সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের একটি রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন নতুন দিকে মোড় নিচ্ছে। এত দিন শিক্ষার্থীদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা না দিয়ে সহযোগিতা করেছে সরকার।
কিন্তু ১৪ জুলাই মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নেমে আন্দোলনের পর থেকে ঢাকা জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করা হলে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালেও আক্রমণের শিকার হন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের অসহায় রক্তাক্ত মুখ ভেসে বেড়াচ্ছে। তাদের আর্ত চিৎকার সম্বলিত ভিডিওতে ভরে উঠেছে নিউজফিডগুলো। আমরা শিউরে উঠছি এইসব পরিস্থিতিতে।
কোটা নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার নয়। ২০১৮ সালে আন্দোলনে ছাত্ররা চেয়েছিল কোটা সংস্কার। তারা এমনকি ১৫ শতাংশ কোটা সুবিধা দিতেও রাজি ছিল। কিন্তু সেসময় সংস্কার না করে কোটা বাতিল করেছিল সরকার। বর্তমানে আদালতে কোটা বাতিলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে সরকার। কিন্তু একই দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন, তারা নানাভাবে নাজেহাল হচ্ছে। আমরা মনে করি, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। আমরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তারুণদের শক্তি দেখে এসেছি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে দুটি সফল আন্দোলন হয়েছে, তাতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্র-তরুণেরা। এই শক্তিকে উপেক্ষা করা যাবে না। দমন নয়, অভিভাবক হয়ে তারা কী বলতে চায় শুনুন। কোটাব্যবস্থা চালু ও সম্প্রসারিত করা কিংবা একেবারে বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত অতীতের সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনা করে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিকতা ও এর সংখ্যা নিয়ে দ্রুত আলোচনাপূর্বক সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh