ধীরে ধীরে কমছে বন্যার পানি। কিন্তু সেই সঙ্গে জেগে উঠছে স্মরণাতীতকালের ভয়াবহ বন্যাসৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতিসমূহ। বহু ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, গাছপালা, গবাদিপশু ও শস্য ভেসে গেছে। সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থায় সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় অন্তহীন দুর্ভোগে মানুষ। এর মধ্যে নতুন দুশ্চিন্তা বিধ্বস্ত কাঁচাঘরের বাসিন্দাদের।
বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও আবাসস্থল নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। খাবার নেই, পরনের কাপড় নেই, থাকার জায়গাটুকু পর্যন্ত নেই। ফলে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে এসে ঘরবাড়ির অবস্থা দেখে বহু মানুষ আবারও ফিরে গেছেন। নতুন ঘর তুলবেন কী করে, সেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
তবে এখনো পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ, বসতঘর ও রাস্তাঘাট। অনেক জায়গায় এখনো প্রবল স্রোত ও পানি থেকে গেছে। বেশিরভাগ হাটবাজার পানির নিচে। আর উঁচু জায়গার বাজারগুলোয় শুকনো খাবারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় টান পড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল, ডাল, আলু, তেল, পেঁয়াজ, রসুনসহ প্রায় সব পণ্যে। টাকা দিয়েও মিলছে না জরুরি ওষুধ।
যদিও ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধার তৎপরতাসহ ত্রাণসহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন গোটা দেশের মানুষ। তবে আমাদের আগের অভিজ্ঞতা বলে, এমন পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ একাধিকবার ত্রাণ পেলেও বঞ্চিত হন অনেকে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। সুশৃঙ্খলভাবে স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
দিন যত যাচ্ছে, দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বেড়েই চলেছে। তাই সময় এসেছে এ বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের। এ জন্য পরিবেশ বিধ্বংসী সকল তৎপরতাকে প্রতিহত করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে উন্নত কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাহায্য গ্রহণের মাধ্যমে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করার দৃঢ়প্রত্যয় নিতে হবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh