‘ব্যবসায়ী এমপির সংখ্যা বাড়ায় সংসদের মানের ক্ষতি হচ্ছে’

জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ী এমপিদের (সংসদ সদস্য) সংখ্যাবৃদ্ধির ফলে সংসদের গুণগত মানের ক্ষতিসাধন হচ্ছে। ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আইন প্রণেতাদের বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে বিষয়টি উঠে এসেছে।

আজ শনিবার (২৮ মে) রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সেমিনারে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়। সেমিনারের আয়োজন করে ইনিশিয়েটিভ ফর দ্য প্রমোশন অব লিবারেল ডেমোক্রেসি (আইপিএলডি)।

আইপিএলডির সভাপতি মোহাম্মদ ফজলুল আজিম সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন সাবেক সচিব ও পিএসসির সদস্য এহসান শামীম।

গবেষণাপত্রে বলা হয়, সংসদবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাংলাদেশের সংসদে ব্যবসায়ী সংসদ সদস্যদের  আধিক্য সংসদের গুণগত মানের ক্ষতিসাধন করছে। এছাড়া সংসদ বিষয়ে বইপত্র, তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা এবং একটি ক্ষুদ্র সমীক্ষায় উঠে আসে যে, ব্যবসায়ী সংসদ সদস্যদের এমপি পদ এবং ব্যবসায়িক কাজের মধ্যে সাংঘর্ষিক স্বার্থ বিরাজমান থাকায় তা সংসদের গুণগত মানে প্রভাব ফেলে।

এতে আরো বলা হয়, বর্তমানে সংসদের সার্বিক কার্যক্ষমতার যে ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে, তার অন্য আরও অনেক কারণ আছে। যেমন- হাউজের সময়ের সদ্ব্যবহার, বিল পাস, কোরাম পূরণ, ওয়াক আউট ও বয়কট, আর্টিকেল-৭০ এর প্রতিবন্ধকতা ইত্যাদি। 

গবেষণায় বাংলাদেশ সংসদের বেশ কিছু ভালো দিক উঠে এসেছে। যেমন, সঠিক সময়ে বাজেট পাস, মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোর নিয়মিত সভা করা এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা, সংসদে মধ্যবয়সী সংসদ সদস্যদের প্রাধান্য ইত্যাদি।

গবেষণায় আনা সুপারিশগুলো হলো 

রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের শত্রু নয়, তারা প্রতিদন্দ্বী। সেজন্য তাদের মধ্যে দৃশ্য/অদৃশ্য আলোচনা থাকা আবশ্যক। এতে গণতন্ত্র চর্চা গতিময় হয়। 

মনোনয়ন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হওয়া এবং রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেশি মনোযোগ দেওয়া জরুরি। নির্বাচনের আগে জোট করা পরিহার বাঞ্ছনীয়। এতে নির্বাচন পরবর্তী প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জোট করতে হলে জোট শরীকদের গুরুত্ব বিদ্যমান থাকে। 

আর্টিকেল-৭০ বাতিল না করলেও এর সংশোধন করা হলে হাউজে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সংসদের কার্যক্রম আরও ফলপ্রসূ হবে। 

সর্বোপরি সংসদ বিষয়ে গবেষণা বাড়ানো উচিত এবং সাধারণ জনগণের সচেতনতার জন্য এসব গবেষণার ফল প্রবন্ধ, সেমিনার ও কর্মশালার মাধ্যমে প্রচার গণতন্ত্রের স্বার্থে অত্যন্ত জরুরি।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন-  সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক সচিব ও (রেক্টর বিপিএটিসি) একেএম আউয়াল মজুমদার, সাবেক বিচারক ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্টার ইকতেদার আহমেদ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আখতার হোসেন খান, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল, আরডিএর সাবেক মহাপরিচালক ড. সোলাইমান, নলেজ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর তোফায়েল আহমেদ, বার্ডের সাবেক মহাপরিচালক সালিহা বেগম, আমেরিকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আফতাবুল ইসলাম, প্রবাহ অরোরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিধান চন্দ্র পাল, বাপার আজীবন সদস্য ডালিয়া দাস। এছাড়াও আইপিএলডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. মো. আব্দুল মান্নান ও বেগম তাহমিনা বানু উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //