সংস্কারের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণা করেছেন। তিনি ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে এতদিনের অনিশ্চয়তা অনেকটা কেটে গেছে।

তবে এটা অনেকাংশে নির্ভর করবে সরকার ও রাজনৈতিক দলের অল্প অথবা বিস্তৃত সংস্কারের প্রশ্নে। আমরা মনে করি, যে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য জুলাই আন্দোলনে শত শত মানুষ প্রাণ দিয়েছে, তাদের আত্মত্যাগ ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রয়োজনে প্রযোজ্য সব সংস্কারের পরই নির্বাচন দেওয়া হোক। তাতে কিছুটা সময় বেশি লাগলেও এই প্রশ্নে সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। 

তবে এ সময়ে নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। উচ্চ আদালত বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির বিধান বাতিল করেছেন। যেহেতু নির্বাচন, গণতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের মূল কাঠামো এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করেছে; সেহেতু এটি সংবিধানের একটি মূল কাঠামো।

কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল। কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া যে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না, তার প্রমাণ বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনে আমরা পেয়েছি। একদিকে দেশের জনগণ যেমন তাদের ভোটাধিকার হারিয়েছে, অন্যদিকে আমাদের ওপর চেপে বসেছিল এক দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসন। আদালতের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলুপ্তির বিধান বাতিল হওয়ায় আশা করা যায় ভবিষ্যতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে কেউ আর তা বাতিল করতে পারবে না। এখন প্রয়োজন, একটি টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh