জলবায়ু পরিবর্তন: প্যারিস চুক্তি ত্যাগ করছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ত্যাগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে তিনি নির্বাচনে হারলে সেই সিদ্ধান্ত বদলে যেতে পারে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে মানুষের হাত রয়েছে, এমন বিজ্ঞানভিত্তিক বাস্তবতা মানতে মোটেই রাজি নন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় এসেই তাই কার্বন নির্গমন কমানোর সব উদ্যোগ থেকে সরে আসছিলেন তিনি। 

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে আসার অঙ্গীকার করেছিলেন ট্রাম্প। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই প্রক্রিয়া শুরু হলো। ফলে এক বছর পর বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে প্যারিস চুক্তি ত্যাগ করতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তখন সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনকারী দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র লাগামহীনভাবে জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার করতে পারবে। 

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের মহাসচিবের দপ্তরে এই মর্মে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

এমন সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি সেই ‘আমেরিকা ফার্স্ট' নীতি। দেশের শিল্পক্ষেত্রকে লাল ফিতের ফাঁসে জড়িয়ে না ফেলে ‘মুক্ত' পরিবেশে অবাধে কার্বন নির্গমন করতে দিতে চায় ওয়াশিংটন। প্যারিস চুক্তির আওতায় চীনের মতো দেশ এ ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা ভোগ করছে বলেও ট্রাম্প অভিযোগ করেন। 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক টুইট বার্তায় তাঁর সরকারের এই সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন। তাঁর মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানো সত্ত্বেও কার্বন নির্গমন যথেষ্ট কমিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হতাশা প্রকাশ করেছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ চীনে রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করছেন। সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে আলোচনার সময় জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতার গুরুত্ব আরো বেড়ে যাবে বলে ফ্রান্স মনে করছে। 

ট্রাম্প প্রশাসন প্যারিস চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালেও দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো এই অঙ্গীকার মেনে চলতে চায়। একাধিক রাজ্য ও নগর প্রশাসন কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যে উদ্যোগ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। 

তাছাড়া ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জয়লাভ করলে যুক্তরাষ্ট্র আবার প্যারিস চুক্তির আওতায় ফিরে যেতে পারে। দলের সব সম্ভাব্য প্রার্থীই সেই অঙ্গীকার করেছেন। অর্থাৎ, ওবামা প্রশাসন ২০১৫ সালে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন, ক্ষমতাকেন্দ্রে পালাবদল হলে তা আবার কার্যকর হতে পারে।

প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক বিদায়ের ফলে উদ্ভূত নতুন পরিস্থিতি সম্পর্কে ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনা হবে। চিলির বদলে স্পেন সেই সম্মেলনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সে দেশের পরিবেশ মন্ত্রী টেরেসা রিবেরা এক টুইট বার্তায় লেখেন, অপ্রত্যাশিত না হলেও এই সিদ্ধান্ত প্যারিস চুক্তির জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //