চীনা ব্যাংকে ট্রাম্পের সচল অ্যাকাউন্ট: নিউইয়র্ক টাইমস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, তার চীনা ব্যাংকে একটি সচল অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

দেশটির দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসে গতকাল মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানা গেছে। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কর প্রদানের কাগজপত্র হাতে আসার পরই নিউইয়র্ক টাইমস খবরটি প্রকাশ করে।

ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস ম্যানেজমেন্ট নামের প্রতিষ্ঠানটি ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি নিয়ন্ত্রণ করে এবং ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে করও দিয়েছে।

এদিকে ট্রাম্প ওই অ্যাকাউন্ট থাকার কথা স্বীকার করলেও তার আইনজীবী জানিয়েছেন, সেটি এখন আর ব্যবহার করা হয় না।

ট্রাম্পের এক মুখপাত্রের ভাষ্যমতে, এশিয়ায় হোটেল ব্যবসার সম্ভাবনা যাচাইয়ের উদ্দেশে ওই অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের যেসব প্রতিষ্ঠানের চীনের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন ট্রাম্প। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের চীন সম্পর্কিত নীতির সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তার প্রশাসন বাইডেনের ছেলে হান্টারের সাথে চীনের ব্যবসায়িক লেনদেনের বিষয়গুলোর আলাদাভাবে সমালোচনা করেছিল।

পত্রিকাটিতে এর আগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে আসে যে- ২০১৬ ও ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রে ৭৫০ ডলার কর দেন ট্রাম্প। অন্যদিকে চীনা ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি স্থানীয়ভাবে এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৬১ ডলার কর দিয়েছে।

ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের এক আইনজীবী অ্যালান গার্টেন নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে বলেন, ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে অফিস থাকলেও চীনা ব্যাংকের সাথে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন স্থানীয় কর দেয়ার সুবিধার্থে। ২০১৫ সাল থেকে অফিসটিতে কোনো কাজ হচ্ছে না। কোনো চুক্তি, লেনদেন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সেখানে সম্পন্ন হয়নি।

আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে গলফ কোর্স, ফাইভ স্টার হোটেলের চেইনসহ যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে ও বাইরে বহু ব্যবসায়িক উদ্যোগ রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। চীন ছাড়াও যুক্তরাজ্যে ও আয়ারল্যান্ডে ট্রাম্পের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলেও খবর প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।

আগস্ট মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, চীন থেকে ফ্যাক্টরি সরিয়ে নিতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর সুবিধা দেবেন তিনি। এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান চীনের সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখতে চায় তাদের কাছ থেকে সরকারি কাজ কেড়ে নেয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।

সেসময় এক ভাষণে ১০ মাসের মধ্যে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করার অঙ্গীকার করে ট্রাম্প বলেছিলেন, আমরা চীনের ওপর থেকে নির্ভরতা বন্ধ করবো।

অন্যদিকে তিনি নিজেই কীভাবে চীনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন, তা উঠে এসেছে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে। ২০১২ সালে সাংহাইয়ে অফিস খোলার পর থেকে চীনে ব্যবসা ছড়ানোর প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পায়। তার করের কাগজপত্র থেকে জানা যায় চীনে অন্তত পাঁচটি ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানে অন্তত ১ লাখ ৯২ হাজার ডলার বিনিয়োগ রয়েছে তার।

তবে চীনে তার পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, যেটি টিএইচসি চায়না ডেভেলপমেন্টের সরাসরি মালিকানাধীন বলে খবর প্রকাশ করছে নিউইয়র্ক টাইমস। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //