বরাবরই শ্রোতাদের কাছে সিনেমার গানের আবেদন অন্যরকম। গানের কল্যাণেই অনেক সিনেমা ব্যবসা সফল হয়। সর্বশেষ শাকিব খানের ‘তুফান’ সিনেমার দিকে তাকালে সেটি আরও স্পস্ট হয়ে ওঠে। এ সিনেমার ‘দুষ্টু কোকিল’ ও ‘লাগে উরাধুরা’ গান দুটি শ্রোতাদের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলে। এর আগে ‘প্রিয়তমা’, ‘সুড়ঙ্গ’, ও ‘প্রহেলিকা’ সিনেমার গানগুলোও শ্রোতাদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়।
বাংলা সিনেমার শুরু থেকেই এর গান শ্রোতাদের মুগ্ধ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় নব্বই দশকের সিনেমার গানে পাওয়া যায় কনকচাঁপা, বেবী নাজনীন, রিজিয়া পারভীন, ডলি সায়ন্তনী, শাকিলা জাফর, আলম আরা মিনু, রুক্সিসহ আরও কয়েকজন জনপ্রিয় শিল্পীকে। পুরুষ শিল্পীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে প্লেব্যাকে তারা নিজের জায়গা শক্ত করেন। এখনো শ্রোতাদের মুখে মুখে তাদের গান শোনা যায়।
টেলিভিশন কিংবা স্টেজে নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা তাদের গানেই শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন। তবে গেল কয়েক বছর ধরে নব্বইয়ের এ শিল্পীদের অনেকেই এখন আর প্লেব্যাকে নেই। সিনেমার গানের বাইরে নতুন গান প্রকাশ থেকেও দূরে আছেন তারা। অডিও কিংবা সিনেমার কোথাও তাদের আগের মতো পাওয়া যায় না। আবার কেউ কেউ দীর্ঘ সময় ধরে দেশের বাইরেও বাস করছেন। মাঝেমধ্যে দেশে ফিরলেও গান করছেন না। ফলে নতুন প্রজন্মের গীতিকার-সুরকারদের সঙ্গেও তাদের বেশ দূরত্ব বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
বিভিন্ন সময় সোশ্যাল মিডয়াসহ নানা মাধ্যমে প্রশ্ন ওঠে জনপ্রিয় এ শিল্পীরা গানে নেই কেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয় কনকচাঁপা। প্রায় সময় নতুন নতুন ভিডিও তিনি পোস্ট করেন। কিন্তু সোশ্যাল মাধ্যমে তাকে দেখা গেলেও নতুন কোনো গানে দীর্ঘদিন ধরে নেই তিনি। অথচ একটা সময় প্রায় প্রতিটি সিনেমার গানেই তাকে পাওয়া যেত। একই রকম সিনেমার গানে নেই বেবী নাজনীন, রিজিয়া পারভীন, ডলি সায়ন্তনীর মতো শিল্পীও।
এ প্রসঙ্গে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘আমরা যারা সিনেমার গান নিয়ে নিয়মিত ছিলাম তারা কেউ এখন আর আগের মতো নেই এটি সত্যি। এর কারণ হলো-আমাদের সিনেমা একটা সময় নির্মাণ কমে যায়। একই সঙ্গে ভালো গানও তেমন হতো না। বিশেষ করে আমি যে ধরনের গান করি সিনেমার পাশাপাশি তেমন গানের সংখ্যাও কমতে থাকে। একই সঙ্গে আমাদের অনেক নির্মাতা দেশের বাইরের শিল্পীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। যার ফলে আমাদের শিল্পীদের গানের সংখ্যা কমতে থাকে। তারা কী কারণে বা কেন দেশের বাইরের শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা শুরু করেন সেটি আমার জানা নেই। এর মধ্যে একটা জেনারেশন গ্যাপ হয়ে পড়েছে। নতুন প্রজেন্মর সিনেমার অনেক সংগীতপরিচালক আমাদের সঙ্গে কাজ করতেও সংকোচ বোধ করে বলে জানি। আমি মনে করি আমাদের সিনিয়র শিল্পীদের দিয়েও এখনো ভালো গান করা সম্ভব।’
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ডলি সায়ন্তনী সিনেমা সিনেমার গান সংগীত বেবি নাজনিন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh