ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কী

শরীরের তাপমাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, মেজাজ ভালো করা, স্মৃতিশক্তি বাড়ানোসহ নানা বিষয়ের মূলে আছে শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখা, অর্থাৎ পর্যাপ্ত পানি পান করা। পানি পানের অল্প সময়ের মধ্যেই একজন শরীরে সতেজতা এবং শক্তি অনুভব করে। তবে সেই পানিতে ইলেক্ট্রোলাইট যোগ করলে কী হয়?

ইলেক্ট্রোলাইট হচ্ছে এক ধরনের খনিজ বা বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত পদার্থ। এগুলো রক্ত, টিস্যু, অঙ্গ এবং অন্যান্য শারীরিক তরলে পাওয়া যায়। সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ফসফেট এবং ম্যাগনেশিয়াম সবই ইলেক্ট্রোলাইট। এটি শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এগুলো শরীরে পানির পরিমাণের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ডায়রিয়া ও বমি হলে শরীরে পানির অভাব দেখা দেয়। ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকরা ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় পানের পরামর্শ দেন।

শরীরের বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন করতে ব্যবহার হয় এই ইলেক্ট্রোলাইট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-শরীরে পানি ও অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজার রাখা, বিভিন্ন কোষের মধ্যে পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দেওয়া এবং সেখান থেকে বর্জ্য অপসারণে সহায়তা করা, স্নায়ু, পেশি, হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম অক্ষুণ্ণ রাখা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষের ক্ষয়পূরণ করা।

খাবারের মাধ্যমে নানানভাবেই ইলেক্ট্রোলাইট পাওয়া যায়। এর মধ্যে সহজলভ্য খাবারগুলো হলো, ডাবের পানি, কলা, দুধ ও দুধের তৈরি খাবার, তরমুজ, ফলের রস, হাঁস-মুরগির মাংস। সবুজ সবজি, মটর, সয়া পণ্য, কাঠ বাদাম ও বকচয় খনিজের ভালো উৎস। এ ছাড়া ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় পান করা যায়।

উপকারিতা

চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা বলেন, 

যখন অনেক ঘাম হয় তখন যে লবণ বের হয়ে যায়, এর ঘাটতি পূরণের উপাদানগুলো রয়েছে ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়তে। যারা ওয়ার্ক আউট বা খেলাধুলা করে তাদের জন্য এটা প্রয়োজনীয়।

মানুষের শরীরের পিএইচ স্তর বজায় রাখতে এবং কোষের ভেতরে এবং বাইরে পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে ইলেক্ট্রোলাইট। এটি পেশি, স্নায়ু এবং অন্যান্য অঙ্গকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।

ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু পুনর্নির্মাণ করতে সাহায্য করে। হাঁটা, শ্বাস-প্রশ্বাস, হাসি এমনকি চিন্তা করার জন্যও ইলেক্টোলাইট প্রয়োজন।

গ্রীষ্ম মৌসুমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে তাপ-সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধের সেরা উপায় ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়। অন্যান্য তরলের সঙ্গে ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় গ্রহণ করলে তা শরীরকে শীতল রাখে।

তবে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স তৈরি হলে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। পুষ্টিবিদরা বলেন, এ ধরনের পানিতে অত্যধিক পরিমাণ সোডিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে। যে কারণে অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনে এ জাতীয় পানীয় পান করলে উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনি রোগ দেখা দিতে পারে। 

যেভাবে ইলেক্ট্রোলাইট পানি তৈরি করবেন: একটি বড় গ্লাসে এক চা-চামচের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ লবণ, একই পরিমাণ লেবুর রস, দেড় কাপ নারকেলের পানি আর দুই কাপ সাধারণ পানি একসঙ্গে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যায় ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়। এতে যোগ করতে পারেন মধু।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //