ইভিএমেই ভোট, অর্থছাড়ের অপেক্ষায় ইসি

ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো: জাহাংগীর আলম। তবে কতটা আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, তা নির্ভর করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড়ের ওপর।

তিনি বলেন, ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন ট্যুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতে এক হাজার ২৬০ কোটি টাকা চেয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড় না করলে ইভিএম মেরামত সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, আগামী জুনের মধ্যেই তিন ধাপে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ইসির কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম এসব তথ্য জানান।

সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ওই কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইভিএম ও পাঁচ সিটির নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

ইসি সচিব জানান, এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে টাকা দেয়ার জন্য আমরা চিঠি পাঠাব। মন্ত্রণালয় যদি অর্থ দিতে সম্মতি জানায়, তখন আমরা সংখ্যা চূড়ান্ত করতে পারব, মোট কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করতে পারব।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আমরা অধিক পরিমাণে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা করছি। ভোটার সংখ্যা একেক জায়গায় একেক রকম। সুতরাং যদি ছোট এলাকায় নেয়া যায়, তাহলে বেশি ইভিএম ব্যবহার হবে। আর বড় এলাকায় হলে সেখানে কম যাবে। সব চূড়ান্ত করে হাতে রিপোর্ট পাওয়ার পর সুস্পষ্টভাবে বলতে পারব।

অপর প্রশ্নের জবাবে জাহাংগীর আলম বলেন, কমিশন সব সময় বলে আসছে, ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের আপ্রাণ চেষ্টা করবে। আমরা ওই জায়গা থেকে সরেনি। কত আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, ওই সংখ্যা নির্ভর করবে ব্যবহারযোগ্য ইভিএম মেশিনের ওপর।

উল্লেখ্য, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সে লক্ষ্যে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার বেশি একটি প্রকল্প নিয়েছিল তারা। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার মধ্যে প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় বিদায়ী নূরুল হুদা কমিশনের ইভিএমই এখন শেষ ভরসা। নূরুল হুদা কমিশন দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনেছিল। তার মধ্যে ৪০ হাজার মেশিন এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। বাকি এক লাখ ১০ হাজার মেশিনও মেরামত করতে হবে।

তিন ধাপে পাঁচ সিটি নির্বাচন:

রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে তিন ধাপে ভোটগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো: জাহাংগীর আলম।

তিনি বলেন, আগামী এপ্রিলে ঈদের পর এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। এক্ষেত্রে ঈদুল আজহার আগে মে থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করা হবে।

আজ বুধবার (১৫ মার্চ) কমিশনের ১৬তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, কোন সিটিতে কখন নির্বাচন হবে, তা সময় অনুযায়ী জানানো হবে। আমরা মে থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করব। এইচএসসি পরীক্ষা হবে সম্ভাব্য ৭ জুলাই থেকে। এজন্য এসএসসি পরীক্ষা শেষে ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যবর্তী সময়ের তিন ধাপে পাঁচটি সিটির ভোট করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জাহাংগীর আলম বলেন, ঈদুল আজহার আগে এবং এসএসসি পরীক্ষা শেষে, মধ্যবর্তী সময়ে আমরা এ পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজন করব। পরে তফসিলের সময় কোনটা কোন তারিখে হবে, তা বিস্তারিত জানানো হবে। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে তফসিল ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, মেয়াদ বিবেচনা করে এপ্রিলের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হবে। সবগুলো নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //