দুদককে আপাদমস্তক ঢেলে সাজাতে হবে

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতিতে শীর্ষ দেশগুলোর একটি। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পাসপোর্ট, বিআরটিএ থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ, এমনকি স্বাস্থ্য খাতও এর বাইরে নয়। যে কোনো ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ পেলে কিংবা স্বপ্রণোদিত হয়েও দুদক অনুসন্ধান, তদন্ত, মামলা এমনকি গ্রেপ্তার করতে পারে। 

কিন্তু দেখা যায়, গণমাধ্যমে অভিযোগ আসার পরই কেবল দুদকের তৎপরতা শুরু হয়। সম্প্রতি সাবেক ২০ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং ২১ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রশ্ন হচ্ছে সাম্প্রতিককালে প্রভাবশালী এই ব্যক্তিদের দুর্নীতি প্রকাশ হওয়ার আগে কেন দুদক সেগুলো ধরতে পারেনি?

আপাতদৃষ্টিতে দুদককে স্বাধীন মনে হলেও কার্যত কোনো সরকারের আমলেই তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। সরকারের সবুজ সংকেত ছাড়া মামলা পরের কথা, কোনো দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানই শুরু করে না দুদক। কোনো খবর গণমাধ্যমে আসার পর অনুসন্ধান শুরু করলেও তা আর এগোয় না। উল্টো দুর্নীতির প্রমাণ থাকার পরও কাউকে কাউকে দায়মুক্ত ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে চুনোপুঁটি অথবা সরকারের প্রতিপক্ষদের ক্ষেত্রে দুদককে অতিতৎপর হয়ে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়। 

এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো দুদকের শীর্ষ ও মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের নিয়োগ হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রতিষ্ঠার ২০ বছরেও এখানে নিজস্ব প্রসিকিউশন বিভাগ হয়নি। নিয়োগ দেওয়া হয় দলীয় আইনজীবীদের। ফলে দলীয় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সংস্থাটির শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যায় না। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে চাইলে দুদককে আপাদমস্তক ঢেলে সাজাতে হবে। নিয়ন্ত্রণ না করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে দুদকের কোনো কর্মকর্তা যাতে ক্ষমতাসীনদের রোষানলে না পড়েন, নিশ্চিত করতে হবে সেটাও।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //