আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে দেশ। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে ছয় মাসের মাথায় এসে হঠাৎ করেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি লক্ষ করা যাচ্ছে। সহিংসতা, চুরি-ডাকাতি, রাজনৈতিক সংঘর্ষ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়ে গেছে, যা জনমনে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। পুলিশের বরাতে ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের অপরাধের তুলনামূলক একটি পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ডাকাতি ঘটেছে ৩৯টি আর ২০২৫ সালে ৭১টি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছিনতাই হয়েছে ১১৪টি আর একই সময়ে ২০২৫ সালে হয়েছে ১৭১টি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে খুনের ঘটনা ছিল ২৩১টি। ২০২৫ সালে যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯৪টি। 

বলা বাহুল্য, বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সহিংস পথ বেছে নিচ্ছে, যা দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করছে। রাজনৈতিক দলগুলোরও দায় কম নয়। চাঁদাবাজি, দখলবাজির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে সাধারণ অপরাধীরা। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেও আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

অন্যদিকে এখন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার। এমনকি বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে যে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’, এখনো এর কোনো ইতিবাচক ফল দেখা যায়নি। পুলিশের পাশাপাশি আরো কয়েকটি বাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত আছে। বিচারিক ক্ষমতা নিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত আছেন। এর পরও কেন এত খুন, ডাকাতি, ছিনতাই ও নারী নিগ্রহের ঘটনা?

বর্তমান পরিস্থিতিতে তাই দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারকেও কার্যকর প্রশাসন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে জনগণের আস্থা ফিরে আসে। অন্যথায় এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দেশের স্থিতিশীলতা দীর্ঘ মেয়াদে হুমকির মুখে পড়বে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh