জন্মলগ্নের মর্মবাণী ও বিদ্যমান বাস্তবতা

‘যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরী যমুনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান’- শিরোনামের বিষয়বস্তু নিয়ে ভাবতেই মুক্তিযুদ্ধের সময়ে রচিত অমর কবিতার লাইন দুটি মনে পড়ল। এই বিবেচনায় পঞ্চাশ বছর পার হওয়া আমাদের জাতির জীবনে খুব একটা বেশি সময় নয়।

মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের একটা অংশ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও বৃহত্তম অংশ এখনো জীবন্ত রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। রাষ্ট্র ও সমাজজীবনের সব ক্ষেত্রেই মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম নেতৃত্ব দিচ্ছে। 

বাংলাদেশের জন্মলগ্নকালের বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্র, পরিস্থিতি ও গতিপ্রকৃতির আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। দেশের অবস্থা ও সামাজিক মনস্তত্ত্বেরও পরিবর্তন হয়েছে। তা সত্ত্বেও জন্মলগ্নের মর্মবাণী, যা দিয়ে বিশ্ব দরবারে নবজাত একটি জাতি পরিচিতি পেয়েছিল, তা ভুলে যাওয়া যেমন অবিশ্বাস্য, তেমনি ভুলে থাকাও কঠিন। অন্ধ বিরোধিতা ও বিদ্বেষ কিংবা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার হীন উদ্দেশ্য ছাড়া বোধ করি সকলেই স্বীকার করবেন যে, দেশের ইতিহাসের প্রথম সংবিধানে গৃহীত জাতীয় চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মরিপেক্ষতার ভেতর দিয়েই জাতির জন্মের মর্মবাণী পরিপূর্ণ ও সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

এটা তো অনস্বীকার্য যে, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধরত একটি জাতির প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা প্রাপ্তির জন্য বিশ্ব দরবারে জাতীয় পরিচয় তুলে ধরা একান্তই প্রয়োজন ছিল। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে নজরুল-তাজউদ্দীন সরকার জাতীয় মূলনীতি হিসেবে সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা তুলে ধরেছিলেন; কিন্তু স্বাধীনতার মর্মমূলে যে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা রয়েছে, যা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের ভেতর দিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল, এর প্রতিফলন তাতে ছিল না।

৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গসহ সীমান্তের রাজ্যগুলোর জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে কলকাতা সফরে যান এবং ব্রিগেড গ্রাউন্ডে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বিশাল জনসমাবেশে ভাষণ দেন। ওই ভাষণেই তিনি প্রথম জাতীয় মূলনীতিতে ‘জাতীয়তাবাদ’ শব্দটি যুক্ত করেন। ওই দিনই দুই দেশের দুই প্রধানমন্ত্রী একমত হন যে, বাংলাদেশ থেকে মিত্র ভারতীয় বাহিনী বিদায় নেবে। এই দুটি বিষয়ের মধ্যে একটা যোগসূত্র রয়েছে এবং তা ছিল জাতীয় ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা-মর্যাদার মহান বহিঃপ্রকাশ।

আমাদের জাতির পিতা যে জাতীয় মনস্তত্ত্ব ও ইতিহাস সচেতন এবং তিনি যে দূরদর্শী ছিলেন, এটা হচ্ছে তার প্রমাণ। এটা ছিল বলেই ‘ইসলামের নামে’ হত্যা ও নারীদের বেইজ্জত করার প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রেখেই রেসকোর্সের ময়দানের ঐতিহাসিক সমাবেশে বলেছিলেন, ‘ইসলামের অবমাননা আমি চাই না। আমি স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিতে চাই যে, আমাদের দেশ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দেশ। এ দেশের কৃষক-শ্রমিক, হিন্দু-মুসলমান সবাই সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে।’

স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনালগ্নে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতাগুলো বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে, এর সবই ছিল জাতীয় চার মূলনীতিকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে নিবেদিত। জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে তিনি বলতেন, ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ না থাকলে আমাদের স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’ ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে বলতেন ‘সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম পালন করবে। কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না।’ আর ‘গণতন্ত্রের পথে সমাজতন্ত্র’ কায়েমের লক্ষ্য ঘোষণা ও নীতি-পদক্ষেপের ভেতর দিয়েই সুস্পষ্ট যে, তিনি ছিলেন জাতির জন্মলগ্নে মর্মবাণী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উৎসর্গীকৃত।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় চার মূলনীতির একটাকে অপরটা থেকে পৃথক করতে চাননি। চারটা একত্রে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর করার প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষের মুক্তি তার নিজস্ব কাজ। তাই ব্যাপক ও শক্ত মত এবং জোরালো দাবি থাকা সত্ত্বেও ‘জাতীয় বিপ্লবী সরকার’ বা ‘ জাতীয় সরকার’ গঠনের দিকে যাননি। জাতির ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন। দেশি-বিদেশি পরাজিত শক্তি ও কায়েমি স্বার্থবাদীরা ‘রাতের বাহিনী’ ও চাটার দল’ এর ওপর ভর করে। এসব গণশত্রুরা গণতন্ত্রের অপব্যবহার করেই গণতন্ত্রকে অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রমাণ করে। একদল বাকশাল গঠনের সময় বঙ্গবন্ধু তাই প্রচণ্ড দুঃখ করে বলেছিলেন , ‘আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।’

সবই এখন ইতিহাস। দেশের বর্তমান অবস্থার দিকে তাকালে এটা বোধকরি কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে, দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নতি হয়েছে। পদ্মা সেতু , রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল , কর্ণফুলী ট্যানেল প্রভৃতি সব মেগা প্রজেক্ট এখন সম্পন্ন হওয়ার পথে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মূল্য বাড়লেও এবং এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া থাকলেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় করোনা দুর্যোগের মধ্যেও কেউ না খেয়ে মরেনি। বাজারে সব পাওয়া যাচ্ছে, শেষও হচ্ছে। বৈষম্য বাড়লেও মাথাপিছু আয় বাড়ছে, অতি দরিদ্রের হার কমছে। আমাদের মতো দেশগুলো এবং এমনকি উন্নত দেশগুলোর চেয়েও আমরা আগে বিনামূল্যে করোনার টিকা পেয়েছি। বিদ্যুৎ ঘাটতি দেশে নেই।

‘ভিক্ষুকের দেশ’ , ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ কিংবা ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’, ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ প্রভৃতি সব শব্দ এখন বাংলাদেশের কাছে ইতিহাস হয়ে গেছে। পূর্ব বাংলাকে শোষণ করে পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন! বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে লজ্জা দিচ্ছে। ভারতের চাইতেও কতক ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে গেছি। এতে আত্মতৃপ্তির কেনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশের জন্ম যেমন জাতির অর্থনৈতিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির দুয়ার উন্মোচন নিশ্চিত করার জন্য হয়েছিল, তেমনি রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অগ্রগতি ও বিকাশকে অবারিত করাও ছিল জন্মলগ্নে জাতির স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা।

বঙ্গবন্ধু ওই স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের মুখোমুখি করেছিলেন জাতিকে; কিন্তু শূন্য তহবিল ও খাদ্য ঘাটতি তথা অর্থনীতির বাস্তবতা এবং গণশত্রুদের তৎপরতা সেই পথে বাধা সৃষ্টি করে। তিনি বলেছিলেন, ‘লোকে জানবে একটা লোক একটা টিনের চোঙ্গা হাতে নিয়ে রাজনীতিতে এসেছিল এবং সারাজীবন সেই টিনের চোঙায় বাঙালি বাঙালি বলে চিৎকার করতে করতেই মারা গেল।’ কিংবা ‘দেশ থেকে সর্বপ্রকার অন্যায় অবিচার ও শোষণ উচ্ছেদ করার জন্য দরকার হলে আমি আমার জীবন উৎসর্গ করব।’ অদৃষ্টের পরিহাস, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির অবিসংবাদিত নেতার কথাই জাতির জীবনে সত্যে পরিণত হলো।

কিন্তু এখন! নানা টানাপড়েন, বাধা-বিঘ্ন, ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মধ্যেও অর্থনীতিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি ঠিকই। কিন্তু রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পর্বতপ্রমাণ বাধায় আটকে যাচ্ছি বলেই মনে হচ্ছে। বৈষয়িক উন্নতি হচ্ছে কিন্তু আত্মিক-নৈতিক ক্ষেত্রে যেন পিছিয়ে পড়ছি। জাতীয় চার মূলনীতিকে বঙ্গবন্ধু বাস্তবায়নের এজেন্ডার অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু এখন জন্মলগ্নের মর্মবাণী বহু দূরের বাদ্য বলে মনে হছে। এ দুয়ের সমান তালে এগিয়ে যাওয়াটাই তো ছিল জাতির জন্মলগ্নের মর্মবাণী। মৃত্যুর কিছুদিন আগে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন , ‘আমাদের ভুললে চলবে না, পাপ আর পুণ্য পাশাপাশি চলতে পারে না।’ বঙ্গবন্ধু পাপকে পুণ্যের অধীনস্ত করার জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। 

 ‘দুর্নীতিবাজ কে?’, এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছিলেন, ‘যে কর ফাঁকি দেয় সে দুর্নীতিবাজ। যে ঘুষ খায় সে দুর্নীতিবাজ। যে স্মাগলিং করে সে দুর্নীতিবাজ। যারা কর্তব্য পালন করে না তারা দুর্নীতিবাজ। যারা বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ করে তারা দুর্নীতিবাজ। যারা বিদেশের কছে দেশকে বিক্রি করে তারা দুর্নীতিবাজ।’ প্রশ্ন হলো স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর পাপ ও পুণ্যের অবস্থান কি! দুর্নীতির! জাতীয় চার মূলনীতির!

 রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন কথাও রয়েছে যে, জন্মলগ্নের মর্মবাণী জাতীয় চার মূলনীতি এখন বাসি হয়ে গেছে। কথাটা সঠিক নয়। তবে এটা ঠিক, বিশ্ব ও দেশের পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সেই সঙ্গে যুগের আহ্বানও, কর্মসূচির; কিন্তু জাতীয় চার মূলনীতির মূল নির্যাসের কোনো মৌলিক পরিবর্তন হয়নি। বরং অর্থনীতির অগ্রগতির কারণে জাতীয় জীবনে তা বাস্তবায়নের সুযোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি দায়িত্ব-কর্তব্যও। 

 রাষ্ট্র ও সমাজজীবনে সুবর্ণজয়ন্তী সমাপ্তি উৎসব ও বিজয় দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে কি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক বাধাগুলোকে অতিক্রমের জন্য, আত্মিক-নৈতিক মানোন্নয়নের পথ অবারিত করার জন্য উল্লিখিত প্রশ্নগুলোর মূল্যায়ন অতি প্রয়োজন নয়! বঙ্গবন্ধু নবজাত দেশে পা রেখেই বলেছিলেন যে, ‘কবিগুরু দেখে যাও তোমার বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে।’ আর নিহত হওয়ার কিছু দিন আগে বলেছিলেন, ‘আত্মসমালোচনা করুন। আত্মশুদ্ধি করুন। তাহলেই হবেন মানুষ।’ স্বাধীনতার পর থেকে জাতির আত্মিক ও নৈতিক অধঃপতন বঙ্গবন্ধু তাঁর সহজাত প্রতিভা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রত্যক্ষ করেছিলেন, ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। এখন আমরা কি প্রত্যক্ষ করছি! ব্যবস্থা নিচ্ছি!

জাতীয় শত্রুরা সামরিক ফরমান দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে দিতে চেয়েছিল। পারেনি। কোনোদিন পারাও যাবে না। পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-কর্ণফুলী যতদিন বয়ে চলবে, বঙ্গবন্ধুর মত-পথ-বাণী ততই আরও নিজ মহিমায় সমুজ্জল হবে। স্বাধীন দেশের জন্মলগ্নের মর্মবাণী ততই উজ্জ্বলতর বতিঘর হয়ে জাতিকে পথ দেখাবে। বঙ্গবন্ধুর ছবি আজ সর্বত্রই শোভা পাচ্ছে; কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাণীর কি হাল হচ্ছে! চলমান ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচন কিংবা দুর্গাপূজোর সময়ের দিকে তাকালেই দেখা যাবে, জন্মলগ্নের মর্মবাণীর এখন কি হাল! 

বঙ্গবন্ধুর ছবি আর বাণী তো অবিভাজ্য। ঠিক তেমনি স্বাধীন স্বদেশ ও জন্মলগ্নের পরিচয়কেও পৃথক করার উপায় নেই। তাতে শিকড়ের বাঁধন থেকে জাতি আলগা হবে। আগাছার বাড়বাড়ন্ত হবে। পুণ্যকে পাপ অধীনস্ত করতে থাকলে জাতির অর্থনৈতিক অগ্রগতিও বাধাগ্রস্ত হবে। এক সময় থমকে দাঁড়ানোর আশঙ্কা বাড়বে। এ জন্য প্রয়োজন বঙ্গবন্ধু কথিত আত্মসমালোচনা-আত্মশুদ্ধি। জাতীয়ভাবে এ দুই বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা তো কোথাও পরিদৃষ্ট হচ্ছে না।

২৫ নভেম্বর এক খবরে দেখলাম, বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘কোর্ট আমি যে জায়গায় দেখেছি, সেই জায়গায় নেই।.. হাইকোর্ট বিভাগ এখন আর সাংবিধানিক কোর্ট নাই, এটি ক্রিমিনাল কোর্টে কনভার্ট হয়ে গেছে। এখন আপিল বিভাগকেও কনভার্ট করে ফেলুন।’ বিদায় নেওয়ার আগে তিনি একথা বললেন আর ১৯৯৫ সালে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিয়ে প্রয়াত মুহম্মদ হাবিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘দেশের লোকের টাকায় কোর্ট চলছে দেশের মানুষের অধিকার আছে কোর্ট কেমন চলছে জানার।.. বিচারকের রায়ের সমালোচনা করার অধিকার বাক-স্বাধীনতার এক অংশ বলে আমি মনে করি।’

১৯৯৫ থেকে ২০২১। সুদীর্ঘ ২৫ বছরেরও বেশি। পাঠকদের বলি, দায়িত্ব গ্রহণের সময় আর দায়িত্ব গ্রহণের শেষে প্রধান দুই বিচারপতির কথাগুলো ও সময় পাশাপাশি রাখুন। দেখবেন দেশের মানুষের প্রধান আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগে আত্মিক, ন্যায় ও নৈতিক ধস কতটুকু বেড়েছে! বাঙালি মানুষ কতটুকু হয়েছে! নতুন বছর সামনে রেখে বিজয়ের মাসে শুরু করা হোক না বাঙালির মানুষ হওয়ার সংগ্রাম! তাতেই পাওয়া যাবে শিকড়ের সন্ধান। জয় বাংলা।


লেখক : কলাম লেখক, রাজনীতিক

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //