ব্রিটনি স্পিয়ার্সকে সংগীত অনুরাগী বা বোদ্ধাদের অনেকেই পপ আইকন হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। এছাড়াও তাকে বলা হয় নব্বই দশকের শেষের দিকে বিপর্যস্ত পপসংগীতকে পুনরুজ্জীবিতকারী।
তার ক্যারিয়ারের দিকে চোখ রাখলে বোঝা যায় একজীবনে তার সঙ্গে সাফল্য ও জনপ্রিয়তার রয়েছে ভীষণ ভাব। তারই ফলে সবাইকে মাতিয়ে তিনি পপসংগীতে রাজত্ব করে গিয়েছেন টানা দুই দশক। তিনি আর কেউ নন। তিনি ব্রিটনি স্পিয়ার্স।
মাত্র তিন বছর বয়সে তিনি নাচ, গান ও আবৃত্তির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তবে সেসব ছিল ক্ষুদ্র পরিসরে। বিশাল পরিসরে সংস্কৃতি অঙ্গনে ব্রিটনির উত্থান ঘটে মাত্র ১১ বছর বয়সে ডিজনি চ্যানেলের দ্য অল নিউ মিকি মাউস ক্লাবের মাধ্যমে। পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা ও খ্যাতির ছোঁয়া পেতেও একদমই সময় লাগেনি ব্রিটনির।
১৯৯৯ সালে জিভে রেকর্ডস থেকে ব্রিটনি নিয়ে আসেন তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘বেবি ওয়ান মোর টাইম’। এটম বোমা লিটল বয় যেমন এক পলকে গ্রাস করেছিল হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহর দুটিকে, এই অ্যালবামটিও যেন ব্রিটনির ক্যারিয়ারের জন্য ঠিক তেমনই ছিল। মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে গ্রাস করে নিয়েছিল পৃথিবীর সব সংগীত অনুরাগীকে। বেবি ওয়ান মোর টাইমের এই আন্তর্জাতিক সাফল্য যেন বলে দিচ্ছিল বিশ্ব পপসংগীত অঙ্গনে এক নতুন রানীর আগমন ঘটছে, যার নাম ব্রিটনি স্পিয়ার্স। বেবি ওয়ান মোর টাইম এই সাফল্য তার ঝুলিতে বেস্ট নিউ আর্টিস্ট, ফিমেল আর্টিস্ট অব দ্য ইয়ারসহ চারটি পুরস্কার এনে দেয়।
এই অ্যালবামটির রেশ কাটতে না কাটতেই ব্রিটনি নিয়ে আসেন আরও একটি অ্যালবাম ‘ওপস্!... আই ডিড ইট এগেইন’। এই অ্যালবামটির আধিপত্যও ছিল অবিকল ‘বেবি ওয়ান মোর টাইমের মতোই অপ্রতিরোধ্য। শ্রোতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল অ্যালবাম দুটি সংগ্রহ করতে। মুড়ির মতো বিক্রি হচ্ছিল অ্যালবাম দুটি। ফলশ্রুতিতে অ্যালবাম দুটি একজন টিনেজ গায়কের সর্বোচ্চ বিক্রীত অ্যালবামের রেকর্ড অর্জন করে।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। সংগীতের ভুবনে সাফল্যের মুকুট পরে হেঁটে গিয়েছেন তিনি রানীর মতো। নিজে ভেঙে আবার নতুন আঙ্গিকে শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন ‘আই অ্যাম স্লেভ ফর ইউ’ এর মতো অসংখ্য মন মাতানো গান এবং ব্রিটনি ইন দ্য জোন, ব্ল্যাক আউট, সার্কাস, ব্রিটনি জিন প্রভৃতি মনমাতানো শ্রোতাপ্রিয় অ্যালবাম। এই সকল অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান ও অ্যালবাম তাকে যেমন দিয়েছে অগণিত ভক্ত শ্রোতাদের ভালোবাসা তেমনি এনে দিয়েছে প্রিন্সেস অব পপ খেতাবসহ অসংখ্য পুরস্কার।
বিশ্বখ্যাত এই গায়িকা তার ক্যারিয়ারে জিতেছেন একটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড, ছয় ছয়টি এমটিভি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, বিলবোর্ড মিলেনিয়াম অ্যাওয়ার্ড, দশ দশটি বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, আজীবন সম্মাননাসহ অসংখ্য পুরস্কার।
অভিনেত্রী হিসেবেও কম যাননি ব্রিটনি। ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রসরোডস চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি এবং এখানেও সাফল্যের ছোঁয়া পান। মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই সিনেমাটি ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh