টেকসই পুনরুদ্ধারে দরকার সম্প্রসারণশীল বাজেট

করোনার অভিঘাতে ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম নতুন করে দারিদ্র্য বেড়েছে। নিম্নআয়ের মানুষ, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, বৃদ্ধ, শিশু, নারীসহ সমাজের দুর্বল ও পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রথম ধাক্কাই তারা সামলাতে পারেনি। সঞ্চয়, আয় যা ছিল সব ফুরিয়েছে।

খানাগুলোর দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা অবশিষ্ট নেই। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সবার জন্য না থাকায় অধিকাংশ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। যে কোনো অভিঘাতে অধিকাংশ মানুষের ঝুঁকি প্রশমনের সক্ষমতা অনেক কম বলেই দারিদ্র্য বাড়ছে। 

সরকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। তবে রফতানিমুখী ও বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রণোদনার বরাদ্দকৃত অর্থ বাস্তবায়নের অগ্রগতি দ্রুত হলেও কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত এবং কৃষিখাতে খুবই মন্থর। অথচ এসব খাতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ নিয়োজিত। ফলে অধিকাংশ মানুষ বঞ্চিত থেকে গেছে। বিপরীতে কিছু মানুষের হাতে সম্পদ কেন্দ্রিভূত হচ্ছে। অর্থাৎ অর্থনীতি বৈষম্যমূলক পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছে। 

বৈষম্যমূলক পুনরুদ্ধার এড়াতে প্রয়োজননীতি-কাঠামোর সংস্কার 

কোভিড-১৯ অভিঘাতের মধ্যেও সরকার গতানুগতিক নীতি-কাঠামো থেকে বের হতে পারেনি। সারাবিশ্ব যখন সম্প্রসারণশীল রাজস্ব নীতির আশ্রয় নিচ্ছে, বাংলাদেশে তখন রাজস্ব ব্যয় আরও কমেছে। সরকার মনে করেছে অর্থনীতি খুব দ্রুতই অতিমারির রেশ কাটিয়ে পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাবে; কিন্তু দ্বিতীয় বা তৃতীয় ঢেউয়ের তীব্র আঘাতে অর্থনীতি আরও বেশি সংকুচিত হতে পারে এরকম অনুমান করা হয়নি। ধরে নেওয়া হয়েছিল এক বছরের মধ্যেই অতিমারি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। তাই স্বল্পমেয়াদি নীতিমালাই গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও টেকসই পুনরুদ্ধারে প্রয়োজন ছিল মধ্যমেয়াদি নীতিমালা ও সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা। ঘোষিত প্রণোদনা বিশেষ পরিস্থিতিতে এডহক ভিত্তিতে মুদ্রানীতির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ ঋণভিত্তিক। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ঘাটতির কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খানা ও কারবারগুলোতে অর্থ যায়নি। ফলে তাদের দুর্ভোগ কমেনি এবং অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যের কাতারে চলে যাচ্ছে। 

নীতি-কৌশলের বৈষম্যমূলক প্রভাবের কারণে উল্লম্ব দিকে আর করোনার মতো মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি অভিঘাতে আনুভূমিক দিকে সামাজিক পার্থক্য বাড়ছে। পিছিয়ে পড়া, দুর্বল, ঝুঁকিপ্রবণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী, মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তরা ক্রমেই প্রান্তিক হয়ে পড়ছে। সম্পদ ওপরের দিকের কিছু ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রিভূত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, মহামারির মধ্যেই কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন। এক দশকে ধনকুবেরের সংখ্যা বৃদ্ধির হারে শীর্ষে বাংলাদেশ। বিপরীতক্রমে দারিদ্র্য হার ও বৈষম্য বাড়ছে এবং মেরুকরণ ত্বরান্বিত হচ্ছে।

প্রণোদনার অর্থ সবার হাতে পৌঁছায়নি 

খুব অল্পসংখ্যক খাতই সঠিকভাবে প্রণোদনার অর্থ পেয়েছে। সরকার ঘোষিত মোট ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে মার্চ ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে ৭৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। সর্বমোট বাস্তবায়ন অগ্রগতির হার ৬০ দশমিক ৩ শতাংশ। এ প্রণোদনার ৮০ দশমিক ৭ শতাংশই ঋণভিত্তিক। মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ রাজস্ব প্রণোদনা। রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের পুরোটাই তারা পেয়েছে। অথচ কৃষিকাজ যান্ত্রিকীকরণে বরাদ্দকৃত ৩ হাজার ২২০ কোটি টাকার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র ২৪৩ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকির ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে সরবরাহ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। এসএমই খাতের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম ২ হাজার কোটি টাকা, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা ১৫০টি উপজেলায় সম্প্রসারণে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং ২য় পর্যায়ে লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে নগদ অর্থ বিতরণে ৯৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে মার্চ ২০২১ পর্যন্ত এক টাকাও সরবরাহ করা হয়নি। অর্থাৎ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে প্রণোদনার অর্থ পৌঁছাতে পারেনি। ফলে তারা দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে আটকে যাচ্ছে। 

করোনাকালেও রাজস্ব ব্যয় কমেছে

২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট পরিমাণে বৃদ্ধি পেলেও প্রধান খাতগুলোতে বিগত বাজেটের তুলনায় বরাদ্দ কমেছে। বিগত বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ হ্রাস পেলেও বাজেটে জিডিপির তুলনায় এডিপি বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমেছে ৫ শতাংশ। অন্যদিকে বাজেট বাস্তবায়নের হার অতি নিম্ন। ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র ৪৪ শতাংশ। 

আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের হার আরও খারাপ- মাত্র ২৯ শতাংশ। বাজেট বাস্তবায়নের গড় হার ৮৫ শতাংশ অর্জন করতে হলে সরকারকে অর্থবছরের শেষ দুই মাসে প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হবে, যা অসম্ভব। বোঝাই যাচ্ছে বাজেটের অর্থ যথাযথ ব্যবহার করা যায়নি। 

অত্যধিক তারল্য থাকলেও ঋণ প্রবাহ বাড়েনি 

অধিক তারল্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ প্রবাহ বাড়ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ ঘোষণা করলেও অর্জন হয়েছে মাত্রা ৮ শতাংশ। বড় প্রতিষ্ঠান পেলেও নানা বাধার কারণে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে অর্থ থাকা সত্ত্বেও নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ কমেছে। অন্যদিকে রাজস্ব ব্যয়ও কমেছে। এ কারণে অর্থনীতির সংকোচন থেকে আশানুরূপ উত্তরণ হচ্ছে না। 

স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তিগত খরচ বাড়ছেই 

বিগত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য খাতের মাত্র ২৭ শতাংশ খরচ আসে বাজেট থেকে আর বাকি টাকা আসে জনগণের পকেট থেকে। ২০১৬ সালের খানা জরিপ অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবায় উচ্চমাত্রার ব্যক্তিগত খরচ ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ মানুষকে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে এবং ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দেয়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে একজন কোভিড রোগীর পেছনে গড়ে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ১১৯ টাকা। বেসরকারি হাসপাতালে প্রতি রোগীর পেছনে খরচ হয় ২ লাখ ২২ হাজার ৭৪ টাকা। সরকারি হাসপাতালের প্রায় দ্বিগুণ বেশি। স্বাস্থ্যখাতে অত্যধিক ব্যক্তিগত খরচের কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হচ্ছে। 

শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ায় উৎপাদনশীলতা হ্রাস 

দীর্ঘ ছুটির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করলেও বাংলাদেশের শুধু ১৩ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটের আওতায় আছে। ইউনিসেফের মতে ৩ কোটি ৬৮ লক্ষ্য শিক্ষার্থী সকল অনলাইন ক্লাস ও নির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনের প্রায় অর্ধেক বছর হারাচ্ছে। এ পরিমাণ শিক্ষা জীবন অপচয়ের কারণে দীর্ঘমেয়াদে একজন শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে প্রায় ১৩ শতাংশ। দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ক্ষতি হবে জিডিপির প্রায় ৩৩ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে ১১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হবে। আর পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হবে ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

কাঠামোগত রূপান্তর থমকে আছে 

এখনো কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় উৎস অনানুষ্ঠানিক খাত। দেশের ৮০ ভাগ শ্রমিকই কাজ করে অনানুষ্ঠানিক খাতে। অল্প কিছু শিল্পের ওপর অতি নির্ভরশীলতার কারণে কোভিডের অভিঘাত অসমভাবে পড়েছে। রফতানি পণ্যের ৮৮ শতাংশই পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্য। আবার পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্যেও বৈচিত্র্যের ঘাটতি রয়েছে। তৈরি পোশাক রফতানির ৬৮ শতাংশ মাত্র ১০ রকম পোশাকে সীমাবদ্ধ। রফতানি বাজার পশ্চিম ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় কেন্দ্রিভূত। রফতানিকারক দেশগুলোর অর্থনীতিতে যে কোনো অভিঘাত আসলেই ক্রয়াদেশ কমে যায়। করোনা অভিঘাতের প্রথম ধাক্কায় ১১৫০টি কারাখানায় ৩১৮ কোটি ডলার মূল্যের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়। দ্বিতীয় ধাক্কার প্রথম কয়দিনেই ৫০টি বড় কারখানার অর্ডার ৩০ শতাংশ কমেছে। 

প্রয়োজন পূর্ণ জীবনচক্রভিত্তিক সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি 

বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা ভাতা অনেক ক্ষেত্রেই উপযুক্তরা পাচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে যারা পাচ্ছে তারা সামাজিক সুরক্ষা পাওয়ার উপযুক্ত নয়। পূর্ণ জীবনচক্র ভিত্তিক সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে যে কোনো অভিঘাতে খানাগুলোর ঝুঁকি হ্রাসের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাবে। সর্বজনীন পেনশন ভাতা, বেকার ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, শিশু প্রতিপালন ভাতা, আবাসন সুবিধা, আয় সহায়ক ভাতা ও স্বাস্থ্য ভাতা- এ সাতটি কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে। এ জন্য বাংলাদেশের মোট প্রয়োজন জিডিপির ২০ শতাংশ বরাদ্দ।

উন্নয়ন অন্বেষণের হিসাব মতে, ২৫ শতাংশ দরিদ্র পরিবারের শিশুদের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার জন্য প্রয়োজন জিডিপির ১২ দশমিক ৯ শতাংশ বরাদ্দ। সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বয়স্ক ভাতা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন ২ দশমিক ১৮ শতাংশ। দরিদ্র্যদের মাঝে বেকার ভাতার জন্য প্রয়োজন জিডিপির ২ দশমিক ১৪ শতাংশ। প্রতিবন্ধী এবং মাতৃত্ব ভাতার জন্য প্রয়োজন জিডিপির দশমিক ৮৯ ও দশমিক ৩০ শতাংশ বরাদ্দ। ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো জিডিপির ৬ শতাংশেরও বেশি ব্যয় করে সামাজিক সুরক্ষা খাতে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ব্যয় করে ২০ শতাংশের বেশি। অথচ বংলাদেশ ব্যয় করে ২ শতাংশ মাত্র।

আসন্ন বাজেটে যেকোনো ঝুঁকি প্রশমনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি খানায় সরাসরি নগদ অর্থ পৌঁছাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সর্বজনীন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে খানাগুলো দারিদ্র্যের দুষ্টুচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। নীতি-কৌশলে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিয়োজিত খাতগুলোকে অধিক প্রাধান্য দিতে হবে। কুটির, ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে সহায়তা বাড়াতে হবে। রফতানিমুখী শিল্পের উৎপাদনে ও বাণিজ্যে বৈচিত্র্য নিশ্চিতকরণের দিকে নজর দিতে হবে। নতুন বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থান ধরে রাখতে হবে। তবেই মানুষের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত হবে এবং অর্থনীতি একটি সমতাভিত্তিক টেকসই পুনরুদ্ধারের পথে যাবে। 

লেখক : অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //