বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কোনো আপস নাই

বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কোনো আপস নাই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং আহ্বানে যে আপামর বাঙালি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল সেই বিষয়টিকে যথাযথ তথ্যে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করতে হবে।

সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ, লক্ষ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ এবং যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, যারা জেলজুলুম, নির্যাতন, শোষণ মাথায় নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সেই মহান মুক্তিযুদ্ধকেও যথাযথভাবে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছাতে হবে।

একই সাথে এই মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ এবং আপামর মানুষের সংগ্রামের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ তথা যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি সেই স্বাধীনতার গুরুত্ব তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। 

ফলে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আবর্তে তরুণ প্রজন্মের মন-মননে আত্মত্যাগের মহিমা গ্রথিত হবে। আর এই আত্মত্যাগ ও সচেতনতা দিয়েই তারা দেশের প্রকৃত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।

এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা শুধু নিছক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়, এটি ছিল বাংলাদেশকে প্রতিক্রিয়াশীলদের ষড়যন্ত্রে ভিন্ন আদর্শে পরিচালিত করা। স্বাধীনতার মাসে এসে এই বোধ আমাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হোক যে সোনার বাংলা গড়তে যেমন অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি, তেমনি অপরিহার্য সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও মুক্তি। নতুবা আমরা কেবল চেতনাগতভাবে পিছিয়ে পড়ব।

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মত্যাগকে তখনই প্রকৃত সম্মান দেখানো হবে যখন আমরা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন বাঙালি জাতি, রুচিশীল সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উদারনৈতিক বিশ্বমানবের এক জাতিসত্তা নির্মাণ করতে পারব। আমাদের মেধাবী তরুণদের বর্তমান রাজনীতি বিমুখতা একটি অশনি সংকেত। রাজনীতির সুষ্ঠু চর্চা, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের অনুসরণ, দেশকে সুদৃঢ় রাজনৈতিক ভিত্তি দিতে পারে। আর সেই ভিত্তি নির্মাণের কারিগর হবে আজকের মেধাবী তরুণ সমাজ। 

সুতরাং স্বাধীনতার এই বায়ান্ন বছরে দাঁড়িয়ে যথাযথ দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। একদিকে আত্মত্যাগের মহিমা, অন্যদিকে সামগ্রিক সচেতনতার সমন্বয়ে তরুণ প্রজন্ম হয়ে উঠবে দক্ষ মানবসম্পদ।

আর এই দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবেই সে যে অবদান রাখবে এদেশের জন্য সেই অবদানই এই দেশটিকে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে। সুতরাং বর্তমান বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মকে লক্ষ করে তাদের মন-মননে যথাযথ ইতিহাসকে গ্রথিত করে তাদের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বিজ্ঞানমনস্ক ভাবাদর্শ সংগঠিত করতে হবে। আর এই সব কিছুর সমন্বয়েই এই দেশটি হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।

লেখক: উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Ad

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //