এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে আসছে সুখবর

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ তৈরি করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি খসড়াও তৈরি হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) রবিউল আলম গতকাল মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে বলেন, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সরকার নমনীয়। মন্ত্রণালয় চাইছে, তাদের বদলি প্রক্রিয়া শুরু হোক। এ কারণে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরিও হয়েছে। খসড়া নীতিমালাও ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে।

তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ নিলে নানা জটিলতাও তৈরি হতে পারে। যেমন অনেকে নামি স্কুলে বদলি হয়ে আসতে চাইবে। এমন নানা বিষয় থাকবে। বিষয়গুলো মাথায় রেখে, যাচাই-বাছাই শেষে খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।

খসড়া নীতিমালায় বলা আছে, প্রতিবছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ তারিখের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির আবেদন আহ্বান, গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করবেন। এনটিআরসিএ কর্তৃক শূন্যপদের চাহিদা নিরূপণ করা হবে।

বদলির প্রক্রিয়ার বিষয়ে খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, বদলির সমগ্র প্রক্রিয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর অনলাইন আবেদনের জন্য উপযুক্ত আবেদন ফরম এবং সফটওয়্যার তৈরি করবে। মহাপরিচালক পর্যায়ে বদলির আবেদন নিষ্পত্তি হবে। তিনি প্রয়োজনে এই ক্ষমতা অধস্তন দপ্তরে অর্পণ করতে পারবেন।

আবেদন নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে খসড়া নীতিমালা বলা হয়েছে, ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সম্মতিপত্র/অনাপত্তিপত্র লাগবে। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকরা উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের মাধ্যমে আবেদন করবেন। কলেজ পর্যায়ের শিক্ষকরা আঞ্চলিক পরিচালকের মাধ্যমে আবেদন করবেন।

এই আবেদনগুলো মহাপরিচালকের নিকট উপস্থাপনের পূর্বে প্রতিস্তরে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদনের তথ্য, পদ, স্কেল ও এমপিওভুক্তির তথ্যাদি যাচাই করে এনটিআরসিএ এর মেধাক্রমের ভিত্তিতে সুপারিশ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করতে হবে।

বদলির সাধারণ শর্তাবলীর মধ্যে খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে এনটিআরসিএ এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের চাকরি দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করা যাবে। সরকার কর্তৃক শাস্তিমূলক/জনস্বার্থে বিবেচনায় বদলি ব্যতীত চাকরি জীবনে কেবল একবার বদলি হওয়ার সুযোগ থাকবে। পারস্পরিক বদলির আবেদনে উভয়ের সম্মতিপত্র থাকলে বিবেচনা করা হবে। বদলির কারণে কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শূন্যতা সৃষ্টি করা যাবে না। কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পদের ৫০ ভাগ শূন্য থাকলে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে কাউকে বদলির আবেদন বিবেচনা করা হবে না। একই পদে একাধিক ব্যক্তি আগ্রহী হলে এনটিআরসিএ এর মেধাক্রম ভিত্তিতে আবেদনটি বিবেচনা করা হবে।

শিক্ষা বিস্তারে প্রথম পদক্ষেপটি ছিল পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষার প্রচলন। সেই সরকার প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে আইন প্রণয়ন করে। সে সময়ে অনেক নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্য পর্যায়ে শিক্ষা বিস্তারের বেসরকারি উদ্যোগটি সরকারের স্বীকৃতি পেয়েছিল।

স্বাধীনতা-পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকার সারা দেশে ৪ হাজার সরকারি প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। প্রতি স্কুলে চার জন করে সরকারি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে সরকার বেসরকারি সব মাধ্যমিক, নিম্নমাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতনের প্রথমে শতকরা ৮০ ভাগ পরবর্তী সময়ে শতভাগ ব্যয়ভার গ্রহণ করল। এই পদক্ষেপটিই এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) নামে অভিহিত হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ১৮ হাজারের বেশি স্কুল, ৩ হাজার ৩০০ কলেজ, ৯ হাজার ২০০ মাদ্রাসা, ২০৯টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //