মা যখন শিক্ষক

জন্মের পর সন্তানকে বড় করা যেমন মায়ের দায়িত্ব বা কর্তব্য, তেমনি তাকে লেখাপড়ার হাতেখড়িও দিতে হয় মাকেই। একজন নারী মানে ভালো বউ, গৃহিণী ও অতঃপর একজন মা। 

মায়েদের প্রতিদিনের কাজের মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সন্তানদের পড়াতে বসানো। সন্তান বড় হলে কেবল তাদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, বরং স্কুলের পড়াগুলো ঠিক মতো তৈরি করতে সন্তানকে সাহায্য করা ও তার পড়াশোনার প্রতি সঠিক মনোযোগ স্থাপনে সাহায্য করতে একজন অভিভাবক হিসেবে মায়ের দায়িত্বের কথা বলে শেষ করা যাবে না।

শুধু যে নির্দিষ্ট রুটিনমাফিক আপনারসন্তানকে পড়াতে বসালেই সন্তান ঠিকমতো পড়ালেখা করবে, এমনটা নয়। আপনাকেও এমন কোনো ভালো উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যাতে আপনার সন্তান পড়তে বসতে আগ্রহী হয়ে ওঠে ও তার পড়ার সময়টুকু সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করে। মা কিম্বা অভিভাবকের কর্তব্য, যখনই সময় পাবেন সন্তানদের সাথে কাটাবেন, তাদের পড়াতে বসাবেন। 

শিশুর সাথে কথা বলুন, একসাথে খাবার খান, কল্পবিজ্ঞান ও কমিক্সের বই পড়তে দিন। ছড়ার বই বেশি পড়ান। খেলাধুলা ও ব্যায়ামের দিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনি ওকে বই বন্ধ করতে বলে একটু করে পড়া ধরুন। বারবার পড়া দিন, বুঝিয়ে দিন। গতদিনের পড়ার বিষয়ে মনে করতে বলুন। এছাড়া কীভাবে সন্তানদের পড়াতে হয় জানতে কিছু বিষয়ের ওপর নজর দিন। যেমন- গৃহের কুশিক্ষার পরিবেশ থেকে দূরে রাখুন। ছেলে-মেয়েরা যাতে বাজে আড্ডায় না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করান। ছেলেমেয়েদের হেয়প্রতিপন্ন করবেন না। ভালোবাসা দিয়ে বুঝিয়ে পড়ান। 

শিক্ষকের প্রতি ভীতি ত্যাগ করান। বিদ্যালয়ের পরিবেশকে সুস্থ রাখুন। আপনার সাথে সম্পর্ক মধুর করুন। পরস্পর পরস্পরকে ভালোবাসুন। যে পড়ালেখায় একটু কাঁচা, তাকে পৃথকভাবে আস্তে আস্তে তার শ্রেণির যোগ্য করে গড়ে তুলুন। ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার প্রশংসা করুন। ছেলেমেয়েদের রঙিন ছবিযুক্ত ভালো ভালো বই কিনে দিন। শিক্ষামূলক মজার মজার বই হাতে দিন। তাতে তার স্বতঃস্ফূর্ত মনোযোগ সৃষ্টি হবে। 

ইতিহাস ও ভূগোলে বিশেষ জ্ঞান করাতে কিশোর বয়স্ক ছেলেমেয়েদের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও বিভিন্ন ভৌগোলিক স্থানে নিয়ে যান। অংকের প্রতি বিশেষ মনোযোগী করে তুলুন। ছেলেমেয়েদের শিক্ষায় উন্নতি করতে হলে মাঝে মধ্যে পরীক্ষা নিন। ফেল করেছে বলে সেন্টিমেন্টাল কথা বলবেন না। ছেলেমেয়েকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। কোথায় সমস্যা বের করুন। কঠিন কোনো মানসিক বা শারীরিক সমস্যা থাকলে ডাক্তার দেখান।

ছেলেমেয়ের ভালো কাজের প্রশংসা করুন। সৃজনশীল কিছু করতে উৎসাহিত করুন। ছেলে-মেয়ের সাথে বন্ধু হয়ে যান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //