এ বছর জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের ফ্রিডম অব স্পিচ অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন নাইজেরিয়ার সাংবাদিক টোবোরে অভোরি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধমে তিনি নাইজেরিয়ার মানব পাচারকারীদের বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব পাচারকারী নাইজেরিয়া থেকে নারীদের প্রতারিত করে ইউরোপসহ নানা জায়গায় পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করছে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাসব্যাপী গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে তৈরি টোবোরের প্রতিবেদনের পর এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে নাইজেরিয়া সরকার। আর এ রিপোর্ট করেই এ বছরের ‘ফ্রিডম অব স্পিচ’ অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন অভোরি।
সংবাদমাধ্যম বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করা ডয়চে ভেলের গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম এ ঘোষণা দেয়া হয়।
জার্মানির বন শহরে ডয়চে ভেলের প্রধান কার্যালয়ে দুই দিনের এ আয়োজন ভার্চুয়্যালি উদ্বোধন করেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। তাছাড়া দেশটির আসছে জাতীয় নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দী ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি বা সিডিইউএর আরমিন লাশেট ও গ্রিন পার্টির আনালেনা বায়েরবুক উপস্থিত ছিলেন। ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমব্যুর্গ ও বেলারুশের বিরোধী দলের নেতা সভেটলানা টিখানোস্কায়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বের ১২০টি দেশ থেকে অতিথিরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় চ্যান্সেলর ম্যার্কেল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজে যেখানে আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি, আমাদের সচেতনভাবে বিবেচনা করতে হবে স্বাধীনতা বলতে ঠিক বুঝায় এবং কীভাবে আমরা স্বাধীনতা ও মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারব।’
অনুষ্ঠানে ইউরোপে সাংবাদিকদের অধিকারের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। ইউরোপে সাংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কীভাবে চাপের মুখে পড়ছে তা ব্যাখা করতে গিয়ে বেলারুশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি উল্লেখ করেন ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমব্যুর্গ ।
তিনি বলেন, বেলারুশে যা হচ্ছে তা ইউরোপের জন্য লজ্জাজনক। আর এমন পরিস্থিতি রাশিয়ার সমর্থন ছাড়া সম্ভব হতো না। তিনি বলেন, আর সব স্বৈরশাসকের মতোই বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লোকাশেঙ্কো ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চান যে গণমাধ্যম তাদের শুধু প্রশংসা করুক।
বেলারুশে সম্প্রতি আটকের পর মুক্ত হওয়া সাংবাদিক আলেকজান্ডার বুরাকোভের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের বিষয়ে আমাদের একটি স্পষ্ট অবস্থান থাকা উচিত।’
অনুষ্ঠানে গঠনমূলক সাংবাদিকতা বিষয়ে বলতে গিয়ে হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক প্রফেসর স্টিভেন পিংকার বলেন, তথ্য আদান-প্রদানের ডিজিটাল পদ্ধতির কারণে গণমাধ্যমগুলোর কাজ ব্রেকিং নিউজ, দুর্যোগ, সঙ্কট ইত্যাদি বিষয়ক সাংবাদিকতা দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। আর এর ফলে অনেক গণমাধ্যম ব্যবহারকারীর উপর মানসিক প্রভাব পড়ছে। এমন সাংবাদিকতায় অনেক ইতিবাচক প্রেক্ষাপট চাপা পড়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh