পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বড় কারণ ইটভাটা

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে আমাদের স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস আজ বন্ধ হতে চলেছে। আমাদের পরিবেশ বৈচিত্র্য আমরা নিজেরাই নষ্ট করছি। পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী সকল বিপদজনক উপাদান চাহিদার প্রয়োজনে দিনে দিনে ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছি আমরাই। এর ফলে মানুষ ক্রমশই রোগ ব্যাধিতে জর্জরিত হয়ে পড়ছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য পরিবেশবাদীরা নানা সভা সেমিনার সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করছে, কিন্তু তাতে আমরা কতটা সোচ্চার হচ্ছি- এটাই এখন প্রশ্ন। আমাদের দেশে ইটভাটা পুরোপুরি বাদ দেয়া সম্ভব নয়, তবে সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক পদ্ধতির সফল প্রয়োগের মাধ্যমে এর নিয়ন্ত্রণ করা যাবে অনায়াসে। গ্রামগুলো আজ শ্রীহীন হচ্ছে আমাদেরই কারণে। বন ও মাটি উজাড় করে আজ আমরা ইমারত তৈরিতে ব্যতিব্যস্ত। আমরা কী ভেবেছি এর ফলস্বরূপ আমাদের কি পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে বা হবে? এরকম নানা প্রশ্ন সবসময় বুকে আছড়ে পড়ছে। এ থেকেই ভাবনা পরিবেশ দূষণ রোধে আধুনিক যুগোপযোগী পদ্ধতির ইটভাটা প্রস্তুত।

আবহমানকাল থেকেই মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে বিশাল বিশাল ইমারত এবং বিভিন্ন নান্দনিক শৈল্পিক অবকাঠামো তৈরি করে আসছে। খ্রিস্টপূর্ব ৭,৫০০ বছর পূর্বে সবচেয়ে প্রাচীনতম ইটের সন্ধান পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে আগুনে পোড়ানো ইট তৈরি করা হয়েছিল। আগুনে পোড়ানো ইট ঠান্ডা এবং আর্দ্র আবহাওয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে ও বেশ মজবুত প্রকৃতির হয়ে থাকে। খ্রিস্টপূর্ব চার শতকের নগরী পুন্ড্রবর্ধন বা মহাস্থানগড়ের নির্মাণকাজে পোড়ানো ইট ও কাদামাটির ব্যবহার রয়েছে। ইট জোড়া দেয়ার কাজে চুন এবং চিটাগুড়ের মিশ্রণ প্রযুক্তি ইটের তৈরি স্থাপনাগুলো আজও টিকে আছে। আজকের পৃথিবীতে আবাসন তৈরির মৌলিক উপাদান ইট। মাটিকে ছাঁচে ঢেলে ভিজিয়ে কাচা ইট তৈরি হয়, তারপর রোদে শুকানো হয়। কাচা ইটকে আগুনে পোড়ালে পাকা ইট তৈরি হয়। প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রোদে শুকানো বা আগুনে পোড়ানো ইট ব্যবহার হয়ে আসছে। যদিও ইট পাথরের চাইতে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী তাই এর জনপ্রিয়তাও সর্বাধিক।

সাধারণত বাতাসে অক্সিজেন ব্যতীত অন্যান্য গ্যাস ও ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ু দূষিত হয়। পৃথিবীর সব প্রাণী শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করে। অপরদিকে বৃক্ষরাজি কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ ও অক্সিজেন ত্যাগ করে। পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নির্বিচারে সবুজ বৃক্ষ নিধন করার কারণে বৃক্ষ হ্রাস পাচ্ছে। তাই পরিবেশের সবটুকু কার্বন ডাইঅক্সাইড বৃক্ষরাজি শোষণ করতে পারছে না। ফলে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও শিল্প-কারখানা, ইট ভাটার চিমনি এবং মোটরযান হতে নির্গত- ধোঁয়া, ধোঁয়াশা, বর্জ্য, এগজোস্ট গ্যাস, গ্রীনহাউস গ্যাস ইত্যাদি দ্বারা বায়ু দূষিত হচ্ছে। মানুষের শ্বাস গ্রহণের সময় দূষিত বায়ু দেহের মধ্যে প্রবেশ করে রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে যকৃত, অগ্নাশয় ও বৃক্কে ক্রমান্বয়ে জমা হয়। এর ফলে বমি, মাথাব্যথা, বুক ব্যথা, নাক-মুখ জ্বালা, অ্যাজমা, এলার্জি, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, মানসিক অস্থিরতা, ক্যান্সার ইত্যাদি জটিল রোগের সৃষ্টি হয়।

মানুষের মৃত্যু হারের চেয়ে জন্ম হার অধিক হওয়ায় পৃথিবীতে প্রতিদিনই বাড়ছে জনসংখ্যার পরিমাণ। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ৬০০ কোটি; কিন্তু ২০২৩ সালে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি। মাত্র ২৪ বছরের ব্যবধানে ২০০ কোটি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৯৮০ কোটি অতিক্রম করবে। আর এই বিপুল পরিমাণ মানুষের পর্যাপ্ত বাসস্থান বা আবাসন চাহিদা পূরণের জন্য দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে কৃষি জমির পরিমাণ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনের যাচাই-বাছাই শেষে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস জনশুমারি ও গৃহগণনার চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১২৬৫ জন লোক বাস করে। এই বিপুল সংখ্যক জনগণের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত বাসস্থান আর বাসস্থানের জন্য প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে শত শত হেক্টর কৃষি জমি, নদীর তীর এবং পাহাড়ের মাটি। উজার করা হচ্ছে বন জঙ্গল। ভূমি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন গড়ে ২২৫ হেক্টর ভূমি এবং বছরে ৮২০০০ হেক্টর ভূমি নষ্ট হচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে আবাসন তৈরি ও ইটভাটার জন্য মাটি সংগ্রহ করা। বর্তমান আধুনিক বিশ্বে এই বিশাল বহুতল ভবন নির্মাণে কংক্রিট, অ্যালুমিনিয়াম সিট, প্লাস্টিক, কাঁচ ফাইবার, স্টিল এবং ধাতব বস্তুর ব্যাপক ব্যবহার হলেও বাংলাদেশসহ বহু স্বল্পোন্নত দেশে প্রধানত ব্যবহার হচ্ছে ইট। আর এই ইট তৈরিতে ব্যবহার হয় মাটি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যা নেওয়া হয় কৃষি জমি থেকে।

ইট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, দেশে ইটভাটার সংখ্যা ৭ হাজার ৮৮১টি। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৪৮টি বৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আর ৪ হাজার ৬৩৩টি ইটভাটা পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন অবৈধভাবে পরিচালিত। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া কোনো ইটভাটা চলতে পারে না। সে অর্থে এগুলো অবৈধ স্থাপনা। দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩ অনুযায়ী বসতি এলাকা, পাহাড়, বন ও জলাভূমির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। এমনকি কৃষিজমিতেও কোনো ইটভাটা বৈধ হিসেবে গণ্য হবে না।

ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহৃত হচ্ছে- যা প্রতি বছর বাংলাদেশের ইট ভাটার ৩০% জ্বালানি সরবরাহ করে থাকে। এই কাঠ পোড়ানোর ফলে একদিকে যেমন নষ্ট করা হচ্ছে বন, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে ওইসব বনে বসবাসকারী জীবজন্তুর ভারসাম্য। একটি দেশের সামগ্রিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মোট ভূমির ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার হলেও বাংলাদেশের আছে কেবল ১১ শতাংশেরও কম; যা প্রতিদিনই কমছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা বলছে, এর পেছনেও প্রধান কারণ ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো। ইট তৈরিতে পোড়ানো হয় শত শত একর জমির উর্বর অংশ, বিলীন হচ্ছে গ্রামের ঐতিহ্য। ইট ভাটার মালিকেরা কৃষকদের এককালীন কিছু টাকার বিনিময়ে চাষাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জমির উপরি অংশের মাটি কেটে নিয়ে যায় ইট তৈরির উপাদান হিসেবে। আজকের এই আধুনিক বিশ্বে ইটের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু নিয়ম না মেনে চাষের জমি ক্ষতি করে প্রয়োজনীয় বস্তু তৈরিতে ক্ষতিগ্রস্ত করছে পরিবেশ, মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য, উর্বর মাটি ও বায়ু।

বাংলাদেশে প্রায় ৬,০০০ ইট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ইট তৈরি করে থাকে। অধিকাংশ ইটভাটা কেবল শুষ্ক মৌসুমে সচল থাকে। বর্তমানে অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে অনেক আবাসিক এলাকায়ও ইটভাটা দেখা যায়। শহরে বা বড় মাপের নির্মাণ কাজের কাছাকাছি জায়গায় সাধারণত ইটভাটাগুলির অবস্থান। দেশে গ্রীনহাউজ গ্যাস উৎপাদনের সর্ববৃহৎ উৎস হল ইটভাটা। ‘ইন্সটিটিউট অফ হেলথ এন্ড ইভালুয়েট’ এবং ‘হেলথ ইফেক্ট ইন্সটিটিউট’ বোস্টন এর গবেষণা অনুযায়ী, ক্ষতিকর বস্তুকণা খুব সহজেই আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে ফুসফুসে প্রবেশের কারণে মানব ও প্রাণী মৃত্যু ঘটছে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, কার্বন ডাই-অক্সাইড কণা এবং কার্বন মনোক্সাইড কণা শ্বসনতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করে এবং এটি ফুসফুস ক্যান্সার তৈরির জন্য দায়ী। এছাড়াও কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রাণীর অক্সিজেন গ্রহণে প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এবং কার্বন মনোক্সাইডকে নিরব ঘাতক বলা হয়।

ইটভাটার কারণে আবাদী জমি কমে যাচ্ছে। আবার ইটভাটায় সৃষ্ট তাপের কারণে ভাটার আশেপাশের অঞ্চলে ফসল উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। কৃষকেরা তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম ফসল উৎপাদন করে। ফসলি জমিতে ইটভাটা তৈরি ও জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি দিয়ে ইট তৈরিতে, জমি উৎপাদন ক্ষমতা হারাচ্ছে। ফলে ইট তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ মাটি। সাধারণত মাটির চার থেকে পাঁচ ফুট গভীরতায় পুষ্টির পরিমাণ খুবই অল্প।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জমি যেভাবে তার উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে, সে হিসাবে মাটি পুড়িয়ে ইট বানানো বন্ধ না করলে ২০৪০ সালে দেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ খাদ্য ঘাটতিতে পড়বে। এছাড়াও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী হওয়ায় অসময়ে বন্যা ও আকস্মিক ভারী বৃষ্টি এবং খরার কারণে ফসল নির্ধারিত সময়ে ঘরে তুলার আগেই নষ্ট হয়ে যাবে, নদীর মাছ মরে যাবে। এছাড়াও ইটভাটার কারণে বন্য পশু-পাখিসহ অন্যান্য প্রাণীর সংখ্যাও কমে যাবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও পরিবেশ দূষণ কমাতে সনাতন পদ্ধতিতে ইট উৎপাদন বন্ধ করে আধুনিক প্রযুক্তিতে ইট উৎপাদন জরুরি। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আধুনিক প্রযুক্তিতে ইট উৎপাদন শুরু করেছে। বাংলাদেশও স্বল্পপরিসরে আধুনিক প্রযুক্তিতে ইট উৎপাদন শুরু হয়েছে। ইউএনডিপির সহায়তায় বাংলাদেশে উন্নত প্রযুক্তিতে ইট তৈরি শুরু হয় ২০০৬ সালে।

পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষকে অন্তত একটি বৃক্ষচারা রোপণ ও পরিচর্যা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এমতাবস্থায় পরিবেশ রক্ষার্থে এবং সুন্দর জীবন গঠনে সনাতন পদ্ধতিতে ইট উৎপাদন বন্ধ করে আধুনিক পদ্ধতিতে ইট উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই। ইটভাটা নির্মাণে সরকারের ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০’ এবং ‘ইটভাটা আইন-২০১৩’ যথাযথভাবে মানতে হবে। সময় এসেছে আমাদের উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ইট প্রস্তুত করার। দেশে অবৈধ যে সকল ইটভাটা রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে সরকার আছে, আইন আছে। আইনের প্রয়োগ করে কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সর্বোপরি, দেশে শিল্পায়নের অগ্রগতি বজায় রেখেই বিশ্ববাসীকে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়তে উদ্বুদ্ধ এবং পরিবেশবাদী সংগঠন ও মিডিয়াগুলোকে এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলেই আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে, দেশ এগিয়ে যাবে।

লেখক: ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন, ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //