শাহেরীন আরাফাত
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২০, ০৯:২৯ এএম
গত ২৫ নভেম্বর জেল থেকে মুক্তি পান রিপাবলিক টিভির এডিটর-ইন-চিফ অর্ণব গোস্বামী। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
সাংবাদিকদের গ্রেফতার, বিচার প্রক্রিয়ায় যখন সুস্পষ্ট দ্বিচারিতা দেখা যায়; তখন লোকজন স্বভাবতই বিচার ব্যবস্থা, সুপ্রিম কোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারেন।
প্রশ্ন হলো- বিচারের মানদণ্ড কি সব সাংবাদিকের জন্য একই হবে; নাকি ক্ষমতা কাঠামোর ঘনিষ্ঠ কোনো কোনো সাংবাদিকের ক্ষেত্রে তা ভিন্ন আকার ধারণ করে? এক সাংবাদিকের মামলার শুনানির জন্য পুরো ব্যবস্থা উঠে-পড়ে লাগে; আবার অন্য সাংবাদিক-সমাজকর্মীদের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম শুরু করতেই লেগে যায় মাসের পর মাস।
এমন অবস্থায় ক্ষমতা কাঠামো প্রশ্ন তোলাও যে কারও গণতান্ত্রিক অধিকারের আওতায় পড়ে।
৮৩ বছরের স্টান স্বামী করোনাকালেও জামিন পাননি। পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত এ মানুষটি একটি স্ট্র চেয়েছিলেন, তা দিতে এখনো শুনানির সময় হয়নি আদালতের। অথচ ক্ষমতা কাঠামোর ঘনিষ্ঠ অর্ণব গোস্বামী গ্রেফতার হলে, তাকে সাংবাদিক ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে মুক্ত করতে উদ্যত হয় বিভিন্ন মহল।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক- এসব স্বাধীনতা কি সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে? যদিও গত ছয় বছরে ভারতের বিচার ব্যবস্থা ও সুপ্রিম কোর্ট ক্রমাগত নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলিও এর বাইরে নয়।
৮০ বছর বয়সী বিপ্লবী কবি ভারাভারা রাও, সমাজকর্মী সূধা ভারদ্বাজ, রোনা উইলসন, সাংবাদিক ভারনন গনজালভেজ, অরুণ ফেরেরা বিতর্কিত ভিমা-কোরেগাঁও মামলায় গ্রেফতার। অথচ ওই মামলায় তাদের জড়িত থাকার কোনো বাস্তব ভিত্তি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকার পক্ষ দেখাতে পারেনি। শরীরের ৯০ শতাংশ অকেজো হয়ে পড়া অধ্যাপক সাইবাবাকে আন্ডা সেলে (ফাঁসির আসামিদের যেখানে রাখা হয়) বন্দি রাখা হলো; মায়ের মৃত্যুর পর শেষ দেখার আবেদনও খারিজ করেন আদালত। একজন পঙ্গু অধ্যাপক এতটাই বিপজ্জনক যে, তাকে বেঁচে থাকার জরুরি চিকিৎসাটুকুও দিতে রাজি নয় এই ব্যবস্থা! এরপরও কি বলা যাবে- এটি একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো?
প্যাট্রিসিয়া মুখিম মেঘালয়ের শিলং টাইমস পত্রিকার সম্পাদক, তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারও পেয়েছিলেন। সম্প্রতি তার এক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে মামলা করা হয়। সেখানে বলা হয়, ওই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি হাই কোর্টে ওই মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করেন; কিন্তু আদালত সে আবেদন খারিজ করে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দিতে হবে। তাই এই মামলা তুলে নেয়া যাচ্ছে না। এখন তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে যাচ্ছেন।
ওই ফেসবুক পোস্টে প্যাট্রিসিয়া অভিযোগ তোলেন, এক হত্যা প্রচেষ্টায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে চিনতে অস্বীকৃতি জানায় গ্রাম পরিষদ। প্যাট্রিসিয়া মুখিম মেঘালয়ের অধিবাসী, যে কারণে তার পক্ষে দিল্লিতে সেভাবে আওয়াজ ওঠেনি। এমনকি এডিটরস গিল্ডও (সম্পাদকদের সংগঠন) তার পক্ষে দাঁড়ায়নি। গত ১৭ নভেম্বর তিনি এই সংগঠন থেকে ইস্তফা দেন। তিনি অভিযোগ করেন সম্পাদকের এই সংগঠন শুধু তাদের পক্ষেই দাঁড়ায়, যারা জনপ্রিয় অথবা সেলিব্রেটি। জাতিগতভাবে খাসিয়া হওয়ায় তার মামলায় এডিটরস গিল্ড কোনো বক্তব্য দেয়নি বলে তার অভিযোগ।
প্যাট্রিসিয়া আরো বলেন, ‘অর্ণব গোস্বামী গ্রেফতার হওয়ার সাথে সাথেই এডিটরস গিল্ড তার পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে, যদিও তার মামলাটি সাংবাদিকতা সম্পর্কিত ছিল না; কিন্তু আমার মামলার বিষয়টি এডিটরস গিল্ডকে জানানোর পরেও এ নিয়ে তাদের কোনো হেলদোল ছিল না।’
ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো ও কাশ্মীরের সাংবাদিকরা পেশাগত সংগঠনেও জাতিগত বৈষম্যের শিকার হন। প্যাট্রিসিয়ার ঘটনা এ বিষয়টিকে আবারো সামনে নিয়ে এলো- বলছিলেন, এনডিটিভির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রাভীশ কুমার।
তিনি আরো বলেন, ‘অর্ণব গোস্বামীর মামলার পর এ বিষয়টি আরো জোরালোভাবে সামনে আসছে যে, আদালত কোনো ক্ষেত্রে দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, আবার একই ধরনের অন্য কোনো মামলায় এমনটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন উদাহরণেরও কমতি নেই।’
অর্ণবের মামলায় দুই বিচারক ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও ইন্দিরা ব্যানার্জির বেঞ্চে শুনানি হয়। অর্ণবকে জামিন দেয়া হয়। সেখানে বিচারপতি চন্দ্রচূড় কিছু মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন, কিন্তু সাংবিধানিক আদালতকে সেই ভিন্নমত পোষণের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখতে হবে। তা না হলে আমরা স্বাধীনতা বিনাশের পথেই হাঁটব। যদি আমরা একটি সাংবিধানিক আদালত হিসেবে আইন তৈরি করে স্বাধীনতা রক্ষা না করি, তবে এ কাজটি কে করে দেবে?’
এ বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে- যদি আদালত সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির কথা বলে, তাহলে একই ধরনের মামলায় আদালতের এত ভিন্নতর অবস্থান দেখা যায় কেন? জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রশ্নে ১০০ মামলার ৯৯টিতেই ভিন্ন চিত্র দেখা যায়।’ এর উত্তরে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘আজ আমরা যা করছি, তা ওই ৯৯টি মামলার ক্ষেত্রেও কী করা উচিত তার নির্দেশনা দেবে।’
অথচ এ মামলার পরপরই উত্তরপ্রদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। গত ১৬ নভেম্বর সাংবাদিক সিদ্দিক কম্পনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি সামনে আসে। তাকে ভিত্তিহীন মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হলেও, সে আবেদন নাকচ করে মামলাটি আলাহাবাদ হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
উত্তর প্রদেশের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শরৎ প্রধান সাংবাদিকতার স্বাধীনতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ফ্রিডম অব প্রেস তো এখন শুধু বইপত্রেই রয়ে গেছে। পুরো দেশের অবস্থা প্রায় একই। জরুরি অবস্থায় সংবাদমাধ্যমের যে অবস্থা ছিল, এখন অনেকটা সেরকমই, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার থেকেও ভয়াবহ। মজার ঘটনা হলো- অর্ণব গোস্বামীকে গ্রেফতার করায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ খুব কষ্ট পেলেন, যে অর্ণব গোস্বামী এখন আর সাংবাদিক নন, একসময় ছিলেন, আর যে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়, সেটিও সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত নয়। অথচ আদিত্যনাথই ভিত্তিহীন মামলায় ফাঁসিয়ে সাংবাদিকদের কারাগারে বন্দি করছেন। এখন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা তো অনেক দূরের কথা, চোখে দেখা, কানে শোনা বাস্তব চিত্রও দেখানো বা লেখা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। যদি তা সরকারি বক্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তাহলেই এটিকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে মামলা করা হচ্ছে। তার মানে, রিপোর্ট করার আগে সরকারকে জিজ্ঞেস করে নিতে হবে, কী লেখা হবে- এটি নিশ্চয় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখনো কেউ কেউ নিজের জীবন-জীবিকা বিপদে ফেলেও প্রকৃত সাংবাদিকতা করছেন। তবে সাংবাদিকদের বড় অংশটিই ক্ষমতার সাথে আপস করে চলে। কেউ কেউ অর্ণব গোস্বামীর মতো ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র হয়ে পড়েছেন; কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন থাকতে চান; কেউ বা চাটুকারিতায় নিজের পেট ভরান; আবার কেউ কেউ নিজের ব্যবসায়িক বা ভিন্ন স্বার্থে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে থাকাটাকেই আদর্শ ধরে নেন। এর বাইরে কেউ কেউ মূল জায়গায় আঘাত না করে, মৃদু সমালোচনা করে থাকেন। এছাড়া মিডিয়া হাউসগুলোতে সরকারের মাধ্যমে প্রচুর বিজ্ঞাপন আসে। এটিও বিরুদ্ধ মতের রিপোর্টিং আটকে দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব রাখে। এটিই হয়ে পড়েছে এ সময়ের সাংবাদিকতা। আর এর বাইরে রয়েছে গুটিকয়েক সাংবাদিক, যারা এখনো জনগণের সামনে সত্য উদ্ঘাটন করতে চান। আর অবশ্যই সেটি তারা করছেন নিজের জীবন-জীবিকা ঝুঁকিতে ফেলে।’
গত ১৩ নভেম্বর দ্য হিন্দু পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ‘অর্ণব গোস্বামীর মামলাটি সবসময়ই জামিন যোগ্য ছিল; কিন্তু এ বিষয়টি পরিষ্কার নয়- ব্যক্তিগত স্বাধীনতার আওতায় নিয়মিত প্রক্রিয়ায় যে জামিন পাওয়ার কথা, তা আদালত ব্যবহার করেনি কেন? নিম্ন আদালতে যাওয়ার আগেই অর্ণব গোস্বামী বোম্বে হাই কোর্টে যান। যেখানে নিম্ন আদালতে শুনানির সুযোগ ছিল, সেখানে উচ্চ আদালতে যাওয়ায় তা খারিজ করাকে ভুল বলা যাবে না। সাধারণভাবে উচ্চ আদালতে বলা হয়- যখন নিম্ন আদালতে শুনানির সুযোগ থাকে, তখন সেখানেই শুনানি করা উচিত। যখন সেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত রায় আসেনি, তখন সুপ্রিম কোর্ট জামিন দিয়ে দেয়। এখানে এটিই চিন্তার বিষয় যে, অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন এত জলদি কেন শোনা হলো। উচ্চ আদালত কি নিম্ন আদালতকে এড়িয়ে কোনো মামলার শুনানি করতে পারে? কোনো ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচারককে কি একদিনের শুনানিতেই জামিন দেয়া উচিত?’
গত ১৪ নভেম্বর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ‘বিচারক ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সর্বোচ্চ আদালতের জবাবদিহি বর্ণনা করে যা বলেছেন, তা একদম সঠিক। এক মুহূর্তের জন্য অর্ণব গোস্বামীকে ভুলে যান। যদি আমরা সাংবিধানিক আদালতের মাধ্যমে আইনের গণ্ডি নির্ধারণ না করি, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষা না করি, তাহলে তা কে রক্ষা করবে? এই মামলায় অতিসাধারণ স্বচ্ছতা দেখা গেছে, যেখানে অন্য মামলাগুলো থেকে সম্ভবত চোখ ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। যেসব মামলা সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নাগরিক বনাম রাজ্যের মামলাগুলোয় নিজের অবস্থান সমুন্নত রাখতেও সক্ষম হয়নি। তা কাশ্মীরে হেবিয়াস কর্পাসের হোক, অথবা সংবাদকর্মীদের ওপর বিভিন্ন ধরনের- দেশদ্রোহ থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদের ধারা আরোপ করার ঘটনাই হোক। অথচ সাংবাদিকরা শুধু নিজের কাজটুকুই করছিলেন।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে এমন ১০টি মামলা এসেছে, যার সাথে অভিযুক্তের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার সম্পর্ক রয়েছে। ওই ১০ মামলার যে চারটিতে সরকারি আইনজীবী বিরোধিতা করেননি, সেগুলোতে আদালত পক্ষে রায় দেন। সেখানে বাদী-বিবাদী একই লাইনে বক্তব্য তুলে ধরেন। এর বিপরীত ছয় মামলায় রাষ্ট্র পক্ষ থেকে আপত্তি করা হয়, সেখানে আটক ব্যক্তির স্বাধীনতার প্রশ্নটি আমলেই নেয়া হয়নি।
এ প্রসঙ্গে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ফয়জান মুস্তফা বলেন, ‘সংবিধানে সবচেয়ে বড় অধিকার হলো- জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার। কারণ যখন জীবন থাকবে, তখনই তার পেশা, চলাফেরা, মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টি আসবে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, মানবজীবনের মানে শুধু পশুর মতো বেঁচে থাকা নয়। এখানে জীবনের মানেই হলো- মানুষের মতো জীবন। তার মানে জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারের সঙ্গে আরও অনেক অধিকার যুক্ত করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এখানে পড়াশোনা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, পরিবেশের মতো অনেক অধিকার যুক্ত রয়েছে। তবে ভারতের সংবিধানে বলা হয়েছে, নাগরিকদের এই অধিকার আইন দ্বারা সিদ্ধ হবে। অর্থাৎ যদি এমন কোনো আইন তৈরি হয়ে যায়, যা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণ করে, তবে নাগরিক ওই অধিকার হারাবেন।’
ইন্দিরা গান্ধী পরবর্তী সময়ে, যখন কেন্দ্রীয় সরকার এত শক্তিশালী ছিল না; তখন সুপ্রিম কোর্ট অধিক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এ সময়ে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। তবে দুই দফা নরেন্দ্র মোদি সরকার ও বেশির ভাগ রাজ্যে বিজেপির আধিপত্য পরিস্থিতি বদলে দেয়। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত দলীয়করণের চিত্র সামনে আসে। কাগুজে হলেও জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া ৩৭০ ও ৩৫(এ) ধারা সংবিধান থেকে খারিজ করা হলো, গরু খাওয়া নিষিদ্ধ করা হলো, গরু খাওয়ার ‘অপরাধে’ পিটিয়ে মারা হলো, ভিন্ন ধর্মের ছেলে-মেয়েদের বিয়ের ‘অপরাধে’ মানুষ মারা হলো, সাংবাদিক-সমাজকর্মীদের হত্যা করা হলো, রাষ্ট্রদ্রোহ-সন্ত্রাসী মামলায় আটক করা হলো- এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান ক্ষমতাসীন বিজেপির নীরব সমর্থকের মতোই।
সুপ্রিম কোর্টের সামনে আক্রান্তদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রশ্নটি তোলা হলেও, তা খারিজ করে দেয়া হয় বিভিন্ন অজুহাতে। যা ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট তথা বিচার ব্যবস্থার হিন্দুত্বকরণের কথাই জানান দেয়।
ABOUT CONTACT ARCHIVE TERMS POLICY ADVERTISEMENT
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ | প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ
প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী | ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
© 2021 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh