যত্রতত্র অনার্স-মাস্টার্সের সনদ দেয়া, জনপ্রতিনিধিরাই দায়ী: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদেরই কারণে কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়েছে দীর্ঘদিন একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে অনার্স-মাস্টার্স পড়াবার অবকাঠামো নেই, যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নেই, সেখানেই অনার্স-মাস্টার্স খুলে যত্রতত্র সনদ দেওয়া হচ্ছে, তার জন্য আমরা জনপ্রতিনিধিরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থদশ অধিবেশনে কুড়িগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাসের আগে জনমত যাচাই বাছাই এবং সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী একথা বলেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ৬৬ ভাগ শিক্ষার্থী বেকার থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে যে কলেজগুলো রয়েছে সেখানে প্রায় ২৮ লাখ শিক্ষার্থী। সেখানে যারা জনপ্রতিনিধি, আমাদেরই কারণে কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়েছে দীর্ঘদিন একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে অনার্স-মাস্টার্স পড়াবার অবকাঠামো নেই, যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নেই, সেখানেই অনার্স-মাস্টার্স খুলে যত্রতত্র সনদ দেয়া হয়। তার জন্য আমরা জনপ্রতিনিধিরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী।

তিনি বলেন, সেই একটা খারাপ দিক যেন কাটিয়ে উঠতে পারি সেজন্য একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরো কমিটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ কাজ করছে। যেখানে যেখানে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেকগুলো শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান আছে, অনেকগুলো খুবই ভালো প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলো ছাড়া বাকিগুলোতে সব জায়গায় আর অনার্স, মাস্টার্সের বিষয়টি থাকবে না। সেখানে বিএ, বিএসসি ,বি-কম সেগুলো থাকবে, সেগুলোর সাথে অসংখ্য শর্ট কোর্সেস ডিপ্লোমা সেগুলো করানো হবে। যেন তারা কর্মমুখী কাজে যুক্ত হতে পারেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ একথা একেবারেই সঠিক নয়। শ্রেণি কক্ষ বন্ধ ছিল কিন্তু অনলাইনে পাঠদান পুরোপুরি চলেছে। খুব একটা সেশন জটের সুযোগ এখন আর নাই। শিক্ষার মান শিক্ষকের মান নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের এখান থেকে পাস করে দেশে এবং বিদেশে সর্বক্ষেত্রে যে সাফল্য দেখি তাতে শিক্ষার মান একেবারে তলিয়ে গেছে একথাটি বলবার সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই আন্দোলন হবে এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই আন্দোলন হবে। এই ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলছি না, এই কথাটির মতো হাস্যকর কথা মনে হয় আর কিছুই হতে পারে না।

তিনি বলেন, আন্দোলনের ভয় কে কাকে দেখায় আসলে এটাই বোধগম্য নয়। প্রথমত আওয়ামী লীগ তো সারাজীবন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, উন্নয়ন এনে দিয়েছে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। সেই আওয়ামী লীগকে কারা আন্দোলন দেখাবে? কারা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে? যারা জনসম্পৃক্তাহীন জনবিচ্ছিন্ন জনবিরোধী একটি দল নানা ভাবে দেশের মানুষ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত সারা বিশ্বে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত। তাদের অনুসারীরা শেখ হাসিনা সরকার যে সরকার সারা বিশ্বে মানবিক সরকার একটি উন্নয়নের সরকার একটি জনগণের সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে যারা দেশের জন্য কাজ করছে সর্বস্তরের জনগণ যে সরকারের সঙ্গে আছে সেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে জনবিচ্ছিন্নরা? তাকে আবার ভয় পেতে হবে? এবং সেটার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখব এর থেকে হাস্যকর কথা আর কিছু হতে পারে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //