অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় সাংবাদিক সমাবেশ

গাইবান্ধার সাংবাদিক নেতারা পেশিশক্তি ও অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যম যাতে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারে সে জন্য সাংবাদিকরা যেন বিনা বাধায় এবং নিরাপদ পরিবেশে যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আর সাংবাদিকদের প্রকৃত স্বাধীনতা ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সুদূর পরাহত। গণমাধ্যম এখন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে জেলা শহরের কাচারী বাজার এলাকায় গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবের সামনে পেশিশক্তি ও অপসাংবাদিকতা বন্ধের দাবিতে সাংবাদিক সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবের আয়োজনে সাংবাদিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দীপক কুমার পাল (সম্পাদক দৈনিক জনসংকেত)। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিসউজ্জামান মনা (এটিএন বাংলা)।

মেহেদী হাসান বাবুর (দৈনিক নবচেতনা) সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তারা বলেন, অনেকেই আজ হঠাৎ করেই ‘সাংবাদিক’ বনে গেছেন। নামসর্বস্ব অনলাইন ও নিজেদের ফেসবুকের টাইমলাইনে কিছু লেখা পোস্ট করেই তারা নিজেদের সাংবাদিক দাবি করে বসেন। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি করাই এসব ব্যক্তিদের প্রধান কাজ। তাদের কেউ সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেই হাল ছাড়েনি, সম্প্রতি গাইবান্ধা প্রেসক্লাব ভবনটিও দখলে নেয়ার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হয়েছে গাইবান্ধা প্রেসক্লাব দখলের অপচেষ্টা। অবৈধভাবে একটি চক্র ১১দিন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গাইবান্ধা প্রধান প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছিল।

বক্তারা বলেন, প্রভাবশালী মহলের চাপ, হামলা-মামলা, রাজনৈতিক হুমকির কারণে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়। মাঠপর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে কম যান না। সুযোগ পেলেই তারা সাংবাদিকদের নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন এমনকি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অপব্যবহারও হয়ে থাকে। অথচ বর্তমান সরকার কর্তৃক ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের’ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে ভূমিকা পালনের কোনো বিকল্প নেই।

তারা বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে না পারাসহ নানা কারণে আমাদের দেশের গণমাধ্যম তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে বসেছে। সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদার প্রশ্নে এটি মোটেও সুখকর নয়। কাজেই হলুদ সাংবাদিকতা, অপসাংবাদিকতা কিংবা দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা যেন কোনোভাবেই তাদের স্পর্শ না করে সে ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এটি মেধা ও মননের পেশা, অধ্যায়ন ও অধ্যবসায়ের পেশা। এ পেশায় নিয়োজিত মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, জীবনের নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে সব মহলেরই এগিয়ে আসা উচিত।

সমাবেশে বক্তব্য দেন, রেজাউন্নবী রাজু (সাপ্তাহিক প্রতিপক্ষ), অমিতাভ দাশ হিমুন (কালের কণ্ঠ), মো. খালেদ হোসেন (এশিয়ান টিভি), অধ্যাপক শফিউল ইসলাম (যায়যায়দিন), কুদ্দুস আলম (ফোকাস বাংলা), রজতকান্তি বর্মন (চলমান জবাব), জাভেদ হোসেন (ঢাকা টাইমস্), মিলন খন্দকার (আনন্দ টিভি),  উত্তম সরকার (আজকালের খবর), কেএম নিয়ামুল ইসলাম পামেল (কালবেলা), গোলাম রব্বানী মুসা (প্রতিপক্ষ), উজ্জল চক্রবর্তী (মাধুকর), মিজানুর রহমান রাজু (আজকের বসুন্ধরা), কায়সার রহমান রোমেল (সময়ের আলো), শাহজাহান সিরাজ (গণমানুষের আওয়াজ), সালাম আশেকী (তালাশ টাইমস্), শাহীন নূরী (জনসংকেত)।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //