো বই মন্দ কিছু বয়ে আনবে না।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : গান মানসিক স্বাস্থ্য অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণ
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh