ইসরায়েলি হামলায় একদিনে গাজায় আরও ৫৮ প্রাণহানি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার ভোর থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত একদিনে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৫৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৮৪ জন। এনিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৩১৭ জনে।

গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইতোমধ্যে এ অভিযানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলি বাহিনীর গত ১৪ মাসব্যাপী অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৩১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৭১৩ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় দুটি পৃথক বিমান হামলায় আল-মাওয়াসিতে সাতজনকে হত্যা করেছে। অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে কর্মীরা। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৫৮ জন নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘ সংস্থার প্রধান গাজায় স্কুল এবং হাসপাতালে ইসরায়েলের এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

অবরুদ্ধ উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, গাজা ত্যাগে ইসরায়েল যে নির্দেশ দিয়েছে তা মান্য করা সম্ভব না। কারণ, শিশুসহ প্রায় ৪০০ জন বেসামরিক মানুষ ভেতরে চিকিৎসাধীন আছে। যাদের অক্সিজেন এবং ইনকিউবেটর প্রয়োজন। এই মূহুর্তে তাদের বের করা সম্ভব না।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগ জানিয়েছে, গাজা-ইসরায়েল সংঘাতকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫০০ জন ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য আহত হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৫০০ জন দু’বার আহত হয়েছে। আহত সৈন্যদের ৩৭ শতাংশ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আঘাতে ভুগছেন, যাদের বেশিরভাগই হাড়ে আঘাত পেয়েছে। এছাড়া, প্রায় ৫ হাজার ২০০ জন মানসিক রোগে ভুগছেন।

গাজায় বর্বর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরায়েলি হামলায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি



সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh