আসাদের আত্মদান একটি শ্রেণিযুদ্ধ

ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টালে এক-একটা তারিখ আসে। আবার চলেও যায়। কিছু কিছু তারিখ অকস্মাৎ থেমে দাঁড়ায়, ভাবায়। স্মৃতি মন্থন করায়। তারপর কালের পরিক্রমায় নতুন তারিখকে জায়গা দিতে নিজেকে পুরনো করে নেয়। ২০ জানুয়ারি তেমনই এক তেজদীপ্ত গর্বিত তারিখ। এদিন পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব সরকারের পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন আসাদুজ্জামান আসাদ। আসাদের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে অনেক কাব্য রচনা হয়েছে। নিরেট বাস্তবতায় এই ঘটনার ব্যাকফায়ারে দেশজুড়ে যে দাবানল সৃষ্টি হয়েছিল, তার ফলশ্রুতিতে ঘটে গিয়েছিল ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান, আইয়ুব খানের পতন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুসহ অন্য আসামিদের নিঃশর্ত মুক্তিলাভ।

১৯৬৯ সালের জানুয়ারি মাসে দুই ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ ও এনএসএফের একাংশ নিয়ে ‘ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয় এবং ১৪ জানুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেই ১১ দফা সারাদেশে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলে। এই কর্মসূচিকে ব্যাপক প্রচারে নেওয়ার জন্য ১৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ এবং ১৮, ১৯ ও ২০ তারিখে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করা হয়েছিল। ১৮ তারিখ পুলিশ মিছিলে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে, লাঠিচার্জ করে। ১৯ তারিখ মিছিলে গুলি করেছিল পুলিশ। সেদিন আসাদুল হক নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন, যিনি আসাদুজ্জামান আসাদ নন। পরদিন ২০ জানুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে যে মিছিলটি বের হয়েছিল, তার প্রথম সারিতে ছিলেন আসাদুজ্জামান আসাদ। চানখাঁরপুল মোড়ে পুলিশের জিপ থেকে ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হন আসাদ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর রক্তমাখা দেহ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে।

আসাদের মৃত্যুতে সারাদেশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তিনি ছিলেন সচেতন রাজনৈতিক নেতা ও কর্মী। ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন গ্রুপ) অন্যতম নেতা। একইসঙ্গে কৃষক আন্দোলনের সংগঠক (প্রধানত শিবপুর এলাকায়) এবং তৎকালীন গোপন কমিউনিস্ট পার্টির একাংশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। আসাদের মৃত্যুর পর সারাদেশে স্লোগান উঠেছিল- ‘আসাদের মৃত্যু বৃথা যেতে দেবো না।’

ইতিহাসের অন্যতম টুইস্ট এইখানটিতে। আসাদ যে একটি গোপন সশস্ত্র কমিউনিস্ট পার্টিতে কাজ করতেন এবং তার বেশিরভাগ কাজ ছিল কৃষকের মধ্যে- এই সত্যটি খুব সচেতনভাবে গোপন করা হয়। গোঁজামিল দিয়ে বলা হয়- ‘তিনি ভাসানী ন্যাপের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যেতেন।’ মূলত তাঁকে ‘ছাত্রনেতা’ বলা হয়; কিন্তু তাঁর আদর্শিক কাজকে গোপন করা কেন? এখানেই আসে শ্রেণির প্রশ্ন। এ যাবৎকাল যত জন আসাদকে নিয়ে লেখালেখি করেছেন, তাদের বেশিরভাগই আসাদের পরিচয় সীমাবদ্ধ রেখেছেন ‘ছাত্রনেতা’ এবং ১৯৬৯ সালে ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণকারী হিসেবে। তাঁর পরিচয় এই পর্যায় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে পারলে পেছনের সংগ্রামের দিকগুলো চাপা দেওয়া যায়। তাঁর এবং তাঁর দলের অভীষ্ট লক্ষ্যকে মাটিচাপা দিয়ে রাখা যায়। প্রমাণ করা যায়- তিনি ছাত্রনেতা, তাই ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে সরকার-বিরোধী মিছিলের সম্মুখভাগে ছিলেন এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছিলেন, তাই আইয়ুব সরকারের পুলিশ তাঁকে গুলি করেছিল এবং তিনি নিহত হলে ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটেছিল।

কেউ কেউ, বিশেষ করে মস্কোপন্থী বলে পরিচিতরা বলেন- ‘এই অভ্যুত্থান শ্রমিক ও কৃষকের মধ্যেও বিপুলভাবে জাগরণ সৃষ্টি করেছিল। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতাতেই এসেছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।’ কী সরলরৈখিক এক বিশ্লেষণ দিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হায়দার আকবর খান রনো!

১৯৬৮ সালের শেষ দিক থেকেই আইয়ুব-বিরোধী অভ্যুত্থানের প্রস্তুতি পর্ব চলছিল দেশজুড়ে। ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর পল্টনে জনসভা শেষে মওলানা ভাসানী গভর্নর ভবন ঘেরাও করেন। ঘেরাও শেষে তিনি পরদিন হরতালের ডাক দেন। অভূতপূর্বভাবে হরতাল সফল হয়েছিল। জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ চলেছিল। তার পরদিন ৮ ডিসেম্বর আবারও হরতাল। মওলানা ভাসানী এবার হুমকি দিলেন, ‘শেখ মুজিবকে মুক্তি না দিলে বাস্তিল দুর্গের মতো ক্যান্টনমেন্ট ভেঙে মুজিবকে মুক্ত করব।’ একইসঙ্গে তিনি গ্রামাঞ্চলে আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হাট হরতালের ডাক দিয়েছিলেন। ২৯ ডিসেম্বর বিভিন্ন জায়গায় ‘হাট হরতাল’ হয়েছিল। নড়াইলে এবং নরসিংদীর মনোহরদী থানার হাতিরদিয়া বাজারে পুলিশ গুলি করে মানুষ হত্যা করে।

আসাদ হাতিরদিয়া বাজারে হাট হরতাল সফল করতে গিয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছিলেন। মাথা ফেটে গিয়েছিল তাঁর। হাতিরদিয়ায় পুলিশের গুলি এবং কয়েকজনের শহীদ হওয়ার খবরটি দ্রুত পৌঁছানোর জন্য আসাদ আহতাবস্থায় মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে সাইকেলে করে, ট্রেনে করে ঢাকায় যান। বিভিন্ন পত্রিকায় গিয়ে খবর দিয়ে আসেন। কিছু দিন পর যখন আসাদ নিজেই ঢাকার রাস্তায় শহীদ হলেন, তখন দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ নির্মল সেন লিখেছিলেন, ‘সেদিন আসাদ এসেছিল খবর দিতে, আজ এলো খবর হয়ে।’

আসাদের মৃত্যুর পর সারাদেশে স্লোগান উঠেছিল- ‘আসাদের মৃত্যু বৃথা যেতে দেব না।’ না, আসাদের মৃত্যু বৃথা যায়নি। তাৎক্ষণিকভাবে বেশ কয়েকটি প্রাপ্তি হয়েছিল। যেমন ঘটে গিয়েছিল ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান, আইয়ুব খানের পতন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুসহ অন্য আসামিদের নিঃশর্ত মুক্তিলাভ। আসাদকে নিয়ে বিচ্যুতি কেবল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলই করেনি, খোদ আসাদের সহোদর ডা. এ এম নূরুজ্জামান তার বয়ানে এমনই বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

‘শহীদ আসাদ ছিলেন এক অনন্য সংগ্রামী; যার মৃত্যুতে এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়েছিল। লৌহমানব হিসেবে পরিচিত আইয়ুবশাহির নির্মম পতন হয়েছিল। ষাটের দশকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার-অনাচার, জেল-জুলুম, গুলি, হত্যা পূর্ব বাংলার মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের বৈষম্য দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার ছাত্রসমাজ। ছাত্রনেতা আসাদ ছিলেন তাদেরই অগ্রভাগে। আসাদের জন্ম এক শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত পরিবারে, বাবা সুশিক্ষিত মানুষ গড়ার কারিগর, যুক্তফ্রন্টের নেতা, ঋণ সালিশি বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট সমাজসেবক, লেখক, রাজনীতিবিদ। মা নারায়ণগঞ্জের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক, বেগম রোকেয়ার নারী জাগরণ আন্দোলনের অনুসারী। বাবা-মায়ের সেই দামাল ছেলে আসাদ একদিন দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে ইতিহাস রচনা করবেন সেটাই স্বাভাবিক। ১৯৬০ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিক পাস করেন, ’৬২ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে অনার্সে ভর্তি হন। তরুণ আসাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েন। দেশপ্রেমিক বাবা-মায়ের সচেতন সন্তান ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন কলেজে পড়ার সময়ই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ও তাদের অত্যাচার-অবিচার দেখে ব্যাপকভাবে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তিনি ঢাকা হলের নির্বাচিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন) আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ আসাদ প্রগতিশীল রাজনীতি করতেন। মওলানা ভাসানী ছিলেন তাঁর আদর্শ। তাঁরই নির্দেশে ১৯৬৬ সালে অনার্স পরীক্ষা দিয়ে গ্রামে চলে যান কৃষক সমিতি সংগঠন করার জন্য। মওলানা ভাসানী জানতেন তাঁর যোগ্য অনুসারী আসাদ কৃষকদের সংগঠিত করতে পারবেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিবপুর মনোহরদীর হাতিরদিয়া বেলাব রায়পুরা চরসিন্দুর নরসিংদী এলাকায় ব্যাপক কৃষক জাগরণ সৃষ্টি করেন। ’৬৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মওলানা ভাসানী আহূত হাট হরতাল করতে গিয়ে হাতিরদিয়া হাটে পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষ বাঁধে, একপর্যায়ে পুলিশ আসাদকে গুলি করতে উদ্যত হয়। অন্য একজন পুলিশ কনস্টেবল আসাদের মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করে, তাতে আসাদ আহত হন। ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলিতে এক কৃষক নেতা নিহত হন। এ ঘটনা সমগ্র পূর্ব বাংলায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এরপর ’৬৯ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা আন্দোলনের সূচনা করে। ২০ জানুয়ারি ঐতিহাসিক বটতলা থেকে ছাত্রছাত্রীদের একটি মিছিল ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে শহীদ মিনার হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের সামনে পৌঁছালে জনৈক পুলিশ অফিসার ডিএসপি বাহাউদ্দিন জিপ থেকে নেমে আসাদের বুক লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়েন। সরকার সন্ধ্যায় অনির্ধারিত জরুরি আইন ঘোষণা করে। পরদিন পল্টন ময়দানে লাখো লোকের উপস্থিতিতে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ২১ ও ২২ জানুয়ারি শোক ঘোষণা করা হয়। ২৩ তারিখ প্রতিবাদ সভা ও ২৪ তারিখ সারাদেশে হরতাল আহ্বান করা হয়। কর্মসূচি শেষে দিনটি স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। ফলে স্বৈরাচার আইয়ুবশাহির একনায়কত্বের পতন ঘটে এবং তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়। এবং আমরা লাভ করি স্বাধীন বাংলাদেশ।’ (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২০ জানুয়ারি ২০১৯)

এখানে আসাদের আপন ছোট ভাইও সত্য গোপন করে গেলেন! এতে অবশ্য আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। আমাদের দেশে সশস্ত্র বিপ্লবী রাজনীতির কথা শুনলেই শাসকদের এবং শাসককুলের স্নেহভাজন, মধ্যপন্থী, নরমপন্থী, তথাকথিত গণতন্ত্রপন্থী এবং রঙ-বেরঙের কমিউনিস্ট নামধারীদের উল্টিব্যামো শুরু হয়। তারা নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাস করে সরকারের বিরোধিতা করা মানেই ‘অন্যায়’! যে আসাদ পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে মিছিলে নেমে গুলি খেয়ে মারা যান, সেই আসাদ যেন কৃষক-শ্রমিকের মুক্তির লক্ষ্যে একটি সশস্ত্র বিপ্লবের কাজে জড়াতে পারেন না! কৃষক-শ্রমিককে সংগঠিত করে সশস্ত্র বিপ্লবের ডাক দিতে পারেন না! তাঁকে বা তাঁর মতো সশস্ত্র বিপ্লবে বিশ্বাসীদের সীমানা নির্ধারণ করে দেন তত্ত্ববাগিশরা!

আসাদের মৃত্যুর পর আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলন উত্তুঙ্গ রূপ ধারণ করে। এর মাত্র তিন দিনের মধ্যে গণআন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়, পতন ঘটে আইয়ুব খান সরকারের। এই জনপদে বিভিন্ন সময় অনেক আন্দোলন ও লড়াই-সংগ্রাম হয়েছে, তবে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এক অন্য মাত্রার আশাবাদ জাগিয়েছিল এ দেশের মানুষের মনে। আজ আসাদের মৃত্যুর অর্ধ শতাব্দী পর যদি প্রশ্ন করা হয় তাঁর এই আত্মদান কি সেই স্বপ্ন সফল করেছে? উত্তর হবে অবশ্যই ‘না’।

১৯৬৯ সালে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা বাস্তবায়নের আন্দোলনের নেতা আসাদ শহীদ হন। সেদিন আসাদের সঙ্গে ১১ দফা আন্দোলনে মতিয়া চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন, নূরুল ইসলাম নাহিদসহ যারা অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা অনেকেই একাধিকবার ক্ষমতায় এসেছেন, মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন। জনগণের সামনে নিজেদের বিপ্লবী নেতা হিসেবেও হাজির করেছেন; কিন্তু তারা কেউ কি কটি দফাও বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন? আসাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শোষণ মুক্তির যে গণচেতনা সৃষ্টি হয়, তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ দেশের জনগণের জীবনে মৌলিক পরিবর্তন হয়নি। একটি শ্রেণির শনৈ শনৈ উন্নতি, বিত্ত-বৈভব সমগ্র দেশের চিত্র নয়; বরং জনগণের সম্পদ লুটপাটকারী পরগাছাসদৃশ মানুষের বেশুমার বিত্ত-বৈভবই ব্যাপক গণমানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে বিপথগামী করেছে, ছত্রভঙ্গ করেছে। সেই শোষণমুক্তির আকাঙ্ক্ষা ধারণ করাই হতে পারে শহীদ আসাদের প্রতি সত্যিকার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //