সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী

করোনা মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারত বিপর্যস্ত হয়েছে, যার অভিঘাত এসে পড়েছে বাংলাদেশেও। চলতি মাসে দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। 

তারা বলছে, দেশে করোনার ভারতীয় বা ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ ঘটছে। ডেল্টা ভেরিয়েন্ট বিস্তারের মূল ক্ষেত্র হয়ে আছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলো। যেখান থেকে এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে। সেদিকে নজর রেখেই সীমান্তবর্তী দুটি জেলা পূর্ণ এবং আটটি জেলায় এলাকাভিত্তিক ‘লকডাউন’ দেওয়া হয়েছে। তবে এ লকডাউন প্রথম থেকেই চলছে ঢিলেঢালা অবস্থায়। সাধারণ মানুষ বিধি-নিষেধ মানছেন না। লকডাউন কার্যকর করার ব্যাপারে প্রশাসনও তেমন সক্রিয় নয়। ফলে বড় ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। 

অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কোভিডের রোগী বাড়তে শুরু করার দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখী হয়। করোনার সংক্রমণ বাড়া মানে অবধারিতভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ বৃদ্ধি পাওয়া। প্রতিবেশী ভারতকে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহ চাপ মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমরা চাই না, বাংলাদেশ এমন চাপে পড়ুক। বিশ্বজুড়ে করোনার যে প্রবণতা তাতে এর সংক্রমণ বন্ধ করা এখন পর্যন্ত অসম্ভব। তবে সংক্রমণের গতিকে যদি ধীর করা যায়, তাহলেও হয়তো বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। এ জন্য জরুরি হচ্ছে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। 

পরিস্থিতি যেভাবে খারাপ হচ্ছে; আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সংক্রমণপ্রবণ সব এলাকায় সর্বাত্মক লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ৭ জুন নাটোরে এক দিনে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ ৬৭ দশমিক ৩ হয়েছে। এ বাস্তবতায় ৯ জুন থেকে নাটোর সদর ও সিংড়া পৌর এলাকায় সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আমরা মনে করি, শুধু ‘লকডাউন’ ঘোষণাই যথেষ্ট নয়, তা কার্যকর করার আইনি পদক্ষেপ জরুরি। লকডাউন সফল করার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো জনগণকে সম্পৃক্ত করা, প্রান্তিক আয়ের মানুষদের সরকার কর্তৃক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। লকডাউন এমনভাবে দিতে হবে, যাতে সেই এলাকা থেকে একজন মানুষও বাইরে না যেতে পারে। পাশাপাশি যারা সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। 

দেশে এখনো বিপুলসংখ্যক মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। সংক্রমণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণার অভাবে অনেক মানুষ সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে না। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা এবং তাদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //