শিশুদের টেলিভিশন দেখা ঝুঁকিপূর্ণ

টেলিভিশনে আসক্ত শিশুরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে। ছোটবেলার টেলিভিশন দেখার প্রভাব পড়ে শৈশবের খাদ্যাভ্যাসের ওপর। দুই বছর বয়সে প্রচুর টেলিভিশন দেখলে শৈশবে বাজে খাদ্যাভ্যাস এবং পড়াশোনায় অমনোযোগের দিকে ধাবিত করতে পারে বলে একটা গবেষণায় আশঙ্কা করা হচ্ছে। মনট্রিয়ল বিশ্ববিদ্যায়ের স্কুল সাইকো এডুকেশন থেকে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। 

১৯৯৭-৯৮ সালে কুইবেক শহরে জন্ম নেয়া প্রায় দুই হাজার শিশুর ওপর অনুসন্ধান চালানো হয়। মা-বাবা দুই বছর বয়সী শিশুদের টেলিভিশন দেখার প্রতিদিনের অভ্যাসের কথা জানান। আর ১৩ বছর বয়সে তারা নিজেরাই জানায় তাদের টেলিভিশন দেখা ও খাদ্যাভ্যাসের কথা। ‘টেলিভিশন দেখা মানসিক ও শারীরিক বিশ্রামমূলক কাজ। কারণ এতে কোনো ধরনের প্রচেষ্টার প্রয়োজন পড়ে না। 

টেলিভিশনে আসক্ত  শিশুরা পরবর্তীতে প্রচেষ্টাহীন কাজের দিকে বেশি করে ঝুঁকে পড়ে। আর এটা খুবই স্বাভাবিক যে, যদি তারা খুব ছোটবেলায়ই আরামের কাজে বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে বড় হয়ে আর পরিশ্রমের কাজ করতে চাইবে না।

দুই বছর বয়সে টেলিভিশন দেখার অভ্যাস ১ ঘণ্টা বাড়লে ১৩ বছর বয়সে খাদ্যাভ্যাস ৮ শতাংশ খারাপ হয়। সংক্ষেপে বললে, যত বেশি টেলিভিশন দেখবে, খাদ্যাভ্যাস তত বেশি বাজে হবে। 

টেলিভিশনে আসক্ত শিশুরা শৈশবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, হোয়াইট ব্রেড, সফ্ট ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস, স্পোর্টস ড্রিংকস, হালকা নাশতা, ডেজার্ট ইত্যাদি নানা ধরনের জাংক ফুড অন্যদের চেয়ে বেশি খায়। শিশুকালে টেলিভিশন বেশি দেখলে বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের ওজন বাড়ে, পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যায়, স্কুলের দিনগুলোয় সকালের নাশতার পরিমাণ কমে। 

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের টেলিভিশন দেখা ১ ঘণ্টায় সীমিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে। কানাডিয়ান একটা গবেষণায়ও একই রকম ফলাফল দেখা যায়।  দুই বছর বয়সে প্রতিদিন ১ ঘণ্টার কম টেলিভিশন দেখা শিশুদের চেয়ে ১ থেকে ৪ ঘণ্টা টেলিভিশন দেখা শিশুদের পরবর্তী বয়সে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। গবেষণাটি আমাদের জানায়, ‘শিশুকালে পাওয়া অধিক প্রশ্রয় সারা জীবন চলতে থাকে।’